উপহার যাবে বাড়ি : চাঁদপুরে ফোন কলে দুই হাজার পরিবার পেলো খাদ্য সহায়তা

আশিক বিন রহিম :
কোন প্রকার দরখাস্ত কিংবা লিখিত অনুরোধ নয়, দীর্ঘ সময় হাত পেতে দাঁড়িয়ে থাকাও নয়, ঘরে থেকে কেবলমাত্র ফোন কল করেই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেড় হাজারের অধিক পরিবার পেয়েছে ‘উপহার যাবে বাড়ি’ নামে বিশেষ খাদ্যসহায়তা। গোটা বাংলাদেশে এমন ব্যতিক্রমধর্মী মানিবক উদ্যোগের প্রণেতা চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোঃ মাজেদুর রহমান খান।

সারাদেশের ন্যায় মহামারী করনা ভাইরাসের প্রভাবে কর্মহীন হয়ে পড়েছে প্রায় সকল পেশার মানুষ। এসব কর্মহীন মানুষদের মধ্যে খুবই মানবেতর জীবনযাপন করছে খেটে খাওয়া দিনমজুর এবং নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো। এই অসহায় পরিবারগুলোর মাঝে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে চলতি এপ্রিল মাসের শুরু থেকে ‘ত্রাণ যাবে বাড়ি’ নামের একটি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এই কর্মসূচির আওতায় ঘরে বসেই ফোন করলেই একদল স্বেচ্ছাসেবী কর্মী ওই ব্যক্তির বাড়িতে জেলা প্রশাসনের খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছেন। পরবর্তীতে এই কর্মসূচির নাম দেয়া হয় ‘উপহার যাবে বাড়ি’। শুরুর পর থেকেই প্রধানমন্ত্রীর খাদ্য সামগ্রীর উপহার পৌছে দেওয়ার এই কার্যক্রম অব্যহত রয়েছে। প্রতিদিনই প্রায় দেড় শতাধিক রিকোয়েস্টে ফোন কল থেকে যাচাই-বাছাই করে ৮০ থেকে ১০০টি পরিবারের মাঝে এই খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়।

চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের প্রেস মিডিয়া সেল থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, মঙ্গলবার ২৭ তম দিনে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত মোট কল রিসিভ করা হয়েছে ৯৮টি ফোন কল। তন্মধ্যে যাচাই বাছাই করে মোট ৬৪টি পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার পৌঁছে দেয় সেচ্ছাসেবকরা। তারা মটরসাইকেল ও অটোবাইকের মাধ্যমে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে এই উপহার পৌঁছে দেয়া হয়েছে। প্রতিটি প্যাকেটে রয়েছে ৫ কেজি চাল, ১ কেজি আলু, ১ কেজি পেঁয়াজ, ১ কেজি লবণ, আধা কেজি ডাল, ১ কেজি আটা, ১টি সাবান। এ পর্যন্ত মোট ১ হাজার ৯ হাজার ৭৩টি পরিবারকে এই কর্মসূচির মাধ্যমে উপহার প্রদান করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক মোঃ মাজেদুর রহমানের নির্দেশে ‘উপহার যাবে বাড়ি’ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ আবদুল­াহ আল মাহমুদ জামান।

উলে­খিত মাধ্যম থেকে আরো জানা যায়, জেলা প্রশাসনের আরো এটি উদ্যোগ সততা স্টোরে সোমবার ৭১ টি পরিবারের মাঝে ভর্তুকি মূল্যে ১৭হাজার ৬শ’ ৫০ টাকার নিত্যপণ্য বিক্রি করা হয়। এই সততা স্টোরে কোনো বিক্রেতা থাকে না। ক্রেতারা নিজ থেকে পণ্য ক্রয় করে ক্যাশবাক্সে টাকা রাখেন। এই কার্যক্রম তদারকি করছে সেচ্ছাসেবীরা।

এছাড়াও জেলা প্রশাসকের আরেবটি উদ্যোগে “দুঃস্থদের বিনামূল্যে খাবার” এর আওতায় সোমবার চাঁদপুর শহরের ৩টি খাবার হোটেলে আজ ১শ’ ১ জন ভিক্ষুক, প্রতিবন্ধী ও দুঃস্থ মানুষ দুপুরের খাবার দেয়া হয়েছে। এই দু’টো উদ্যোগই গত ১৮ দিন ধরে চলমান রয়েছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply