ওপারে ভাল থাকুন ইকরাম ভাই

বোরহান উদ্দিন ডালিম ::
সাংবাদিকতার কারনেই তার সাথে আমার পরিচয় ও সম্পর্ক। ২০০০সালে মাঝামাঝি সময়ে একদিন ছেংগারচর বাজারে আমার এক সহযোদ্ধার সাথে মনমালিন্য তৈরি হয়। হঠাৎ বলে উঠলাম আগামীকাল থেকে আমি চাঁদপুর দর্পণ পত্রিকায় কাজ শুরু করব। আমি বিকাল বেলা আমিরাবাদ লন্ঞ্চঘাট হাজির হলাম। নৌকা দিয়ে লন্ঞ্চে উঠতে হবে।অনেক লোক নৌকায় উঠলো, হঠাৎ মনটা বেঁকে বসলো আমি নৌকায় লোক বেশি হওয়ার কারনে উঠলাম না।নৌকা কিছুদুর যাওয়ার পর ডুবে গেলো। নৌকার সকল যাত্রী সাঁতরে পারে উঠার চেষ্টা করলো।এরমধ্যে বড় হলদিয়া গ্রামের একজন তরুন প্রকৌশলী মারা গেলো পানিতে ডুবে।নৌকায় থাকা মুলি বাঁশের তবজাতে ছয় মাস বয়সী একটি শিশু অলৌকিক ভাবে বেঁচে গেলেও তরুন প্রকৌশলী মারা যায়। আমি উক্ত বিষয়ে সকল ডকুমেন্টস সংগ্রহ করে রাতে চাঁদপুর শহরে ( তখন অনন্যা মার্কেটে অফিস ছিল দর্পণ পত্রিকা কার্যালয়) পত্রিকা অফিসে গিয়ে হাজির হই। সামনে এগিয়ে আসেন পত্রিকা সম্পাদক ইকরাম ভাই। তখনকার সময়ে হাতে লেখা নিউজ অফিসে দিতাম।আমার হাতে লেখা নিউজটা পড়ে ইকরাম ভাই সাথে সাথে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিউজটি পত্রিকার প্রথম লিড নিউজ করে আমার নাম দিয়ে এবং আমাকে তার পত্রিকায় মতলব উত্তরে প্রতিনিধি থাকা সত্বেও আমাকে তার পত্রিকায় কাজ করার অনুমতি দেন। বেশ কিছু দিন উনার সাথে কাজ করার সৌভাগ্য হয় আমার। তারপর চাঁদপুর টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামে আমাকে সদস্য অন্তর্ভুক্ত করার পিছনে তার অসামান্য অবদান রয়েছে। কখনো কটুবাক্য ব্যবহার করে কথা বলতেন না।তার কাছে শিক্ষনীয় অনেক বিষয় খুঁজে পেতাম। গত দুবছর যাবত দেখা হলেই আমাকে বলতেন ডালিম তুমি আমাকে ভুল বুঝো না। চাঁদপুরে একটা ঘটনা কে কেন্দ্র করে প্রায়ই তিনি অনুশোচনা করতেন। তখন শুধু বলতাম আপনি তো আমার বড় ভাই অভিভাবক। শেষ দেখা হয়েছিল জানুয়ারি মাসে দর্পণ পত্রিকা কার্যালয়ে। তিনি সবসময় আমাকে বলতেন, এগিয়ে যাও ডালিম। কোনো দরকার হলে ভাই কে স্মরন করিও। ভাই আমি আপনার মত একজন সমুদ্রসম একজন মানুষ কে হারালাম। আপনার সাথে আমার বিভিন্ন সময়ে কথোপকথনের অনেক বিষয় রয়েছে যা লিখে শেষ হবে না। আপনি ওপারে ভাল থাকুন। হে আল্লাহ আপনি মরহুম ইকরাম চৌধুরী ভাইকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসীব করুন আমিন।
-লিখেছেন : বোরহান উদ্দিন ডালিম, সভাপতি, মতলব উত্তর প্রেসক্লাব।

শেয়ার করুন

Leave a Reply