করোনায় আক্রান্ত হয়ে চলে গেলেন চাঁদপুরের কৃতিসন্তান কবি শঙ্খ ঘোষ

আশিক বিন রহিম :
স্তব্ধ কবিতার মুহূর্ত। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চলে গেলেন চাঁদপুরের চাঁদমুখ, উপমহাদেশের বরেণ্য কবি শঙ্খ ঘােষ। ১৭এপ্রিল বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর
বর্ষীয়ান এই কবি ১৯৩২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি চাঁদপুরের মেঘনা পাড়স্থ পুরানবাজারে মামাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। যা এখন নদীগর্ভে বিলীন। তাঁর প্রকৃত নাম চিত্তপ্রিয় ঘোষ। পিতা মনীন্দ্রকুমার ঘোষ, মাতা অমলা ঘোষ।
শঙ্খ ঘোষ এর আগে থেকেই বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। গত ২১ জানুয়ারি অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালেও ছিলেন কয়েকদিন। অসুস্থতার কারণে একপ্রকার গৃহবন্দিই ছিলেন তিনি। বাইরে কোথাও বেরােতেন না। ঘরের মধ্যেও চলাফেরা। এর মধ্যে ১৪ এপ্রিল বিকেলে রিপাের্ট এলে জানা যায়, করােনা থাবা বসিয়েছে তাঁর শরীরে। মারণ ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই চালালেও শেষরক্ষা হল না। শক্তি-সুনীল-শঙ্খ-উৎপল-বিনয়, জীবনানন্দ পরবর্তী বাংলা কবিতার এই পঞ্চপাণ্ডবের বাকি চার জন চলে গিয়েছিলেন আগেই। বুধবার চলে
গেলেন শঙ্খ ঘোষও।
তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব আইওয়া এবং বিশ্বভারতীতে অধ্যাপনা করেছেন। বাংলা কবিতার জগতে শঙ্খ ঘোষের অবদান কিংবদন্তিপ্রতিম। ‘দিনগুলি রাতগুলি’, ‘বাবরের প্রার্থনা’, ‘মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে’, ‘গান্ধর্ব কবিতাগুচ্ছ’ তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ।
দীর্ঘ সাহিত্যজীবনে একাধিক সম্মানে সম্মানিত হয়েছেন শঙ্খ ঘোষ। ১৯৭৭ সালে ‘বাবরের প্রার্থনা’ কাব্যগ্রন্থটির জন্য তিনি দেশটির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার পান। ১৯৯৯ সালে কন্নড় ভাষা থেকে বাংলায় ‘রক্তকল্যাণ’ নাটকটি অনুবাদ করেও সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার পান তিনি। এ ছাড়াও রবীন্দ্র পুরস্কার, সরস্বতী সম্মান ও জ্ঞানপীঠ পুরস্কার পেয়েছেন। ২০১১ সালে তাকে পদ্মভূষণে সম্মানিত করে তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকার।
এদিকে চাঁদপুরের কৃতিজন বরেণ্য কবি ও রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ শঙ্খ ঘোষের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছে সাহিত্য মঞ্চ পরিবার। সংগঠনের সভাপতি কবি ও অনুবাদ মাইনুল ইসলাম মানিক এবং সাধারণ সম্পাদক কবি ও গল্পকার আশিক বিন রহিম স্বাক্ষরিত এক পত্রে গভীর শোক প্রকাশ করেন। পাশাপাশি বিনম্র শ্রদ্ধার সাথে কবির বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply