আজ পঁচিশে বৈশাখ রবীন্দ্রজয়ন্তী

নিজস্ব প্রতিবেদক :
জন্মদিনের কবিতায় তিনি লিখেছিলেন ‘ছোট ছোট জন্ম মৃত্যুর সীমানায়/ নানা রবীন্দ্রনাথের একখানা মালা’ গাঁথার কথা। বাংলা সাহিত্যে তিনি ছিলেন সেই মালা, যে মালা বহু ফুলের সুনিপুণ সংযোজনে গাঁথা। এমন এক মালা গেঁথে রেখে গেছেন, যা যুগ যুগ ধরে বাঙালিকে একাধারে বিমুগ্ধ ও বিস্মিত করে রেখেছে। কবিশ্রেষ্ঠ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৯তম জন্মজয়ন্তী আজ, পঁচিশে বৈশাখ।
কবির প্রতি শ্রদ্ধায় প্রতিবছর বাংলাদেশে আড়ম্বর করে দিনটি উদযাপন করা হয়। কিন্তু এ বছর করোনা সংক্রমণ এড়াতে দিনটি ডিজিটাল পদ্ধতিতে উদযাপনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বৃহস্পতিবার (৭ মে) সংস্কৃতি-বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংস্কৃতি-বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব অসীম কুমার দে স্বাক্ষরিক আদেশে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে কবি গুরুর জন্মবার্ষিকীর দিনটি উদযাপনের লক্ষ্যে ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারের জন্য ৫৫ মিনিটের একটি অনুষ্ঠান তৈরি করেছে সংস্কৃতি-বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
প্রস্তুত করা অনুষ্ঠানে দিনটি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর বাণীও রয়েছে; যা সকাল ১০টায় বিটিভিসহ দেশের সব বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রচার করা হবে।
কলকাতার জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুরবাড়িতে জন্মেছিলেন তিনি। মা সারদাসুন্দরী দেবী এবং বাবা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আধুনিক বাঙালির রুচির নির্মাতা। বাঙালির প্রতিটি মুহূর্তের আবেগ অনুভব অনুভূতির ঘনিষ্ঠ সঙ্গী তাঁর বৈচিত্র্যময় রচনা। সংগীত, কাব্য, নাটক, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, ভ্রমণকাহিনি, পত্রসাহিত্যসহ সব ধরনের রচনাকর্ম তাঁর প্রতিভার স্পর্শে সোনার মতো দীপ্তিমান হয়ে উঠেছে। তাঁর সাহিত্যসম্ভার বাংলা ভাষাকে পৌঁছে দিয়েছে বিশ্বদরবারে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান আমাদের জাতীয় সংগীত। তিনি কেবল আমাদের আনন্দ-বেদনা, উৎসব-অভিলাষে প্রতি মুহূর্তের অনুসঙ্গীই নন, তিনি সংকটের সাহস, প্রতিবাদ–প্রতিরোধের প্রেরণাও।
রবীন্দ্রনাথ গীতাঞ্জলি রচনা করে ১৯১৩ সালে নিয়ে আসেন সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার। নোবেল পুরস্কারের অর্থ দিয়ে তিনি এ দেশে শাহজাদপুরের দরিদ্র কৃষকদের ঋণ দেওয়ার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠা করেন কৃষি ব্যাংক। গড়ে তোলেন শান্তিনিকেতন। রাজপথে নেমে আসেন তিনি বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদে। পাঞ্জাবের জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাÐের প্রতিবাদে ছুড়ে ফেলেন ব্রিটিশ সরকারের দেওয়া ‘নাইটহুড’ উপাধি।