আত্মহত্যা নয়, হাইমচরে গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়

হাইমচর প্রতিনিধি :
হাইমচরের গৃহবধু পারুল আত্মহত্যা করেননি বরং তাকে পরিকল্পিতভাবে শ্বাষরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। পারুলের লাশের ময়নাতদন্ত রিপোর্টে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
গত ১২ স্পেটম্বর হাইমচরে ঘরের আড়ায় ঝুলন্ত অবস্থায় মিয়া নেপাল এর স্ত্রী পারুলের লাশ উদ্ধার করে হাইমচর থানা পুলিশ। হত্যা নাকি আত্নহত্যা এ নিয়ে এলাকায় ছিল আলোচনা সমালোচনা। অবশেষে ময়নাতদন্ত রিপোর্টের মাধ্যমে আত্মহত্যা নাকি হত্যা এমন সন্দেহের অবসান হলো। বেরিয়ে এলো ৪ সন্তানের জনক পারুল আত্মহত্যা করেনি তাকে পরিকল্পিতভাবে শ্বাষরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।
এলাকাবাসী দাবী করে আসছিলেন এটি আত্মহত্যা নয় বরং হত্যা। কারণ, প্রতিরাতেই ভিকটিমের ছেলে শাহাদাত (১১) মায়ের সাথে ঘুমাতো রাতে তাকে দাদির কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। ছেলে জানায়, তার বাবা তাকে দাদির কাছে চলে যেতে বলে। সকালে শুনে তার মায়ের ঝুলন্ত লাশ পাওয়া গেছে। পারুলের নিহত হওয়ার ঘটনায় প্রথম থেকেই এলাকাবাসীর ধারনা ছিল পারুলক হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিহত পারুলের ভাই তৎক্ষনিক বাদী হয়ে হাইমচর থানায় পারুলের স্বামী, শশুর, শাশুরী ও ননদকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন।
পারুল হত্যার পরের দিন ঘাতক স্বামী হাইমচর থানায় আত্মসমর্পন করেন। ঘটনার কয়েকদিনের মধ্যেই অন্য আসামীরা হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নিয়ে আসেন।
এলাকাবাসীর দাবী জানিয়ে বলেন, নিহত পারুলের শাশুরী, ননদ ও জামাইকে রিমান্ডের মাধ্যমে জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রকৃত অপারাধী বের হয়ে আসবে। আমরা চাই পারুল হত্যার সাথে যারা যারা জড়িত রয়েছে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। তাহলে আর কেউ এমন জগন্নতম কাজ করার সাহস করবেনা বলে তারা মনে করেন।
ভিকটিম পারুল বেগম (২৬) উপজেলার পশ্চিম চরকৃষ্ণপুর গ্রামের আ. সাত্তার আখন এর ছোট মেয়ে। একই গ্রামের ডিগ্রি কলেজ সংলগ্ন মোফাজ্জল হোসেন এর বাড়িতে ভাড়া থাকে। পারুলের চারটি সন্তান শাহাদাত (১০) সুমাইয়া (৭) আশ্রাফ (৪) মুসা (৪মাস)
নিহত পারুলের ভাই রাসেল আখন জানান, আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি আমার বোন বছরকে বছর অত্যাচার সহ্য করে আসার পরে ৪সন্তান রেখে আত্ম হত্যা করতে পারেনা। আত্মহত্যা করলে আরো আগেই করতো। সন্তানরা ছিল তার প্রান। আমি ঘটনার পর থেকেই বলে আসছি আমার বোনকে তার জামাই, শাশুরী ও তার ননদ হত্যা করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রেখেছিল। আমার কথা পুলিশ প্রশাসনের কেউ শুনেনি। এখন পোস্টমেডাম রিপোর্টে এসেছে বোনকে শ্বাষরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। আমি আমার বোনের হত্যার বিচারের মাধ্যমে সকল বোনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই। তাই বোনের হত্যার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি কামনা করছি।
মামলা তদন্তকর্মকর্তা খোরশেদ আলম জানান, ময়না তদন্ত রিপোর্ট এসেছে। এতে বলা হয়েছে পারুল আত্মহত্যা করেননি, তাকে হত্যা করা হয়েছে। কিভাবে হত্যা করা হয়েছে সে বিষয়ে আমি বুধবার ডাক্তারের সাথে আলোচনা করবো।

শেয়ার করুন

Leave a Reply