নায়েম মহাপরিচালকের দায়িত্ব পেলেন অধ্যাপক লোকমান হোসেন

নিজস্ব প্রতিবেদক :
জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমির (নায়েম) মহাপরিচালকের রুটিন দায়িত্ব পেয়েছেন চাঁদপুরের কৃতী সন্তান অধ্যাপক মো. লোকমান হোসেন। তিনি নায়েমের প্রশিক্ষণ ও বাস্তবায়ন শাখার পরিচালক। একাডেমির মহাপরিচালক আহমেদ সাজ্জাদ রশীদ পিআরএলে যাচ্ছেন। তাই অধ্যাপক লোকমানকে মহাপরিচালকের রুটিন দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
এদিকে পিআরএলে গমনের সুবিধার্থে অধ্যাপক আহমেদ সাজ্জাদ রশীদকে প্রেষণ প্রত্যাহার করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে বদলি করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে অধ্যাপক আহমেদ সাজ্জাদ রশীদকে ওএসডি ও অধ্যাপক মো. লোকমান হোসেনকে নায়েম মহাপরিচালকের রুটিন দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
ড. মো. লোকমান হোসেন ১৯৬২ সালের ১ জুলাই চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। পিতা: মো. আবুল বাসার মিয়া এবং মাতা: মিসেস হালিমা বেগম। তিনি মতলবগঞ্জ জে. বি. হাই স্কুল, মতলব কলেজ ও চাঁদপুর সরকারি কলেজ, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ ও আইইআর-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-এ লেখাপড়া করেন। পেশাগত মানোন্নয়নের লক্ষ্যে ইউরোপ, আমেরিকা, আফ্রিকা, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, লাওস, হংকং, ভারতসহ এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশ থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। দেশ ও বিদেশের আন্তর্জাতিক স্বীকৃত জার্নালে তাঁর বহুসংখক (৯৭টি) গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। তাছাড়া ছোটগল্প, রম্য রচনা, শিক্ষামূলক আর্র্টিক্যাল, সমাজসংস্কার ও বিশ্লেষণধর্মী প্রবন্ধ এর নিয়মিত লেখক । এ বছর ও বাংলা একাডেমির “মাতৃভাষা প্রকাশ” এর মাধ্যমে “শিক্ষা ও জীবনবোধ-প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম” শিরোনামে একটি বই প্রকাশ পেয়েছে। প্রফেসর ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, প্রাক্তন উপাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বইটির মোড়ক উম্মোচন করেন।
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় তিনি নিরলস কাজ করছেন। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে পরিচালিত ন্যাশনাল পার্ক ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান; ইউএনডিপির সহায়তায় পরিচালিত টেকসই পরিবেশ ব্যবস্থাপনা; এডিবির সহায়তায় মেঘনা নদী থেকে ঢাকায় সুপেয় পানি সরবরাহ প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই; পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের ইকোট্যুরিজম ব্যবস্থাপনা প্লান ইত্যাদি ক্ষেত্রে বায়োডাইভার্সিটির প্রভাব নির্ধারণে পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছেন।
তিনি বেশ কয়েকটি পেশাজীবী সংগঠনের আজীবন সদস্য যেমনÑওয়ার্ল্ড কনজারভেশন ইউনিয়ন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল বায়োডাইভার্সিটি গ্রুপ, বাংলাদেশ প্রাণিবিজ্ঞান সমিতি, বার্ড প্রিজারভেশন সোসাইটি, ওয়াইল্ড লাইভ প্রিজারভেশন সোসাইটি, ওয়াইল্ড লাইভ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, এশিয়াটিক সোসাইটি অব বাংলাদেশ, ন্যাশনাল ওশেনোগ্রাফিক মেরিটাইম ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ অ্যাডভান্সমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব সায়েন্সেস, সুইজারল্যান্ডভিত্তিক স্পেসিস সার্ভাইভাল কমিশন, সাউথ-ইষ্ট এশিয়ান রেপ্টাইল ষ্পেশালিষ্ট গ্রুপ, অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন অব ঢাকা ইউনিভার্সিটি, জুলজি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, আন্তর্জাতিক লায়ন্স ক্লাবের ডিস্ট্রিক্ট চেয়ারপার্সন, ঢাকাস্থ চাঁদপুর জেলা সমিতি, বৃহত্তর কুমিল্লা সমিতি, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ইত্যাদি। তিনি চঁাঁদপুর স্পুটনিক সায়েন্স ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তিনি বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রিয় কমিটির শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক এবং বঙ্গবন্ধ ও জাতীয় চারনেতা স্মৃতি পরিষদের কেন্দ্রিয় কমিটির সহসভাপতির হিসেবে কাজ করছেন।
ড. হোসেন স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করার পর বেশ কয়েকটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে গবেষক হিসেবে কাজ করেন, অতঃপর ডক্টরাল ও পোস্ট ডক্টরাল ডিগ্রি লাভ করেন। চাকরিজীবনে জগন্নাথ কলেজ, ঢাকা কলেজ, চাঁদপুর কলেজ, নবাব ফয়জুন্নেসা কলেজ, নোয়াখালী কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এর বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন। ড. হোসেন বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের একজন সদস্য এবং জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমি (নায়েম) এর পরিচালক প্রশিক্ষণ হিসেবে কাজ করেছেন। সম্প্রতি তিনি নায়েমের মহাপরিচালক হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন। এজন্য তিনি মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী ডা: দীপু মনি এমপি মহোদয় এবং শিক্ষা সচিব জনাব মো: মাহবুব হোসেন স্যারের নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তাঁর উপর উপর অর্পিত দায়িত্ব যেন তিনি যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে পারেন সেজন্য সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply