চাঁদপুরে প্রতারণা মামলার ৪ আসামী সিআইডির হাতে গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁদপুরে প্রতারণা মামলায় নারীসহ ৪ আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। ২৬ জুলাই সোমবার সকালে চাঁদপুর সিআইডি’র উপ-পরিদর্শক আবু জাহিদ তুহিন সংঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে শহরের ওয়ারলেস এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, হাজীগঞ্জ উপজেলার মকিমাবাদ খাটরা বিলওয়াই এলাকার আব্দুল লতিফ মিয়ার পুত্র মোঃ হাবিবুর রহমান জীবন (৪২), জীবনের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসী)(৩৪), হাজীগঞ্জ বদরপুর এলাকার মৃত মো. ভাসানীর পুত্র
শাহিনুর রহমান শাহিন (৪৬), খাটরা বিলওয়াই এলাকার মৃত জাফর আলীর মেয়ে বিলকিস বেগম (৪০)।

চাঁদপুর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি’র উপ-পরিদর্শক আবু জাহিদ তুহিন জানান, আটক আসামীদের বিরুদ্ধে একটি প্রতারণা মামলা রয়েছে। যার মামলা নং ৩৬। সোমবার উক্ত মামলায় অভিযুক্ত ৪ আসামিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওয়ারলেস এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে। আটক আসামীদের চাঁদপুর কোর্ট পুলিশেন কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

চাঁদপুর আদালতের হাজীগঞ্জ উপজেলার জিআরও থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, আসামীদের বিরুদ্ধে একটি প্রতারণা মামলা রয়েছে। যার মামলা নং ৩৬, তারিখ ২৫/০৬/২০২১। ধারা ৪০৬/ ৪২০/ ৪৬৫/ ৪৬৭/ ৪৬৮ ও ৪৭১। সোমবার বিকেলে তাদের কোর্টে উঠানো হয়।

মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, শাহরাস্তি উপজেলার মোঃ গিয়াস উদ্দিন (৪৫) এর স্ত্রী স্কুল শিক্ষিকা রয়েলী বেগম ২০২০ সালের ২০ জুলাই শ্বাসকষ্ট জনিতে অসুখে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। করোনার থাবায় স্ত্রীকে হারিয়ে পাগল প্রায় স্বামী গিয়াস উদ্দিন মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন। এই সুযোগে রয়েলী বেগমের ভাই হাবিবুর রহমান জীবন বোনের সম্পত্তি আত্মসাতের জন্য নানা রকম ষড়যন্ত্র শুরু করে।

সে উল্লেখিত আসামীদের সাথে নিয়ে মৃত বোনের সম্পত্তি আত্মসাতের জন্য জাল মৃত্যু ও ভুয়া ওয়ারিস সনদ, পোস্ট অফিসের থেকে এডি জাল করে বোন জামাইর বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের করে। শুধু তাই নয়, সম্পত্তির লোভে রাহেলি বেগমের মৃত্যুর পরে জাল কাবিননামা এমনকি জাল ডিভোর্স লেটার দিয়েও প্রতারণা করেন।

এর থেকে রেহাই পেতে মৃত রয়েলী বেগমের স্বামী মোঃ গিয়াস উদ্দিন চাঁদপুর আদালতে মামলা প্রতারণা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ৩৬/২৯৩, সিআর ২৯৬। মামলায় উল্লেখিত অন্যা আসামীরা হলেন, মোঃ আল-আমিন লিটন (৫০), তার স্ত্রী সালমা সুলতানা কুমকুম (৪৩), হাবিবুর রহমান জীবনের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসি (৩৪), মৃত ভাসানীর পুত্র শাহিনুর রহমান শাহিন (৪৬), মৃত শহিদ আলী সরদারের পুত্র মোঃ আবুল হোসেন (৫৫), মৃত জাফর আলীর পুত্র মো. গিয়াস উদ্দিন (৩৪) এবং মেয়ে বিলকিছ বেগম (৪০)।

এদিকে আদালত মামলার তদন্তের জন্যে প্রথমে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশকে দায়িত্ব দেয় এবং পরবর্তীতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডিকে দায়িত্ব হস্তান্তর করে।

মামলার বাদি মোঃ গিয়াস উদ্দিন জানান, শুধুমাত্র সম্পত্তি আত্মসাতের জন্য আমার স্ত্রীর ভাই জীবন সহ উল্লেখিত আসামিরা আমার বিরুদ্ধে পরপর ৩টি মিথ্যা মামলা দিয়েছে। তারা আমার স্ত্রীর মৃত্যুর পরে অন্য একজন নারীকে আমার স্ত্রী সাজিয়ে চাঁদপুরে এসে ওমর ফারুক নামে একজন কাজীরর মাধ্যমে আমাকে ডিভোর্স লেটার দেয়। কতো বড় জঘন্য মনের মানুষ হলে তারা এই কাজটি করতে পারে। আমি মহামান্য আদালতের কাছে ন্যায় বিচার প্রার্থনা করছি। পাশাপাশি চাঁদপুরের প্রশাসনের কাছে এই প্রতারক চক্রটির বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী করছি।

শেয়ার করুন

Leave a Reply