চাঁদপুরে ইলিশ কমে যাওয়ার কারণগুলোর একটি অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন

নিজস্ব প্রতিবেদক :
ড্রেজারের মাধ্যমে নদী থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন চাঁদপুরের পদ্মা মেঘনা অন্চলে ইলিশ কমে যাওয়ার একটা কারণ বলে জানিয়েছেন চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আনিসুর রহমান।
তিনি জানান, নদীর কোন কোন অন্চলে ড্রেজারের মাধ্যমে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনে তৈরি হচ্ছে নাব্যতা সংকট। নষ্ট হচ্ছে ইলিশের খাদ্য ও স্বাভাবিক চলাচল। এর ফলে সমুদ্র থেকে মিঠা পানিতে এসে ইলিশ তার প্রজনন মৌসুমে ডিম ছাড়তে বাধার সম্মুখিন হয় । তিনি বলেন, নদীতে যান চলাচল ঠিক রাখার জন্য গভীরতার জন্য ড্রেজিং হবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে ড্রেজিং ঐরকম হয় না। তাই
ইলিশ বাঁচাতে নদীতে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের আহ্বান জানান তিনি। তবে পানি দুষন, ডুবোচর, জলবায়ুর পরিবর্তনসহ আরো কতোগুলো কারণ নদীর এই অন্চলে কমে যাওয়ার কারণ হিসাবে তিনি উল্লেখ করেন। তবে তিনি বলেন, আগের বছরগুলোর তুলনায় ইলিশের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
গতকাল শনিবার সকালে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে ইলিশ বিষয়ক দুটি সভায় দেওয়া বক্তব্যে এসব কথা তুলে ধরেন চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিটের প্রধান মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আনিসুর রহমান।
সকাল ১০টায় চাঁদপুর জেলা প্রশাসন ও জেলা মৎস্য বিভাগের আয়োজনে ‘বেশি বেশি মাছ চাষ করি, বেকারত্ব দূর করি’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনিস্টিউটের মুখ্য ইলিশ গবেষক ড. আনিসুর রহমান। এছাড়া বক্তব্য রাখেন, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান।
বক্তারা চাঁদপুরে দিন দিন ইলিশ কমে যাওয়ার বিষয় এবং জাটকা ও মা ইলিশ রক্ষায় নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
নদীতে অপরিকল্পিত ড্রেজিং এর বিষয়ে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, ‘আমি গত জানুয়ারি মাসে চাঁদপুরে যোগদান করেছি। এরপরই চাঁদপুরের বিভিন্ন স্থানে ড্রেজারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। অনেক অবৈধ ড্রেজার আমরা ধ্বংশ করে দিয়েছি। কিন্তু নদীতে দু’ জন ও প্রতিষ্ঠান উচ্চ আদালতের অনুমোদন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ড্রেজিং করছে। তাই উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞায় তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না। গবেষকরা বলছেন, ইলিশের পাশাপাশি নদীর নাব্যতার ক্ষতি হচ্ছে । চাঁদপুর শহর রক্ষা হুমকির মুখে। এ বিষয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন মহলে কথা বলছি।’ যা করার তার জন্য আমাদের আইনের মধ্যেই থেকে করতে হবে।
এছাড়াও তিনি বলেন, ‘মাছ ধরায় সরকারি নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেদের যে প্রণোদনা দেওয়া হয়, সেটি না দিয়ে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া হোক। পাশাপাশি জেলেদের জন্য আলাদা কর্মসংস্থান তৈরি করে দেওয়া হোক। জেলেরা ওই সময়ে ব্যস্ত থাকলে তাদের কেউ নদীতে নামাতে সাহস পাবে না। এ জন্য আমরা চাঁদপুরে জেলেদের নতুন করে হালনাগাদ তালিকা তৈরি করবো।’

শেয়ার করুন

Leave a Reply