হাজীগঞ্জে লাশ পড়ে রইলো, করোনা সন্দেহে দাফনে আসেনি এলাকাবাসী

শাখাওয়াত হোসেন শামীম :

লাশ পড়ে রইলো দীর্ঘ সাত ঘণ্টা। শুরু হলো কালবৈশাখী ঝড় আর বৃষ্টি। দুশ্চিন্তায় পরিবারের লোকজন। বলছি নিহত সিরাজুল ইসলামের (৬০) কথা। তিনি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন ৮নং ওয়ার্ড টোরাগড় গ্রামের দক্ষিণপাড়া ফকির বাড়ির মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে।

এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা, সবার পরিচিত এবং চেনা-জানা। দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস, বাত ব্যথা, দাঁত ও টনসিলের সমস্যাসহ নানা শারিরিক জটিলতায় ভুগছেন। ছিল না কোনো করোনা উপসর্গ। কিন্তু তার মৃত্যুর পর দাফন-কাফনে কেউ এগিয়ে আসলেন না।

অথচ এলাকায় কেউ মারা গেলে, যারা গোসল দিতেন, কবর করতেন, জানাযা পড়াতেন। এক কথায় দাফন-কাফনে যারা এগিয়ে আসতেন, আজ তারা সবাই নানান অজুহাতে এড়িয়ে গেলেন। নিহতের পরিবারের লোকজন বারবার অনুনয়-বিনয় করার পরও কোনো লাভ হয়নি।

বৃহস্পতিবার বিকালে অসুস্থতাজনিত কারণে সিরাজুল ইসলাম নিজ বাড়িতে মারা যান। তার মৃত্যুর পর করোনা সন্দেহে দাফন-কাফনে এলাকার কেউ এগিয়ে আসেনি। নানান অজুহাতে সবাই এড়িয়ে গেছেন বলে জানান নিহতের ছোটভাই মনা মিয়া।বিষয়টি স্থানীয় ব্যবসায়ী খোরশেদ আলম সর্দার জানার পর, তিনি খবর দিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশকে। তিনি নিজেও দ্বীনি সংগঠন বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির উপজেলা সাধারণ সম্পাদক।

খবর পেয়ে এই ঝড়-বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে ছুটে এলেন ইসলামী আন্দোলনের উপজেলা সাধারণ সম্পাদক ও করোনা সংক্রমণে নিহতের দাফন-কাফনবিষয়ক উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক কমিটির সমন্বয়কারী হাফেজ শাহাদাত হোসেন প্রধানীয়া। সাথে ছিলেন কমিটির সদস্য মাওলানা শরাফত উল্যাহ ও কামাল গাজী।

নিহত সিরাজুলের মরদেহ গোসল, কবর খনন, জানাযা ও দাফন-কাপনসহ সকল কাজ সম্পন্ন করেন ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরা। আর এই কাজ সম্পন্ন করতে এ দিন (বৃহস্পতিবার) রাত প্রায় ১টা বেজে যায়।ইসলামী আন্দোলনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে মনা মিয়া বলেন, করোনা সন্দেহে আমার ভাইয়ের লাশ দাফনে কেউ এগিয়ে আসেনি। চরমোনাইর হুজুরদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।

শেয়ার করুন

Leave a Reply