হাজীগঞ্জে অসদাচরণ ও দুর্নীতির অভিযোগে ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা মনির বরখাস্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক :
দায়িত্বে অবহেলা, অসদাচরণ এবং দুর্নীতিপরায়ণতার অভিযোগে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের রামচন্দ্রপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা মোঃ মনির হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত ত হয়েছে। ২৯ নভেম্বর রোববার চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে উল্লেখ করা হয়, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি), হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর এর ১৯ নভেম্বর ২০২০ তারিখের ৯২১নং স্মারকে মোঃ মনির হোসেন, ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা, রামচন্দ্রপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিস, হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর এর বিরুদ্ধে রামচন্দ্রপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসাধীন রান্ধুনীমুড়া মৌজায় হাজীগঞ্জ পৌরসভার অন্তর্ভুক্ত ৮২৩, ৯৮৭, ৬৪২ ও ৩৫৭নং জোতের অনুকূলে বিধিবর্হিভূতভাবে ভূমি উন্নয়ন করের মওকুফ দাখিলা প্রদান করেছেন। ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে রান্ধুনীমুড়া মৌজায় ৫টি জোতে ভূমি উন্নয়ন কর দাবী নির্ধারন করেননি এবং আদায়ও করেননি। এছাড়া একজন মুক্তিযোদ্ধার জমি নামজারী ও জমাখারিজ করার জন্য সরকারি ফি এর অতিরিক্ত ১৬,০০০ টাকা গ্রহণ করেছেন।
পৌরসভার অন্তর্ভুক্ত ভূমির মওকুফ দাখিলা প্রদান করা তার বিধি বর্হিভূত কাজ এবং ৫টি জোতের অনুকূলে ২০১৯-২০২০ সনের দাবী নির্ধারন না করা এবং ভূমি উন্নয়ন কর আদায় না করা তার দায়িত্ব অবহেলা ও অনভিজ্ঞতার পরিচয়ের দায়ে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা ২০১৮ এর ২(খ) এর সঙ্গানুযায়ী একই বিধি মালার ৩(বি) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এছাড়া নামজারী ও জমাখারিজ বাবদ সরকার নির্ধারিত ফি এর অতিরিক্ত অর্থ বাবদ ১৬,০০০ টাকা গ্রহণ করা সরকারি দায়িত্বে দুর্নীতিপরায়নতার দায়ে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধি মামলা ২০১৮ এর ৩(ঘ) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য।
মোঃ মনির হোসেন, ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা, রামচন্দ্রপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিস, হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি ব্যতিরেকে তথ্য অধিকার আইন উপেক্ষা করে একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে এশিয়া টিভিতে এক সাক্ষাতকারে জানান যে, নামজারী ও জমাখারিজ ফি ১১৭০/ টাকা হলেও ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা তার দ্বারা গৃহীত হয়। অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণ করা বেআইনি।
উক্ত কর্মকর্তা তার ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেন যে, “United  nations public service award -২০২০”-এ ভূমি মন্ত্রণালয় ভূষিত বিষয়টি সাইনবোর্ড আকারে নিজ অফিস স্থাপন করেন এবং ‘কেমনে কি?’ মন্তব্য করেন। যা ভূমি মন্ত্রণালয়ের অসামান্য অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন মন্তব্য করা অসদাচারণ হিসেবে গণ।
বর্ণিতাবস্থায়, তার এহেন কর্মকান্ড সরকারি দায়িত্বে অবহেলা, সরকারি দায়িত্বে থেকে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি ও দুর্নীতিপরায়নতার শামিল বিধায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা ২০১৮ এর ২(খ) ধারায় প্রদত্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে একই বিধিমালার ৩(খ), (ঘ) ধারায় দায়িত্বে অবহেলা, ‘অসদাচরণ’ ও ‘দুর্নীতি পরায়নতার’ দায়ে শাস্তিযোগ্য অপরাধ বিবেচনায় তার বিরুদ্ধে প্রাপ্ত অভিযোগের তদন্তের স্বার্থে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা ২০১৮ এর ১২ ধারা মোতাবেক তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। তিনি সাময়িক বারখাস্তকালীন সময়ে বিধি মোতাবেক খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন।
এ আদেশ জনস্বার্থে জারী করা হলো এবং ২৬/১১/২০২০ তারিখ হতে কার্যকর হবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply