মতলব উত্তরে নদীতে চাঁদাবাজীর ঘটনায় ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

হামলায় আহত কয়েকজন শ্রমিক

কামরুজ্জামান হারুন :
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ধনাগোদা নদীতে চলাচলাকারী বালুবাহী বাল্কহেডে চাঁদাবাজীর ঘটনায় গত রোববারবার (৪ জুলাই) মতলব উত্তর থানায় ২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২০ জনকে আসামী করে চাঁদাবাজীর অভিযোগে মামলা রুজু করেছেন বাল্কহেডের মালিক পক্ষ।
মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজাহান কামাল জানান, মতলব উত্তর থানায় ২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২০ জনকে আসামী করে চাঁদাবাজীর অভিযোগে বাল্কহেডের মালিক পক্ষে সাইদুর রহমান বাদী হয়ে মামলা রুজু করেছেন।
এ ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বেলতলি নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শহিদুল ইসলামকে।
উল্লেখ্য, গত শনিবার রিপন ও মামুনের নেতৃত্বে একটি চক্র নৌযানে চাঁদাবাজী করতে গিয়ে মতলব উত্তরের বাগানবাড়ি ইউনিয়নের সন্তোষপুর এলাকায় ধনাগোদা নদীতে নৌ-শ্রমিক ও এলাকাবাসীর হামলায় চাঁদাবাজ মামুন বেপারী (৩৮) নিহত হয়। নিহত মামুন বেপারী গজারিয়া উপজেলার গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ জামালপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে।
পুলিশ, হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্র জানায়, উল্লিখিত ধনাগোদা নদীতে চলাচলকরা বিভিন্ন নৌযান থেকে স্থানীয় জামালপুর এলাকার একটি চাঁদাবাজ চক্র চাঁদাবাজী ও ক্ষেত্রবিশেষ ডাকাতি সংগঠিত করে থাকে।তিনি একজন চিহ্নিত চাঁদাবাজ বলে জানিয়েছে নৌ-পুলিশ। তার বিরুদ্ধে গজারিয়া থানা পাঁচটি মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।
গত শনিবার দুপুরে বালুবাহী বাল্কহেডে মামুনসহ তিন/চারজন সহযোগী চাঁদাদাবী করলে নৌশ্রমিকদের সাথে সংঘর্ষ বাধে, শ্রমিকরা ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করলে স্থানীয়রাও চাঁদাবাজদের ধাওয়া করে এ সময় হামলায় মামুন আহত হয় তার অপর সঙ্গীরা পালিয়ে যায়।
আহত মামুনকে তার স্বজনরা উদ্ধার করে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে রায়। ওইদিন বিকেল সাড়ে তিনটায় দায়িত্বরত চিকিৎসক শারমিন সুলতানা তাকে মৃত ঘোষণা করে ।
মতলব উত্তরের বেলতলী নৌ-পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ শহিদুল ইসলাম জানান, শনিবার দুপুরে মেঘনা নদীতে ট্রলারযোগে মামুনসহ চাঁদাবাজরা বাল্কহেডে চাঁদা তুলতে যায়। এসময় একটি বাল্কহেড শ্রমিকদের সঙ্গে তাদের মারামারি হলে মামুন মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়। পরে তার লোকজন তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসার জন্য গজারিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু।
নিহত মামুন এর লোকজন বিকাল ৪ টায় ইঞ্জিন চালিত ট্রলার যোগে বাগানবাড়ি ইউনিয়নের সন্তোষপুর গ্রামের সরকার বাড়িতে হামলা চালায়। এতে ৫/৬টি বসতঘরে ব্যাপক ভাংচুর করে। বাড়ি ঘরে হামলায় তিন জন আহত হয়েছে। আহতরা হলেন, মান্নান সরকার (৭০), পিতা মৃত আলী আহম্মদ সরকার, বিল্লাল সরকার (৫০), পিতা মৃত আলী আহম্মদ সরকার, রানা সরকার (২৬)। যাদের ঘরে হামলা হয়ে হয়েছে তাদের নাম, নাছিমা বেগম ও মান্নান সরকার।
শনিবার সন্ধ্যায় চাঁদপুরের নৌ-পুলিশ সুপার মোঃ কামরুজ্জামান, মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ শাহ জাহান কামাল, পরিদর্শক তদন্ত মোঃ মাসুদ,বেলতলি নৌ-পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ শহিদুল ইসলাম মতলব উত্তরে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ীঘর পরিদর্শন করেন। আহতদের খোঁজ খবর নেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply