চাঁদপুর হাসপাতালে করোনায় স্বামীর মৃত্যু, অজ্ঞান শোকাহত স্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক :

চাঁদপুর ২৫০ শয্যার সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে করোনায় আক্রান্ত হয়ে দেলোয়ার হোসেন (৬৫) নামের এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ওই ব্যক্তির মৃত্যুর পর স্বামীহারা শোকাহত স্ত্রী কুলসুমা বেগম ছুরি হাতে নিয়ে হাসপাতালে থাকা ডাক্তার, নার্সসহ অন্যান্যদের আঘাত করার চেষ্টা করেন। এরপরই হাসপাতালের মেঝেতে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন।

৬ আগস্ট শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের ২য় তলার আইসোলেশন ইউনিটে এ ঘটনা ঘটে। নিহত দেলোয়ার হোসেন চাঁদপুর ফরিদগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম রুপসা গ্রামের জালাল বাশারের ছেলে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কুলসুমা বেগম তার করোনায় আক্রান্ত স্বামীকে নিয়ে হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডে রয়েছেন। ভর্তি হওয়ার পর থেকে কোনো আত্মীয়-স্বজন খোঁজখবর না রাখায় এবং তাকে হাসপাতালে দেখতে না আসায় তিনি মানসিকভাবে অনেকটা ভেঙে পড়েছিলেন। তার স্বামীর অক্সিজেন লেভেলও অনেকটা কম ছিল। তিনি শুক্রবার বেলা ১২টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় করোনা ওয়ার্ডেই মারা যান। চোখের সামনে স্বামীর এমন মৃত্যুর দৃশ্য দেখে তিনি অতি শোকে ফল কাটার ছুরি নিয়ে ডাক্তার এবং নার্সদের ধাওয়া করেন। একই সাথে হাসপাতালে থাকা অন্যান্য রোগীর স্বজনদেরকেও ছুরি উঠিয়ে ভয় দেখান। কয়েক মিনিট ধরে ছুরি নিয়ে ধাওয়া করে এক সময় নিজেই জ্ঞান হারিয়ে অচেতন হয়ে হাসপাতালের ফ্লোরে লুটিয়ে পড়েন।

এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানার এসআই শাহরিন ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে অজ্ঞান অবস্থায় দেখতে পান।

নিহত দেলোয়ার হোসেনের ভাগিনা নজরুল ইসলাম জানান, তার মামা দীর্ঘদিন যাবত কুয়েতে ছিলেন। সেখানে থাকা অবস্থায় তার শরীরে বিভিন্ন রোগ ধরা পড়ে। এসব রোগ থেকে সুস্থ হতে সেখানে চিকিৎসা করালেও তিনি কোনোভাবেই সুস্থ হয়ে ওঠেননি। তাই চিকিৎসার জন্য গত চার-পাঁচ বছর আগে কুয়েত থেকে তিনি দেশে ফিরে আসেন। গত ৪ দিন পূর্বে তার মামা হাসপাতালের আইসোলেশনে ভর্তি হন।

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ও করোনা ফোকাল পার্সন ডা. সুজাউদ্দৌলা রুবেল বলেন, মৃত রোগী গত দুই দিন পূর্বে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি হন। তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। তার অক্সিজেন লেবেল অনেক কম ছিল। অক্সিজেন লেবেল অনেক কমে যাওয়ায় শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।

তিনি বলেন, স্বামী মারা যাওয়ায় তার স্ত্রী শকড হয়ে পড়েন। পরে তিনি ফল কাটার একটি ছুরি নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করেন। এতে হাসপাতালে থাকা সবাই ভয় পেয়ে যান। তবে কারো উপরে হামলা করার আগেই সবাই তাকে ধরে ফেলে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply