হাইমচরে জাটকা শিকারের দায়ে জব্দকৃত জেলে নৌকাগুলো নিলামে বিক্রি

চাঁদপুর প্রতিদিন ডেস্ক :
এ বছরই প্রথম চাঁদপুরের হাইমচরে জব্দকৃত জেলে নৌকা নিলামে বিক্রি করা হয়েছে। শুধুমাত্র হাইমচর উপজেলাতেই নিলামের মাধ্যমে জেলে নৌকা বিক্রির করা হয়েছে ১০ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। এছাড়া আরও কিছু নৌকা ধরা পড়ার পর তাৎক্ষণিক ডিসপোজাল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাইমচর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা।
তিনি জানান, নিলামে নৌকার মূল্য উঠেছে ১০ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। আর সরকারি ভ্যাট বাবদ ৭৭ হাজার টাকা। সব মিলে আদায় হয়েছে ১১ লাখ ৪১ হাজার ৮০৫ টাকা।
তিনি বলেন, হাইমচর উপজেলাতেই এবার নৌকাগুলো নিলামে তোলা হয়েছে। অন্য কোথা হয়েছে কি না জানি না। ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সরকারি কোডে ওই টাকা সরাসরি জমা হয়ে গেছে।
এদিকে জাতীয় সম্পদ জাটকা সংরক্ষণে ৫৫৩ অভিযানে চাঁদপুর মেঘনা নদীর অভয়াশ্রম এলাকা থেকে ১ মার্চ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত ২ কোটি ৪৮ লাখ ৩ হাজার মিটার নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়েছে।
জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্স, নৌ-পুলিশ ও কোস্টগার্ড এসব কারেন্ট জাল ও নৌকা জব্দ করে। মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) সকালে চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
জেলা মৎস্য বিভাগ জানিয়েছে, এক মাস ২৬ দিনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে ৯৭টি। অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে ৫৫৩টি। জাটকা জব্দ হয়েছে ৩৮.২৩৭ মেট্টিক টন। অন্যান্য মাছ জব্দ হয়েছে ০.০৪৫টন। কারেন্ট জাল জব্দ হয়েছে ২৪৮.০৩ মিটার। অন্যান্য জাল ৭৮ হাজার মিটার। এসব জব্দকৃত জালের আনুমানিক মূল্য ৪৯ কোটি ৬০ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এসব অভিযানের ঘটনায় মামলা হয়েছে ২৫৭টি।
অভিযানে জাটকা ধরার অপরাধে জেলে ও পাচারকালে জড়িত ব্যক্তি আটক হয়েছে ২৮৪ জন। ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করা হয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। এ বছর বিশেষ পদ্ধতি গ্রহণ করে জব্দকৃত নৌকাগুলো নিলামে বিক্রি হয়েছে। নৌকাগুলো বিক্রির টাকার পরিমাণ হচ্ছে ১১ লাখ ৪১ হাজার ৮০৫ টাকা।
হাইমচর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, জাটকা ও মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে আগে জব্দকৃত নৌকা কোস্টগার্ডের হেফাজতে থাকতো। কিন্তু এখন জব্দকৃত নৌকাগুলো নিলামে বিক্রি হয় এবং এই নৌকা নিষিদ্ধ সময়ে নামানো হয় না। নৌকাগুলো জব্দ প্রক্রিয়া এ বছর সুফল এসেছে।
তিনি জানান, নৌকাগুলো নিলামে তুলতে ১৫-২০ দিন সময় লেগেছে। গত ৭ এপ্রিল নৌকাগুলো নিলামে তোলা হয়। এছাড়া আরও কিছু নৌকা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক ডিসপোজাল করা হয়।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুল বাকি বলেন, মার্চের শুরু থেকে আমাদের অভিযান কাঠোর ছিল। শেষ পর্যন্ত আমরা জাটকা রক্ষায় চেষ্টা অব্যাহত রাখবো। এখনো ২৪ ঘণ্টা নদীতে উপজেলা ও জেলা টাস্কফোর্স কাজ করছে।
তিনি বলেন, মৎস্য সংরক্ষণ আইন অনুযায়ীই এবার হাইমচরে জব্দকৃত নৌকাগুলো নিলামে তোলা হয়েছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply