বাগাদীতে সন্ত্রাসী হামলায় একই পরিবারের ৩ জন আহত
উপরে দুই হামলাকারী, নিচে হামলার শিকার দুজন।
নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের পশ্চিম সেকদি গ্রামে এক পরিবারের উপর পুলিশের উপস্থিতিতেই সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। এতে কমপক্ষে ৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে খুরশিদা বেগম (৪৫), কুলসুমা বেগম (৩০) ও রিপন (২৮) চাঁদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা গেছে, স্থানীয় শাহাদাত হোসেন মিজি তার পৈত্রিক ভিটায় একটি পাকাঘর নির্মাণ করছিলেন। ঘরের ছাদ ঢালাই করতে গেলে তার পার্শ্ববর্তী প্রতিবেশি সুমি আক্তার ৩০ এবং তার স্বামী মো. খোকন মিজি বাধা দেয়। একপর্যায়ে ৯৯৯ নম্বরে তারা ফোন করে তারা পুলিশও সেখানে নেয়। চাঁদপুর মডেল থানার এসআই সেলিম সেখানে যান। পরবর্তীতে অভিযোগের সত্যতা না পেয়ে সেখান থেকে চলে আসেন এবং ঘর নির্মাণে বাধা না দেয়ার অনুরোধ জানান। এরপর যথারীতি ঘরের নির্মাণ কাজ চলতে থাকে। কিন্তু সুমি আক্তার ও তার স্বামী খোকন প্রতিপক্ষকে গালিগালাজ ও হুমকি দিতে থাকে। এক পর্যায়ে রোববার সকালে বিষয়টি তারা স্থানীয় চেয়ারম্যান এবং মেম্বারকে জানানোর পর মেম্বার সেখানে গিয়ে ঘর নির্মাণ অব্যাহত রাখার কথা বলেন। ঘর নির্মাণে বাধাদানকারীদের অহেতুক ঝামেলা না করার জন্য বলেন। বেলা ৩টার দিকে সুমি আক্তার নিজের ঘর থেকে একটি সাবল এনে পাকঘরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে ঘরের ক্ষতিসাধন করে। এই ভীতিকর পরিস্থিতি দেখে ঘরের মালিক শাহাদাত হোসেন মিজি থানা পুলিশকে বিষয়টি জানালে পুলিশ একটি অভিযোগ দায়ের করার জন্য বলে। পুলিশের কথায় রোববারই তিনি চাদপুর মডেল থানায় বসতঘরে হামলা, ভাংচুর ও প্রাণনাশের হুমকি বিষয়ে দুইজনকে আসামী করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের আলোকেই সোমবার বিকেলে এসআই ফারুকের নেতৃত্বে দুইজন পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে উপস্থিত গন্যমান্যদের নিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে কথা বলার জন্য বসেন। দুই পুলিশের উপস্থিতিতেই সুমি আক্তার ও তার স্বামীসহ অন্যরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শাহাদাত মিজির পরিবারের লোকদের উপর হামলা চালায়। এই পরিস্থিতিতে পুলিশ বিষয়টি সামাল দিতে অতিরিক্ত ফোর্স ঘটনাস্থলে নেয়। ততক্ষণে মুমুর্ষ অবস্থায় আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে আনা হয়।
এ বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ফারুক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অভিযুক্তরা আগে থেকেই খুব খারাপ প্রকৃতির। আমাদের সামনেই তারা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। তিনি জানান, আসামী সুমি আক্তার ও তার স্বামী খোকন মিজি অন্য একটি মামলার চার্জশিটভূক্ত আসামী। তারা যে কাজটি করেছে তা অত্যন্ত অপরাধমূলক। আমি থানায় গিয়ে এ ঘঁনাটি নিয়ে জিডি করা হবে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে শাহাদত মিজি ও তার পরিবার সম্পূর্ণ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। আসামীরা তাদের বাড়িতেই অবস্থান করছে। শাহাদাত মিজি ঢাকার একটি পত্রিকার স্টাফ হিসেবে কর্মরত। তিনি বলেন, আমি আতংকে আছি। তারা খুবই খারাপ। যে কোন মুহূর্তে আমাদের উপরে হামলা হতে পারে। আমাদের প্রাণনাশ করতে পারে। তিনি বলেন, আমি যখন ঘরটি তুলেছিলাম তখন তাদের কোন কথা ছিল না। যখনই ছাদ ঢালাই দিতে গেলাম তখন তারা ত্রাসের পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই। অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার দাবি করছি।
সুমি আক্তার ও তার স্বামী খোকন সম্পর্কে চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন বিল্লাল জানান, তারা খুবই খারাপ প্রকৃতির। মেম্বারকে সেখানে পাঠিয়েছি বলে গতকাল তারা আমাকেও মোবাইলে হুমকি দিয়েছে। যা আমি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি।
স্থানীয় মেম্বার শফিকুর রহমান জানান, আমি বিগত পাচবারের নির্বাচিত মেম্বার। আমি জানি এরা সন্ত্রাসী প্রকৃতির। এরা মাদকের সাথেও জড়িত। এর আগে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতের এজলাশকক্ষে বিচার ব্যবস্থাকে বিঘিœত করার কারণে এরা জেল খেটেছে। এদের বিচার আমিও চাই।
চাঁদপুর মডেল থানার ওসি আব্দুর রশিদ বলেন, বিষয়টি আমরা জানি। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।