চাঁদপুরে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ১৭ হাজার গ্রাহকের চরম ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক :
সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (SIBL), চাঁদপুর শহরে তাদের একটি মাত্র শাখায় সেবার মান বেহাল অবস্থা। ব্যাংকটির চাঁদপুর জেলা শহরের একটি মাত্র শাখা থেকে ১৭ হাজার গ্রাহককে এই দুর্যোগকালিন সময়ে সেবা দিতে চরম ব্যর্থ হয়েছে। বুধবার গুরত্বপূর্ণ এবং ব্যাংকের শেষ দিবসে শাখাটি বন্ধ রাখছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
এ বিযয়ে জানতে জানতে চাইলে চাঁদপুর জেলা শহরের শাখা ব্যবস্থাপক তার কুমিল্লার বাসা থেকে জানান, আপনি হেড অফিসের সাথে কথা বলুন। কিন্তু হেড অফিসের মোবাইল বা ফোন নাম্বার দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। ব্যাংটির শাখাটি গতকাল কয়েক ঘন্টা খোলা থাকলেও গ্রাহকরা তাদের কাঙ্খিত টাকা তুলতে পারিনি। ব্যংকে টাকা নেই, গ্রাহকরা টাকা তুলেন। কিন্তু টাকা জমা দেন না এবং বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা ছেড়েছে কম, সোনালি ব্যাংক টাকার জন্য গেলে টাকা আমাদের দেয় না, ইত্যাদি অজুহাত দেখিয়ে গ্রাহককে টাকা না দিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছে। বেশির ভাগ ব্যবসায়ী, সাধারণ গ্রাহকরা এজন্য চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এছাড়া এই একটি মাত্র শাখা গত দুই মাস মাত্র ৩ দিন খোলা রাখা হয়।
অপ্রিয় হলেও সত্য, ব্যাংকটির শাখা ১০টা থেকে নিয়মানুযায়ী বেলা আড়াইটা পর্যন্ত চলছে বলে এর ব্যবস্থাপক দাবি করলেও তা চলেছে রাত ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত। এর একটি নোটিশ এভাবেই টানিয়ে দেয়া হয় ব্যাংকটি যে শফিং সেন্টার (ফয়সাল) তার প্রধান ফটকে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যবস্থাপক বলছেন, আসলে এটি ভুল হয়েছে। অবশেষে মঙ্গলবার খোলার দিনে ১টা কেটে ২.৩০ টা লিখে দেয়া হয় কলম দিয়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বস্তত: ব্যাংকটি আগের নিয়মেই চলছিলো। এটি ছিলো গ্রাহকের সাথে আরেক রকম হয়রানি ও প্রতারণা। তাছাড়া ব্যাংকের মূল শহর ঘুরে দেখা গেল, স্যোসাল ইসলামী ব্যাংকের একমাত্র শাখাটি ছাড়া সরকারি বেসরকারি প্রায় সব ব্যাংকের শাখাই ঈদ এবং দুর্যোগময় পরিস্থিতিতেও খোলা। কারণ, কাল বৃহস্পতিবার থেকে শবে কদর এবং ঈদের লম্বা ছুটিতে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে চাঁদপুরের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপকের সাথে আলাপ করলে তারা জানান, যতটুকু জানি এই ব্যাংকের একটি মাত্র শাখা জেলা শহরে এবং গ্রাহকও বিপুল সংখ্যক। এই পরিস্থিতিতে আজ শেষদিনে শাখাটি খোলা রাখা জরুরি ছিলো। তাছাড়া ১৭ হাজার গ্রাহক নিয়ে যে ব্যাংক যা একমাত্র এই শহরে, সেটি সপ্তাহে ৩ দিন খোলা কেন? এটি তো সব দিনই খোলা রাখা যায়। তাছাড়া কর্মকর্তা-কর্মচারিদেরও অভাব নেই। সপ্তাহ না হোক অন্তর: আরো একটা দিন খোলা রাখার ব্যবস্থা করা যেত। এ ব্যাপারে শাখা ব্যবস্থাপক মূখ্য ভূমিকা পালন করতে পারতেন। এছাড়া আজকে এতো বড় জেলা শহরে এই একমাত্র শাখাটি বন্ধ রাখার কোনরকম যুক্তিই ছিলো না।
এদিকে সোনালি ব্যাংক চাঁদপুর অঞ্চলের ডিজিএম মোহাম্মদ কবীর হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, গ্রাহকই তো ব্যাংকের প্রাণ। আমাদের সবগুলো শাখা আজ খোলা ছিলো এবং আগের সব দিনগুলোতেও। এছাড়া,এই কর্মকর্তা জানান, কোন ব্যাংকেই টাকার কমতি ছিলো না। বাংলাদেশ ব্যাংকও উদার ছিলো এ বিষয়ে। আমরা যার যা প্রয়োজন ছিলো, তা দিয়েছি এবং দিতে চেষ্টা করেছি।
অনেক গ্রাহকই মনে করেন, স্যোসাল ইসলামি ব্যাংক চাঁদপুর শাখার এসব বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ব্যাংটির উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি ও ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। না হয় ধীরে ধীরেই ব্যাংকটি আস্থা হারাবে গ্রাহকের।

শেয়ার করুন

Leave a Reply