দ্বিতীয় পর্যায়ে আর্থিক সহায়তার চেক পেলেন চাঁদপুরের সাংবাদিকরা

প্রধানমন্ত্রী মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারলে আত্মতৃপ্তি লাভ করেন : মুহম্মদ শফিকুর রহমান এমপি

সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট শেখ হাসিনার আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন : জাফর ওয়াজেদ, মহাপরিচালক পিআইবি

নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতিতে সাংবাদিকদের সহায়তা প্রদানের জন্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুত সারা বাংলাদেশের ন্যায় চাঁদপুরের সাংবাদিকদেরও আর্থিক প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। এখানে কর্মরত সাংবাদিককে আরো ৪৭ জন ১০ হাজার টাকা করে চেক প্রদান করেছে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট। গতকাল বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফা এ চেক বিতরণ করা হয়। এর আগে ৫০ জন সাংবাদিককে প্রধানমন্ত্রীর এই চেক বিতরণ করা হয়। গত ২৭ জুলাই এই চেক বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি। সে সময় যারা প্রধানমন্ত্রীর এই প্রণোদনা পাননি তাদের মাঝে গতকাল এ চেক বিতরণ করা হয়েছে। চাঁদপুর প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দের অনবদ্য প্রচেষ্টায় এ নিয়ে চাঁদপুরে কর্মরত ৯৭ জন সাংবাদিক প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত আর্থিক সহায়তা চেক গ্রহণ করলেন।


গতকাল ২৭ আগস্ট বৃহস্পতিবার দুপুরে চাঁদপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে প্রধান অতিথি হিসেবে সাংবাদিকদের হাতে এ চেক তুলে দেন চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ও তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মুহাম্মদ শফিকুর রহমান।

তিনি শোকাবহ আগস্ট মাসে জাতির জনকসহ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় শহীদদের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ পূর্বক তাঁদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বলেন, শেখ হাসিনার সরকার সাংবাদিকবান্ধব সরকার। তিনি মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারলে আত্মতৃপ্তি লাভ করেন। করোনাকালীন সময় আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার জন্যে আপনারা দোয়া করবেন। তিনি যদি আরো ১০ বছর ক্ষমতায় থাকতে পারেন তাহলে উন্নয়নের ক্ষেত্রে দেশ আরো এগিয়ে যাবে। তিনি বলেন, এমন রাষ্ট্র নেতা আমরা আর পাবো না। তিনি চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সদ্য বিদায়ী সভাপতি মরহুম ইকরাম চৌধুরী একজন ভালো মনের মানুষ ছিলো উল্লেখ করে তাঁর রুহের মাগফেরাত কামনা করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পিআইবির মহাপরিচালক মোঃ জাফর ওয়াজেদ। তিনি সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট শেখ হাসিনার আশা আকাক্সক্ষার প্রতিফলন উল্লেখ করে বলেন, ২০১৪ সালে এ প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এ সংগঠনটি যখন চালু হয় তখন বলা হয়েছিল সংগঠনটি দুঃস্থ সাংবাদিকদের সংগঠন। আমি এর প্রতিবাদ করেছি এবং সংগঠনটি যাতে সাংবাদিকদের কল্যাণে কাজ করতে পারে সে লক্ষ্যে সংগঠনটি এখন কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, কতিপয় অসৎ সাংবাদিক নেতার কারণে সাংবাদিকদের ছোট করা হয়। মনে রাখতে হবে সব সাংবাদিকই সাংবাদিক নেতা হতে পারে না। তিনি আরো বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত সহায়তা প্রদানে আওয়ামী লীগ-বিএনপি দেখিনি। চেষ্টা করেছি প্রকৃত সাংবাদিকদের এ সহায়তা প্রদান করতে। কারণ, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতিই ছিলো কোনো দল বিবেচিত নয়, বিবেচিত হবে মানুষ হিসেবে। তাই সাংবাদিককে সাংবাদিক হিসেবেই মূল্যায়ন করেছি। তিনি আরো বলেন, করোনাকালীন সময় অনেক মালিক পক্ষই কর্মচারীদের সহায়তা না করে তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মুখ ফিরিয়ে নেন নি। তিনি সকল মানুষের প্রতিই সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। উপজেলা পর্যায়েও প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা প্রদান করা যায় কিনা সে ব্যাপারেও আমাদের চিন্তা রয়েছে বলে তিনি জানান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের (প্রশাসন ও অর্থ) উপ-পরিচালক মোঃ মনিরুল ইসলাম কবির। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামানের সভাপতিত্বে চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি চাঁদপুর কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক কাজী শাহাদাত বর্তমান সময়ে স্থানীয় পর্যায়ে প্রকাশিত পত্রিকার আর্থিক দুরবস্থার কথা তুলে ধরে তিনি সংবাদপত্রে প্রকাশিত বিজ্ঞাপনের বকেয়া বিল পরিশোধের জন্যে অতিথিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এএইচএম আহসান উল্লাহ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গিয়াসউদ্দিন মিলন।

অতিথিদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানান চাঁদপুর প্রেসক্লাব, টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরাম ও ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ আব্দুর রহমান গাজী ও গীতা পাঠ করেন প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লক্ষ্মণ চন্দ্র সূত্রধর।
অনুষ্ঠানে সদ্য প্রয়াত প্রেসক্লাব সভাপতি ইকরাম চৌধুরীর রুহের মাগফেরাত কামনা করে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

শেয়ার করুন

Leave a Reply