চাঁদপুর মা ও শিশু হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় যুবকের মৃত্যু, লাখ টাকায় রফাদফা

আশিক বিন রহীম :
চাঁদপুর শহরের মা ও শিশু হাসপাতালে (প্রঃ) এ ভুল চিকিৎসায় জিতু বেপারী (২৫) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে পরিবার। ২মে রোববার সকাল ৮ টায় শহরের মিশন রোড সংলগ্ন বঙ্গবন্ধু সড়কে অবস্থিত হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটে। এতে বিক্ষুব্ধ স্বজন ও জনতা হাসপাতালের আসবাবপত্র ভাংচুর করেছ। খবর পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করেন।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর ঘটনায় দীর্ঘ ৪ ঘন্টা লাশ ফেলে রেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ১ লাখ টাকার বিনিময়ে বিষয়টি রফাদফা করে।
এ সময় ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাহেদ সরকার, জেলা বিএমএর সভাপতি ডাঃ হুদা, মা ও শিশু হাসপাতাল পরিচালক মোঃ সোহেল, মোঃ মহসীন সর্দারসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মৃত জিতু বেপারী ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৯নং উত্তর গবিন্দপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড মেম্বার স্বপন বেপারীর ছেলে। সে ঢাকায় কাঁচামালের ব্যবসা করতো। গত ৮ মাস পূর্বে বিয়ে করেন। তার স্ত্রী ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
জিতুর বোন রুনা আক্তার জানায়, গত কয়েকদিন যাবত জিতুর প্রচন্ড পেট ব্যাথা হয়। পরে আমরা গ্রাম্য ডাক্তার সাইফুল ইসলামের (বাবু) সাথে আলাপ করি। ২৯ এপ্রিল গ্রাম্য ডাক্তার আমাদের মা ও শিশু হাসপাতালে পাঠায়। এখানে পরিক্ষা-নিরিক্ষা শেষে আমার ভাইকে ভর্তি করাই। এরপর সেই গ্রাম্য ডাক্তার সাইফুল জানায় জরুরি ভিত্তিতে জিতুর অপরেশন করতে হবে, তার পেটের নাড়ি-ভুড়ি প্যাচিয় ছিদ্র হয়ে গেছে, ৩০ হাজার টাকা লাগবে। এরপর ৩০ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে তার অপারেশন করা হয়। ১ মে শুক্রবার ভোরে জিতুর জ্ঞান ফিরে ও শনিবার রাত থেকে সে কালো বর্ণের হয়ে যায়।
রুনা বেগম আরো জানান, জিতুর অপারেশন করতে গিয়ে ডাক্তার তারা নাড়ি ভুড়ি কেটে ফেলেছে। সেই যন্ত্রনায় রোববার সকালে তার মৃত্যু হয়।
জিতুর পিতা স্বপন বেপারী জানায়, আমার ৩ ছেলে ও ১ মেয়ের মধ্যে জিতু সবার বড়। আমি এ হাসপাতালে অপরেশন করতে রাজি হই নাই। গ্রাম্য ডাক্তার সাইফুল ইসলাম (বাবু) আমাকে বলছে এখানে ভালো অপারেশন হয়, চিন্তা করার কিছু নেই।
হাসপাতালের পরিচালক মোঃ মহসীন সর্দার জানায়, আমরা অপারেশন করার পূর্বে সম্মতিপত্রে তাদের স্বাক্ষর নিয়েছি। গত বৃহস্পতিবার ডাক্তার মনিরুল ইসলাম তার অপারেশন করায়। আজকে তাকে রিলিজ দেওয়ার কথা ছিল। স্বজনরা রোগীর জ্ঞান ফিরলে অক্সিজেন খুলে কথা বলতে চায়, নার্সকে না বলে পানি খাওয়ায়।

শেয়ার করুন

Leave a Reply