হাজীগঞ্জের সাংবাদিককে নিয়ে অপপ্রচার করায় রোকনুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা, পুলিশের তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত

স্টাফ রিপোর্টার :
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা কুৎসা প্রচার করে প্রশাসন ও সামাজিক ব্যক্তিদের মধ্যে শত্রুতা ঘৃণা, বিদ্বেষ এবং মানহানির অভিযোগে নামসর্বস্ব আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকা দৈনিক ‘অনুপমা’র সম্পাদক সম্পাদক ও প্রকাশক রোকনুজ্জামান রোকনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলাটি করেন জাতীয় দৈনিক বাংলাদেশের আলো, স্থানীয় দৈনিক শপথ এবং প্রিয় চাদপুর ডটকমের প্রধান সম্পাদক হিসেবে বর্তমানে কর্মরত সাংবাদিক মো. মজিবুর রহমান রনি। ইতোমধ্যে মামলার তদন্ত করে আসামী রোকনুজ্জামান রোকনের অপরাধের সত্যতা পেয়েছে পুলিশ। এদিকে মামলা দায়েরের পর আসামী সমঝোতার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। আগামী ২৯ এপ্রিল এ মামলার আইনগত শুনানি হবে বলে জানা গেছে।
মামলার বাদী মজিবুর রহমান রনি তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, সাংবাদিকতার পাশাপাশি হাজীগঞ্জ বাজারে তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক। আর বিবাদী রোকনুজ্জামান রোকন অত্যন্ত দুষ্ট ও চাঁদাবাজ প্রকৃতির লোক। বিগত সময় চাঁদাবাজির মামলায় তার তিন বছর সাজা হয়। তার সাজার মেয়র শেষ হলে জেল হাজত থেকে বের হয়ে পুনরায় সাংবাদিকতার আড়ালে বিভিন্ন প্রকার অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সনামধন্য ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তার নিজ নামীয় ফেইসবুক আইডি মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান থেকে মানহানিকর বক্তব্য দিয়ে তাদের কাছ থেকে নানা উপায়ে চাঁদা দাবি করে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় গতবছরের ৯ আগস্ট রোববার থেকে ১৬ আগস্ট পর্যন্ত সাংবাদিক মজিবুর রহমান রনির বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক বিভিন্ন প্রচারণা চালায় এবং আজেবাজে কথাবার্তা লিখে তার ফেইসবুক আইডিতে পোস্ট করে যে ‘এই লোক আমাদের সাংবাদিক নাম বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা নিয়েছে, মানুষকে বিদেশ নিবে বলে এখন লোক রাস্তার ফকির হয়ে টাকা পাওয়ার আসায় ঘরছে। সাংবাদিক সমাজ ও পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ জরুরু। তার বাড়ি হাজীগঞ্জ। এই লোক হাজীগঞ্জে বাড়ি। সে আদম ব্যবসায়ী নামে কত মানুষের টাকা হাতিয়ে নিয়ে বছরকে বছর বিদেশ নেয় না ও টাকাও দেয় না, চেক দিয়েছে। তার কাজগুলো কয়েক ধরনের।’ এ সমস্ত বিব্রতকর পোস্ট আসামী রোকনুজ্জামান রোকন বাদীর বিরুদ্ধে তার ফেইসবুক আইডিতে ছড়িয়ে দিয়ে বাদীর সম্মানহানি করেছে। বিবাদী বাদীর বিরুদ্ধে মিথ্যা কুৎসা প্রচার করে প্রশাসন ও সামাজিক ব্যক্তিদের মধ্যে শত্রুতা ঘৃণা বা বিদ্বেষ সৃষ্টি এবং বাদীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন ও সুনাম ক্ষুন্ন এবং মানহানি করে।
এদিকে এ অভিযোগ দায়েরের পর আদালতের নির্দেশে মামলাটি তদন্ত করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ সার্কেল) মো. আফজাল হোসেন। তদন্তশেষে তিনি আদালতে যে প্রতিবেদন দাখিল করেন তাতে উল্লেখ করা হয়, বিবাদী মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক হওয়া সত্ত্বেও কোন পেশাদারিত্বের পরিচয় দিতে ব্যর্থ হয়েছে। বিবাদী রোকন আইনি পন্থা অবলম্বন না করে বাদী মজিবুর রহমান রনিকে অপমান, অপদস্ত ও হেয় প্রতিপন্ন করার অভিপ্রায়ে বিবাদীর নিজের ফেইসবুক আইডি থেকে পোস্ট দেয়। যা তিনি স্বীকার করেন। বিবাদী রোকনুজ্জামান রোকন ওয়েব সাইটে এ ধরনের বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচার চালিয়ে বাদীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন ও সম্মানহানি করেছে।
তদন্ত প্রতিবেদন আরও উল্লেখ করা হয়, প্রাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণে বিবাদী রোকনুজ্জামানের বিরুদ্ধে বাদীর আনীত অভিযোগ ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫(১)/২৯(১)৩১(১) ধারার অপরাধ প্রাথমিকভাবে সত্য বলে প্রতীয়মান হয়েছে।
এ বিষয়ে মামলার বাদী সাংবাদিক মজিবুর রহমান রনি বলেন, মামলা দায়েরের পর হাজীগঞ্জের কয়েকজনকে দিয়ে মামলার আসামী রোকনুজ্জামান রোকন আমার সাথে সমঝোতা করার চেষ্টা করে। তবে আমি সমঝোতার প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছি। আমি মামলা করেছি। আইনগতভাবেই এর শেষ দেখবো। তিনি বলেন, মামলা দায়েরের পর পুলিশ তদন্ত রিপোর্ট দিয়েছে। আগামী ২৯ এপ্রিল মামলার আইনগত শুনানির দিন ধার্য্য করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এ মামলার আসামী রোকনুজ্জামান রোকনের বিরুদ্ধে ওয়ান ইলেভেন ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে চাদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা হয়েছে। তার মালিকানাধীন জাতীয় দৈনিক অনুপমা ছাড়াও চাদপুরজমিন নামে একটি স্থানীয় দৈনিক রয়েছে। এছাড়া তিনি হাসপাতাল, মার্কেট, চাদপুরজমিন টাওয়ারসহ অঢেল সম্পদের মালিক বনে গেছেন।

 

শেয়ার করুন

Leave a Reply