নৌকা মার্কার নবনির্বাচিত মেয়রকে অভিনন্দন জানায়নি জেলা আ’লীগ

ভোটাররাও পায়নি কৃতজ্ঞতা, সর্বত্র সমালোচনার ঝড়
নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁদপুর পৌরসভা নির্বাচন সম্পন্নের ১ সপ্তাহ পূর্ণ হওয়ার মাত্র ১ দিন বাকি। কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য, আওয়ামী লীগ থেকে বিপুল ভোটে জয়লাভকারি মেয়রকে জেলা আওয়ামী লীগ আনুষ্ঠানিক কিংবা অনানুষ্ঠানিক কোনভাবেই অভিনন্দন জানায়নি। অথচ একক প্রার্থী হিসাবে নৌকা নিয়ে বিজয়ী হওয়া নবীন ও তারুণ্যের প্রতীক অ্যাড. জিল্লুর রহমান জুয়েলকে এ যাবৎ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, সমমনা রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন, সাংবাদিকসহ সুশীল সমাজের শত শত মানুষজন, সাধারণ পৌর নাগরিকরা অভিনন্দন জানিয়ে আসছেন। মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের চার চারবারের নির্বাচিত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পক্ষ থেকেও অভিনন্দিত করা হয়েছে মেয়রকে। এখনো জিল্লুর রহমান জুয়েলকে শত শত মানুষ অভিনন্দন জানাচ্ছেন। ফুলে ফুলে সিক্ত করছেন।
কিন্তু জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এখনো তাকে অভিনন্দন না জানানোয় দলের মধ্যে নানা গুঞ্জন ও চরম ক্ষোভের সৃষ্টি তো হয়েছেই, পাশাপাশি সাধারণ পৌরবাসীও হতবাক। বিশেষ করে দলের জেলা প্যাডে সভাপতি এবং বর্তমান মেয়র নাসির উদ্দীন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল ২ জনের কেউই দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক অভিনন্দন জানাননি নবনির্বাচিত মেয়রকে। এছাড়া নির্বাচনে সাধারণ ভোটার এবং দলের সমর্থক কর্মী যারা নৌকাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করলো, সে ক্ষেত্রে নাগরিকদেরও কৃতজ্ঞতা জানাননি। অথচ জিল্লুর রহমান বিজয়ী হওয়ার পরই নির্বাচন পরিচালনাকারী কমিটির আহবায়ক জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ডাঃ জে আর ওয়াদুদ টিপু ভোটার তথা পৌর নাগরিকদের অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। তিনি এই কৃতজ্ঞতা স্থানীয় পত্রিকাগুলোর মাধ্যমে এবং সামাজিক যোগাযোগে তা প্রকাশ করেছেন। যা প্রশংসিত হয়েছে। আর এছাড়া বিজয়ী প্রার্থী গত ক’দিন ধরেই ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আসছেন।
এদিকে কেন জেলা আওয়ামী লীগ এ ধরনের কাজটি করছেন- এ প্রশ্নটি এখন মুখে মুখে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ পরিবারই এ নিয়ে নানা কথা চালাচালি হচ্ছে। অনেকেই এমন মন্তব্য করছেন- দুই প্রবীণ রাজনীতিকের উচিৎ ছিল ওই দিন রাতে কিংবা সকালে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিনন্দন জানানো। এছাড়া দলীয় প্যাডে নবনির্বাচিত মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েলকে না হোক অন্তত ভোটারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারতেন। কিন্তু তারা সেটি করেননি।
প্রসঙ্গত : পৌরসভা এই নির্বাচন হওয়ার কথা ছিলো গেলো ২৯ মার্চ। কিন্তু বিএনপি প্রার্থীর মৃত্যু এবং পরবর্তীতে মহামারি করোনার প্রায় সাড়ে ৬ মাস পর গত ১০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে জিল্লুর রহমান জুয়েল যিনি জেলা আওয়ামী লীগেরই শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক তাকে প্রথম থেকেই একক প্রার্থী ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জুয়েল ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মি সমর্থক নিয়ে প্রচারনা চালালে আওয়ামী লীগের শীর্ষ স্থানীয় ২ নেতা তখনও দূরে দূরে ছিলেন বলে অনেকে মনে করেন। তাদের অনুসারী কেউ কেউ বলছেন, হয়তো বয়সের কারণে তারা সব সময় থাকতে পারেননি। কিন্তু বিজয়ের এই সময়ে তাকে অভিনন্দিত করা কিংবা ভোটারদের কৃতজ্ঞতা জানানোর বিষয়টি তারা অনায়াসে করতে পারতেন। অথচ দিন গড়িয়ে সপ্তাহ পার হতে চলছে তাদের দেখা মিলছে না। যদিও আওয়ামী লীগের কোন কোন সিনিয়র নেতা নিজ উদ্যোগে বা দলের বৃহত্তর স্বার্থ বিবেচনায় এনে যোগ্য এ নবীন প্রার্থীর পাশে থাকতে দেখা যায়। কিন্তু যে ২ জনের উপস্থিতি, উৎসাহ, উদ্দীপনা দোয়া নিয়ে সমর্থকরা এগিয়ে যাওয়ার কথা ছিলো-সেভাবে ওই প্রবীণ নেতারা কাজগুলো সম্পাদন করেননি। উল্লেখ্য, জিল্লুর রহমান জুয়েল ৩১ হাজার ভোটেরও বেশি ব্যবধানে বিএনপি প্রার্থীকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply