বাচ্চাদের শেখার উপকরণ উপভোগ্য করে তৈরি করা দরকার : শিক্ষামন্ত্রী

চাঁদপুর প্রতিদিন ডেস্ক :
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, এই ডিজিটাল শিক্ষার যুগে আমি বিশ্বাস করি যে বাচ্চাদের শেখার উপকরণগুলো সহজেই বোধগম্য এবং উপভোগ্য করে তৈরি করা দরকার। পড়াশোনা সবসময় পরীক্ষাকেন্দ্রিক হওয়া উচিত নয় বরং নীতিবান, দায়িত্বশীল এবং সংবেদনশীল মানুষ গড়তে যেসব শিক্ষা দরকার তার প্রয়োজনীয়তা অনেক।
শুক্রবার রাতে একটি ওয়েবিনারের মাধ্যমে ‘হারস্টোরি ফাউন্ডেশন’ ও ‘চল পড়ি’র যৌথ প্রযোজনায় ‘চার রঙের বাসা’ নামক শর্ট স্টপ মোশন অ্যানিমেশনের উদ্বোধনের সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। হারস্টোরি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক জেরিন মাহমুদ হোসেনের সঞ্চালনায় এতে যুক্ত ছিলেন সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য ড. নাসরিন আহমদসহ আরও অনেকেই।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এই স্টপ মোশন অ্যানিমেশনটি শিশুদের জন্য উপযোগী মাধ্যম, ভাষা এবং স্টাইল ব্যবহার করে সংবিধানের চারটি স্তম্ভকে তুলে ধরেছে। অ্যানিমেশনটি বঙ্গবন্ধুর নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা এবং তাঁর দর্শন গঠনের কাহিনী অনুসরণ করেছে। যেসব মূল্যবোধ ও রাজনৈতিক আদর্শ যা বাংলাদেশের সংবিধানের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে, এই অ্যানিমেশন তরুণ প্রজন্মকে সেসব সম্পর্কে শিক্ষিত করে তুলবে।
শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, এই ঐতিহাসিক শোকের মাসে চার রঙের বাসার প্রযোজনাকে আমি সাধুবাদ জানাতে চাই, যেখানে খুবই সময়োপযোগী ও শিশুবান্ধব একটি অ্যানিমেশনে সংবিধানের পেছনে বঙ্গবন্ধুর মৌলিক কাজগুলো দেখানো হয়েছে। এই স্টপ মোশন অ্যানিমেশনটি শুধু গল্পই বলেনি বরং শিশুহৃদয় উন্মোচন করবে এবং বাংলাদেশের সঠিক ইতিহাস জানার ব্যাপারে, নিজেদের গৌরবোজ্জ্বল জাতিগত পরিচয় উপলব্ধি করার ব্যাপারে আগ্রহী করবে।
ওয়েবিনারে আসাদুজ্জামান নূর নতুন মিডিয়া সামগ্রী ব্যবহার করে শিশু এবং শিক্ষার্থীদের দেশের সঠিক ইতিহাস শেখানোর গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা যদি বাচ্চাদের উপভোগ্য, আকর্ষণীয় শিক্ষাসামগ্রী দিয়ে শিক্ষিত করতে পারি- তবে তারা স্বাভাবিকভাবেই সেই তথ্যটি গ্রহণ করবে। বাচ্চাদেরকে জাতির সঠিক ইতিহাস শেখাতে হবে, জাতির জন্মের গল্পগুলো তাদের মধ্যে নিজেদের জাতিগত পরিচয় সম্পর্কে অনুভূতি তৈরি করবে যা অতীব গুরুত্বপূর্ণ। এমন অ্যানিমেশন আমাদের জাতির পরিচয়, মূল্যবোধ এমনভাবে বাচ্চাদের সামনে তুলে ধরবে যা তারা উপভোগ করে শিখতে এবং সহজে মনে রাখতে পারবে।
সাইকিয়া এস চৌধুরী এবং অ্যানিমেটর অমিত আশরাফও এত অল্প সময়ের ফ্রেমে ভিডিও তৈরিতে তাদের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে কথা বলেছেন। অতিথি টিনা এফ জাবিন, বিনিয়োগ পরামর্শদাতা, স্টার্টআপ বাংলাদেশ, ডিজিটাল বিষয়বস্তুর গুরুত্বের ওপর জোর দেন এবং বাচ্চাদের জন্য একটি শেখার পোর্টাল তৈরির বিষয়ে তার চিন্তাভাবনা জানিয়েছেন যাতে জাতির ইতিহাস সম্পর্কিত উন্নতমানের শিক্ষা-সামগ্রী থাকতে পারে এবং অন্যান্য শিক্ষার বিষয়াবলিসহ বাংলাদেশের জন্ম নিয়ে অসাধারণ গল্পগুলো শিশুদের সহজে শেখানো যায়।
হারস্টোরি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক জেরিন মাহমুদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ সরকার, স্টার্টআপ বাংলাদেশ এবং আইসিটি বিভাগের সমর্থনে আমরা শিশুবান্ধব ও শিক্ষামূলক এই অ্যানিমেশনটি তৈরি করতে পেরে এবং শোকের মাসটি স্মরণীয় করে রাখতে পেরে আমরা গর্বিত! শিশুদের শিক্ষার পদ্ধতিকে পুনঃসংজ্ঞায়িত করে আমরা হারস্টোরি এবং চল পড়িকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবার ব্যাপারে আশাবাদী।

শেয়ার করুন

Leave a Reply