মতলব-শ্রীরায়েরচর সড়ক উন্নয়নে ৫২৪ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন

ঢাকার সাথে যাতায়াত সহজ হবে চাঁদপুরসহ ৩ জেলার মানুষের

নিজস্ব প্রতিবেদক :
দাউদকান্দি-গোয়ালমারী-শ্রীরায়েরচর (কুমিল্লা)-মতলব উত্তর (ছেঙ্গারচর) জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প অনুমোদন করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এ প্রকল্পে খরচ হবে ৫২৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। সড়কটি বর্তমানে ১২ ফুট রয়েছে। এটির দু’ পাশে ৩ ফুট করে ৬ ফুট বাড়িয়ে মোট ১৮ ফুট প্রশ্বস্ত করা হবে। এ সড়কের কাজ সম্পন্ন হলে মতলব, চাঁদপুর, নোয়াখালি, লক্ষ্মীপুরসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকার বিপুল সংখ্যক মানুষের যাতায়াত সহজ হয়ে যাবে। বিশেষ করে ঢাকার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হবে। এ রাস্তা দিয়ে রাজধানী ঢাকায় যাতায়াত করলে বর্তমানের তুলনায় ৭২ কিলোমিটার পথ কমে যাবে বলে জানিয়েছে সড়ক বিভাগ।
মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত এনইসি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত একনেক বৈঠকে এসব প্রকল্প অনুমোদিত হয়। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে সভায় সভাপতিত্ব করেন একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান গণভবন ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও সচিবরা শেরেবাংলা নগরের এনইসি মিলানায়তন থেকে একনেক বৈঠকে অংশ নেন।
চাঁদপুর সড়ক বিভাগের এসও জসিম উদ্দিন বলেন, যে প্রকল্প পাস হয়েছে সেখানে চাঁদপুর সড়কে পড়েছে প্রায় সাড়ে ১০ কিলোমিটার। আর কুমিল্লা অংশে পড়েছে সাড়ে ১০ কিলোমিটার অথবা ১১ কিলোমিটার হবে।
তিনি বলেন, একনেকে পাস হওয়ার পর সেখানে একটা জিও হয়। তারপর মন্ত্রণালয়ের যাবতীয় কার্যক্রম শেষে এটির বিস্তারিত আসার পর কার্যক্রম শুরু হবে। তিনি বলেন, প্রথমেই হয়তো চলতি বছর ভূমি অধিগ্রহণ হবে। এরপর হয়তো আগামী বছর টেন্ডার প্রক্রিয়ায় যাবে। সব কার্যক্রম সম্পন্ন করে কাজ শুরু করতে কিছুটা সময় লাগবে।
তিনি বলেন, এ সড়কটির দু পাশে ৩ ফুট করে ৬ ফুট প্রশস্ত করে ১৮ ফুট করা হবে। তিনি বলেন, এটি সম্পর্কে এখনই বিস্তারিত বলতে পারছি না। আমাদের কাছে কাগজপত্র আসলে বিস্তারিত বলা যাবে।
এদিকে একনেক বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের জানান, একনেক বৈঠকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে-১. তেঁতুলিয়া নদীর ভাঙন ঠেকাতে ৭১২ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘তেঁতুলিয়া নদীর ভাঙন থেকে পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার ধুলিয়া লঞ্চ ঘাট থেকে বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার ধর্মপাশা রক্ষা’ শীর্ষক প্রকল্প, ২. বারৈয়াহাট-হেয়াকো-রামগড় সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্প, ৩. দাউদকান্দি-গোয়লমারী-শ্রীরায়েরচর-মতলব উত্তর জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প, ৪. খুলনা সড়ক জোনের অধীন মহাসড়কে বিদ্যমান সরু ও ঝুঁকিপূর্ণ পুরাতন কংক্রিট সেতু বা বেইলি সেতুর স্থলে কংক্রিট সেতু নির্মাণ প্রকল্প, ৫. গভীর সমুদ্রে টুনা ও সমজাতীয় পেলাজিক মাছ আহরণে পাইলট প্রকল্প, ৬. কপোতাক্ষ নদের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ (দ্বিতীয় পর্যায়) প্রকল্প এবং ৭. ইমার্জেন্সি মাল্টি-সেক্টর রোহিঙ্গা ক্রাইসিস রেসপন্স (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ‘তেঁতুলিয়া নদীর ভাঙন থেকে পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার ধুলিয়া লঞ্চ ঘাট থেকে বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার ধর্মপাশা রক্ষা’ শীর্ষক প্রকল্প হাতে নিচ্ছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি অবকাঠামো, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, কৃষি-অকৃষি জমি, ফসল এবং জনসাধারণের ঘরবাড়ি রক্ষা সম্ভব হবে। চলতি মাসে শুরু হয়ে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো)।
সভায় অংশ নেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরাও সভায় অংশ নেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply