তরপুরচন্ডীতে ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা ৫ শ্রেণির ছাত্রী, জোরপূর্বক গর্ভপাত

নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁদপুর সদর উপজেলার তরপুরচন্ডি ইউনিয়নে জাহাঙ্গীর দর্জি (৪০) নামের এক লম্পটের বিরুদ্ধে পঞ্চম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রী (১২)কে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ধর্ষিত ওই স্কুলছাত্রী ৪ মাসরে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে তাকে ও তার পরিবারকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক গর্ভপাত করানো হয়। এরপর ওই পরিবারকে আইনের আশ্রয় না নিতে নানা ভয়ভীতি দেখাচ্ছে ধর্ষক পক্ষ। তবে খবর পেয়ে পুলিশ ওই এলাকায় গেলেও পায়নি ধর্ষক এবং ভিকটিমের পরিবারকে।
এমনই ঘটনা ঘটেছে তরপুরচন্ডি ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের আনন্দবাজার এলাকার বেপারী বাড়িতে। কিশোরী স্থানীয় আব্দুল আওয়াল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী।
এদিকে এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্থানীয় একটি দালাল চক্র উঠেপড়ে লেগেছে। চক্রটি কিশোরীর পরিবিরকে প্রথমে ক্ষতিপূরণ দেবার কথা বলে আইনের আশ্রয় নেয়া থেকে বিরত রাখে। এই সুযোগে গত ১ সপ্তাহ আগে শহরের একটি হাসপাতালে এনে কিশোরীকে জোরপূর্বক গর্ভপাত করায়। আর এর পর থেকেই তারা নানাভাবে কিশোরীর পরিবারকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।
ধর্ষণের শিকার কিশোরী বললো, সে বাড়ির পাশে খেলতে গেলে জাহাঙ্গীর দর্জী তাকে টাকার লোভ দেখিয়ে নির্জন স্থানে নিয়ে যায় এবং আমার মুখ চেপে খারাপ কাজ করে। এরপর সে আমাকে ভয় দেখিয়ে আরো কয়েকবার এই কাজ করেছে। আমি যাতে কাউকে না বলি এজন্যে ভয় দেখিয়েছে।
কিশোরী মা মনোয়ারা বেগম জানান, আমার শিশু মেয়েটিকে প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে জাহাঙ্গীর দর্জি বহুবার ধর্ষণ করে। পরে তার শারীরিক পরিবর্তন দেখে জিজ্ঞেস করলে সে বিষয়টি স্বীকার করে। পরে লম্পট জাহাঙ্গীরের স্ত্রীর এসে আমার মেয়েকে চাঁদপুরে নিয়ে গর্ভপাত করায়।
মনোয়ারা বেগম আরো জানান, আমি বিষয়টি ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার রুহুল আমিন সুকদার, ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার ও আব্দুল আওয়াল সপ্রাবির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোস্তফা মাল, বিএনপি নেতা হাসান দেওয়ানসহ স্থানীয়দের জানিয়েছি। আমরা অসহায় বলে বিচার পাচ্ছি না। আমরা যাতে মামলা না করি, তার জন্যে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আমি এই লম্পটের বিচার চাই।
এ বিষয়ে জানতে ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার রুহুল আমিন শিকদারের মোবাইলে কয়েকবার কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
তরপুরচন্ডী ইউপি চেয়ারম্যান ইমাম হাসান রাসেল গাজী বলেন, ভিকটিমের পক্ষ থেকে বিষয়টি আমাকে জানানো হয়নি। তবে গত দু’দিন আগে বিষয়টি জানতে পেরেছি। ঘটনাটি প্রায় ১৫ দিন আগের হলেও স্থানীয় মেম্বার বিষয়টি আমার কাছে গোপন করেছেন।
এ বিষয়ে চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার-সদর সার্কেল জাহেদ পারভেজ চৌধুরী বলেন, আমরা খবর পেয়ে শনিবার বিকেলে পুলিশের একটি টিম ওই এলাকায় পাঠাই। কিন্তু আমাদের টিম সেখানে গিয়ে দেখে ভিকটিমের বাড়ি তালা মারা। উধাও হয়ে গেছে অভিযুক্ত ব্যক্তিও।
তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি- ভিকটিমের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে। তারা যদি আমাদের কাছে অভিযোগ দেয় তাহলে অভিযুক্ত ব্যক্তি এবং এর সাথে জড়িত অন্যান্যদেরও আইনের আওতায় আনবো।

শেয়ার করুন

Leave a Reply