মূল সেতু দৃশ্যমান : চলতি বছরই চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হবে ভাষাবীর এমএ ওয়াদুদ সেতু

দ্রুত গতিতে চলছে সংযোগ সড়কের কাজ
: নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁদপুরের-ফরিদগঞ্জসহ ৪ উপজেলার মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থায় সংযোগ স্থাপনে এম.এ. ওয়াদুদ সেতুটি মুজিব বর্ষেই যানবাহন ও জনসাধারণের চলাচলের জন্য উম্মুক্ত করে দেয়ার লক্ষে দ্রুতগতিতে কাজ চলছে। ইতোমধ্যেই মূল সেতুর কাজ শেষ হয়ে গেছে। এখন চলছে সংযোগ সড়কের কাজ। সংযোগ সড়কসহ সেতুর সকল কাজ সম্পন্ন হবে ডিসেম্বরের মধ্যেই। যাবতীয় কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর এ বছরই সেতুটি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন চাঁদপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইউনুছ বিশ্বাস।
যোগাযোগের ক্ষেত্রে কানেক্টিভিটির গুরুত্ব দিয়ে ২০১৭ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মাসে সেতুটির কাজের আনুষ্ঠানিক ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন চাঁদপুর-৩ (চাঁদপুর সদর-হাইমচর) আসনের সংসদ সদস্য শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূইয়া।
এলজিইডি ও স্থানীয় সূত্র জানায়, চাঁদপুর সদর উপজেলার মহামায়া থেকে দক্ষিণ আলগী স্টীল ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা এবং ফরিদগঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর ও চররনবলিয়া গ্রাম এলাকায় ডাকাতিয়া নদীর উপর ৩৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ২৭৪ দশমিক ২০ মিটার দীর্ঘ এই সেতুটি নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এই সেতুটির নির্মাণের মধ্য দিয়ে চাঁদপুর, ফরিদগঞ্জ, রায়পুর ও লক্ষীপুর উপজেলার জনগণের জন্য সড়ক পথে একটি নতুন দিগন্তের সূচনা হবে। ঢাকা যাওয়া-আসার ক্ষেত্রে দেড় দুই ঘন্টার পথ কমে আসবে। তখন আর কষ্ট করে ডিঙ্গি নৌকা দিয়ে নদী পার হতে হবে না। সেতুর দক্ষিন পাড়ে ৪৬০ মিটার এবং উত্তর পাড়ে ২শত মিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ এবং জমি অধিগ্রহন বাবদ আরো ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই সেতুটি নির্মাণ সম্পন্ন হলে স্থানীয় মানুষের সময় ও অর্থনৈতিক সাশ্রয় হবে। মালামাল পরিবহনসহ নানা সুবিধার আওতায় আসবে। এই সেতু নির্মাণের দাবী বহু বছরের। বর্তমান সরকার এই সেতুটি নির্মাণ করায় মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পুরণ হবে।
বালিথুবা পূর্ব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এইচ এম হারুনুর রশীদ বলেন, আমাদের এলাকায় এমন একটা সেতু নির্মিত হওয়ায় আনন্দিত। এ সেতুর নামও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠজন ভাষাবীর এম এ ওয়াদুদের নামে যা আমাদের গর্বিত করেছে।
তিনি এ সেতুটি নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূইয়ার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
চাঁদপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইউনুছ হোসেন বিশ্বাস জানান, মূল সেতুর কাজ শেষ হয়েছে। এখন সেতুর সংযোগ সড়কের কাজ দ্রুতগতিতে চলছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই সকল কাজ শেষ হবে। সে প্রেক্ষিতে চলতি বছরই সেতুটি উদ্বোধন করার আশা করি।
তিনি আরও জানান, চাঁদপুর জেলায় এই প্রথম স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্বাবধানে সম্পূর্ন ডিজিটাল পদ্ধতিতে কাজের গুনগতমান বজায় রেখে অটোমেটিক মেশিনের সাহায্যে পাথর, রড ও সিমেন্টদিয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ আশা করছেন মুজিব বর্ষের শুরুই এই সেতুটি খুলে দেয়া সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, এক সময় শত শত কলেজ শিক্ষার্থী দূর-দুরান্ত থেকে পাঁয়ে হেঁটে এ স্থান দিয়ে পার হয়ে চাঁদপুর কলেজে আসা-যাওয়া করতো এবং বিভিন্ন চাকুরিজীবীরা এসে ট্রেনে দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়ত করত। কালক্রমে এর নাম বগারগুদারা হয়ে যায়। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এ বগার গুদাড়া দিয়ে সন্ধ্যা হলে ওপারে গিয়ে সাধারণ মানুষ নিরাপদ আশ্রয় নিত এবং মুক্তিযোদ্ধাদের অন্যতম একটি চলাচলের নিরাপথ ছিল বগার গুদাড়া।

 

শেয়ার করুন

Leave a Reply