চাঁদপুর পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী আক্তার মাঝি

আশিক বিন রহিম :
চাঁদপুর পৌরসভা নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে মেয়ার প্রার্থী মনোনিত হলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আক্তার হোসেন মাঝি। ১২ সেপ্টেম্বর শনিবার সকাল ১১ টায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক দলীয় মনোনিত এই প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন। এর আগে গত কয়েকদিন ধরে চাঁদপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়কগণ এবং সিনিয়র নেতৃবৃন্দরা মনোনয়ন প্রত্যাশী চার নেতাকে নিয়ে বেশ কয়েকবার রূদ্ধধার বৈঠক করেন। সবশেষ চার প্রার্থীর ঐক্যমত এবং তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব আক্তার হোসেন মাঝিকে দলীয় একক প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেবার সিদ্ধান্ত নেন। এখন পরবর্তী ধাপ হিসেবে জেলা বিএনপির স্বাক্ষরিত পত্রে এ প্রার্থীর নাম কেন্দ্রে পাঠানো হবে এবং কেন্দ্র তাকে চাঁদপুর পৌর নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ দেবে।
শনিবার জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে উপস্থিত সাংসবাদিকদের উদ্দেশ্যে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রবাসী কল্যান বিষয়ক সম্পাদক শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক বলেন, চাঁদপুর পৌরসভা নির্বাচনে আমরা অংশ নিচ্ছি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের অংশ হিসেবে। কারণ, আওয়ামী লীগের গণতন্তু এবং ভোটের রাজনীতিকে হত্যা করেছে। তারা পুলিশকে ব্যবহার করে রাতের আঁধারে ভোটবাক্স পুর্ণ করে। এখন আবার ডিজিটাল কারচুপিতে নেমেছে। আমরা মনে করি, জনগণ যদি ভোট দিতে পারে তবে ধানের শীষ প্রতীক বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবে।
চাঁদপুরের সাংবাদিকরা সততা ও নিষ্ঠার সাথে সংবাদ পরিবেশন করে থাকেন। তাই আপনাদের প্রতি আমাদের অনুরোধ আগামী চাঁদপুর পৌরসভা নির্বাচনে আপনারা সঠিক সংবাদ তুলে ধরবেন। সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে আপনাদের লেখনিতে সঠিক তথ্য তুলে ধরবেন।
শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক আরো বলেন, আজকে আমরা উৎসবমুখর পরিবেশে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করাতে একত্রিত হয়েছি। অথচ পুলিশ আমাদের দলীয় কার্যালয় ঘিরে রেখেছে। আমাদের নেতাকর্মীদের পার্টি অফিসের সামনে দাঁড়াতে দিচ্ছে না। অথচ এই পুলিশ শহরে কালিবাড়ি মোড়ে যানজট নিরসন করতে ব্যর্থ। শুধু তাই নয়, চাঁদপুরে বিএনপির দলীয় কর্মসূচিতে অলিখিতভাবে মাইক নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অথচ এমন কোনো অলিখিত আইন দেশের কোথাও নেই। আওয়ামী লীগ প্রতিহিংসার রাজনীতিতে এখনো ঘুরপাক খাচ্ছে। চাঁদপুরের রাজনীতিতে এমনটা কখোনো ছিলো না। আগামী ১০ অক্টোবর পৌরসভা নির্ববাচনে কেন্দ্র দখলে তারা কি করবে তা জেনেও আমরা এই নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছি। জনগণই তাদের অপকর্মের জবাব দিবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক অ্যাড. সলিম উল্ল্যাহ সেলিম, মাহবুব আনোয়ার বাবলু, মুনির চৌধুরী, সেলিমুছ সালাম, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দিন খান বাবুল, যুগ্ম আহবায়ক খলিলুর রহমান গাজী, ফেরদৌস আলম বাবু, অ্যাড. হারুনুর রশীদ। প্রমুখ। এছাড়াও ধানের শীষ প্রতীকে মেয়ার প্রার্থী মনোনিত জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আক্তার হোসেন মাঝি এবং দলীয় মনোনয়ন আবেদন ফরম জমা দেয়া অপর তিন নেতা চাঁদপুর সরকারি কলেজের সাবেক জিএস হাজী মোশারফ হোসাইন, সদর থানা বিএনপির সভাপতি শাহজালাল মিশন এবং জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম জুয়েল উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত : প্রায় দেড়যুগ চাঁদপুর পৌরসভা মেয়র থেকে বঞ্চিত বিএনপি একক প্রার্থী নির্বাচনে চুলছেঁড়া বিশ্লেষণে করেছে। কারণ সদ্য প্রয়াত বিএনপির মনোনিত একক প্রার্থী ব্যপক জনপ্রিয় নেতা শফিকুর রহমান ভুইয়ার স্থলে জনপ্রিয়তা এবং সাংগঠনিক দক্ষতা সম্পন্ন প্রার্থীকে মনোনয়ন দিতে চেষ্টা করেছে দলটি।
আগামী ১০ই অক্টোবর শনিবার চাঁদপুর পৌরসভার সাধারণ নির্বাচনের ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনু্ষ্ঠিত হবে। স্থগিত হওয়া চাঁদপুর পৌরসভা নির্বাচনের পুনঃতফসিলে ১৫ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার জেলা রিটার্নিং অফিসারের কাছে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। ১৭ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই। ২৪ই সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন এবং ১০ই অক্টোবর শনিবার ভোটগ্রহণ। ওইদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী সফিকুর রহমান ভূঁইয়ার মৃত্যুতে অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয় চাঁদপুর পৌরসভার সাধারণ নির্বাচন। গত ২৯শে মার্চ এই নির্বাচন হওয়ার কথা ছিলো। তবে এর আগে গত ১৬ই মার্চ গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে নির্বাচন স্থগিত করে কমিশন।
এদিকে চাঁদপুর জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চাঁদপুর পৌরসভার স্থগিত নির্বাচন সম্পন্নের লক্ষ্যে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র দাখিলের সুযোগ রাখা হয়েছে। এছাড়া ইতোপূর্বে মেয়র পদে যারা মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তাদের আর নতুন করে দাখিলের প্রয়োজন হবে না। একই সাথে সংরক্ষিত কাউন্সিলর, সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদে নতুন করে মনোনয়নপত্র দাখিলের সুযোগ থাকবে না। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করা হবে।
এই নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামীলীগের নৌকা মার্কা নিয়ে নির্বাচনে লড়বেন অ্যাড. জিল­ুর রহমান জুয়েল এবং হাতপাখা মার্কার প্রার্থী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের চাঁদপুর জেলা সংগঠনের নেতা মামুনুর রশিদ বেলাল।

শেয়ার করুন

Leave a Reply