করোনা : চাঁদপুরে অনলাইনে কোরবানির পশুর হাটে ক্রেতার সাড়া কম

ইব্রাহীম রনি :
চাঁদপুরে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অনলাইনে চালু হয়েছে কোরবানির পশুর হাট ‘কোরবানির পশু যাবে বাড়ি’। করোনা আক্রান্তের ঝুকি কমাতে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। তবে অনলাইন গরুর হাটে এখনো তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না ক্রেতা-বিক্রেতাদের। তবে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, ঈদের আগে শেষ সপ্তাহে জমতে পারে এ অনলাইন হাট।
এই পেইজের এডমিন হিসেবে আছেন এডিসিসহ জেলা প্রশাসনের তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও দু’জন স্বেচ্ছাসেবক। পেইজের এডমিন জানান, এখানে বিক্রির জন্য পশুর চারদিক থেকে চার এ্যাঙ্গেলের ছবি, পশুর জাত, পশুটি কোন এলাকার, পশুর আনুমানিক ওজন, পশুর রং, কয়টি দাত পড়েছে, বিক্রয় মূল্য সম্পর্কে তথ্য দিতে হবে।
‘কোরবানির পশু যাবে বাড়ি’ ফেইজবুক পেইজে এর উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে, করোনা মহামারীর সময়ে মানুষকে কোরবানির পশু কিনতে হাটে যেতে নিরুৎসাহিত করা, শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাতে সবাই ঘরে বসে কোরবানির পশু কিনতে পারে সে ব্যবস্থা করা, কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য ক্রেতা এবং বিক্রেতার মধ্যে সমন্বয় করা এবং চাদপুর শহরে কোরবানির জন্য কয়েকটি নির্দিষ্ট স্থান ঠিক করে দেয়া। যাতে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ সহজ হয়।
পেইজে কেউ কোন ছবি দিতে চাইলে দিতে হবে ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, তথ্য সংগ্রহকারীর নাম। পশু বিক্রি হয়ে গেলে অনাকাঙ্ক্ষিত ফোনকল থেকে এড়াতে পোস্টের নিচে সোল্ড লিখে দিতে হবে।
চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন, করোনা সংকটকলীন এই সময়ে ক্রেতাদের হাটে যাওয়ার ঝুকি থেকে রক্ষা করতে গত ১৩ জুলাই জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে চালু হয়েছে অনলাইন পশুর হাট। এখানে পশু ক্রেতারা তাদের পছন্দ অনুযায়ী চাহিদা পাঠাতে পারেন। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী আমাদের ভলান্টিয়াররা পশু বিক্রেতার সাথে যোগাযোগ করিয়ে দিবে। দরদাম ঠিক করে চূড়ান্ত করলে তারা পশুটি ক্রেতার বাসায়ও পৌছে দিবে।
জেলা প্রশাসনের স্বেচ্ছাসেবক ও পেইজের এডমিন জাহিদুল হক মিলন বলেন, গত সপ্তাহ থেকে এর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আর চলবে ঈদের আগ পর্যন্ত। আমরা শুধুমাত্র বিভিন্ন ফার্ম থেকে গুরু-ছাগলের ছবিগুলো সংগ্রহ করে পশুর বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে এই পেইজে পোস্ট করি। কোন ক্রেতার চাহিদা থাকলে যোগাযোগ করবে। ক্রেতা যদি সরাসরি ফার্মে গিয়ে গরুটি দেখতে চান তাহলেও তা দেখতে পারবেন। আমরা স্বেচ্ছাসেবক মিডিয়াম্যান হিসেবে কাজ করছি। অনেকে আছেন করোনার এই সময়ে বাজারে যেতে চান না, তাদের জন্য আমাদের উদ্যোগ কাজে আসবে।
তিনি বলেন, এ পর্যন্ত ৩০-৩৫টি গরু-ছাগলের ছবি ও তথ্য পেইজে দিয়েছি। এখনো কোন পশু আমাদের মাধ্যমে বিক্রি হয়নি। তবে আমরা প্রচার করছি। আমাদের পেইজে দেয়া গুরুগুলো সবাই দেশী। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আরও বেশ কিছু পশুর ছবি পোস্ট করা হবে।
তিনি বলেন, আমরা সরাসরি ফার্মে গিয়ে মালিকের সাথে কথা বলে এবং তাদের অনুমতি নিয়ে আমরা ছবিগুলো পোস্ট করছি। আমরা যেসব পশুর ছবি দিচ্ছি তা পশু মালিকের কাছেই আছে।
তিনি জানান, অনলাইনে তাদের পশু বিক্রিতে ছবি ও তথ্যের জন্য আমরা অনেকগুলো ফার্মে গিয়েছি। কেউ কেউ আগ্রহী হলেও অনেক খামারীই এ পদ্ধতিতে আগ্রহী নয়। যারা আগ্রহী তাদের পশুগুলোর ছবি ও তথ্য আমরা আমাদের পেইজে দিচ্ছি।
এ পেইজের সাথে ইউপি সচিবসহ অনেকে সম্পৃক্ত হওয়ার কথা। তবে এখনো অনেকেই পেইজের সাথে সম্পৃক্ত হননি। এ বিষয়ে কাজ চলছে।
তিনি বলেন, এ মাধ্যমে ক্রেতাদের আগ্রহ কম দেখছি। তাছাড়া সাধারণত কোরবানির পশু মানুষ ঈদের দু’তিন দিন আগে কিনে। এ কারণে আমরা আশা করছি, ঈদের আগ মুহূর্তে ক্রেতাদের সাড়া পাবো।

শেয়ার করুন

Leave a Reply