হাজীগঞ্জ টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ : ১৮ মাসের কাজ ৪৪ মাসেও শেষ হয়নি

শাখাওয়াত হোসেন শামীম :
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের নিমার্ণ কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের ২০ আগস্ট। এখন ২০২১ সালের এপ্রিল মাস চলছে। এই ৪৪ মাসেও নিমার্ণাধিন প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার।
ইতোমধ্যে ষষ্ঠ ও নবম শ্রেণীতে ভর্তি কার্যক্রম শেষ হয়েছে। কিন্তু কোন ক্লাসের দেখা পায়নি শিক্ষার্থীরা। ক্লাস ও বই না পেয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে হতাশা সৃষ্টি হয়েছে। কলেজটির শুরুই এমন গলদ নিরসনে স্থানীয়রা সংসদ সদস্য মেজর অবসরপ্রাপ্ত রফিকুল ইসলাম বীরউত্তমের সু-দৃষ্টি কামনা করছেন।
হাজীগঞ্জ টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী জানান, তারা এখনো কোন ক্লাসের বা পাঠ্য বই সর্ম্পকে ধারণা পায়নি।
এদিকে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ফারুক বলছেন, আগামী জুনের মধ্যে কাজ শেষ করা হবে। কলেজটি প্রবেশ পথের জটিলতা না কাটায় কাজ শেষ করা যাচ্ছে না।
২০১৬ সালের শেষ দিকে কারিগরি শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্বের দিক বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে প্রতিটি উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ নির্মাণের ঘোষনা দেন। তারই ধারাবাহিতায় ২০১৭ সালে হাজীগঞ্জ-রামগঞ্জ সড়কের পাশে রায়চোঁ মৌজায় হাজীগঞ্জ টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের নির্মাণ কাজ শুরু হয়।
চাঁদপুর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর (১০০ টিএসটি প্রজেক্ট) আওতায় মোট ১৫ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা অর্থায়নে ১৫০ শতাংশ জমির উপর নির্মাণ হচ্ছে সুবিশাল এই কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। দরপত্র অনুযায়ী এই প্রতিষ্ঠানের নির্মাণকাল ১৮ মাস ধরা হলেও বর্তমানে ৩ বছরের অধিক সময় ব্যয় করেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
স্থানীয় বাসিন্দা, নবাগত শিক্ষার্থীর অভিভাবক ও হাজীগঞ্জ পৌর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শামছুজ্জামান মুন্সী বলেন, সংসদ সদস্য মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীরউত্তমের আন্তরিক প্রচেষ্টায় হাজীগঞ্জবাসী প্রথমে এই কলেজটি পেয়েছে। কলেজটির শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে এখন সেই সাংসদেও সু-দৃষ্টি প্রয়োজন। কলেজটি শুধু মাত্র অবকাঠামোর কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু ভিতরে স্যনেটাজেশন, ইলেট্রিকেল, মাঠ ভরাটসহ বিভিন্ন কাজ রয়ে গেছে।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে অধীনে টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে ৬ষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ১টি করে কারিগরি বিষয় অর্ন্তভুক্ত থাকবে। এছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে চার বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স চালু থাকবে। অত্যাধুনিক এ টেকনিক্যাল কলেজটি একাডেমিক ৫তলা বিশিষ্ট ভবনের ২৫টি কক্ষ, ৩০টি উন্নত মানের টয়লেট ও প্রশাসনিক ৪তলা বিশিষ্ট ভবনের ১৮টি কক্ষ ও ২৩টি উন্নত মানের টয়লেট থাকবে।
হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি উপজেলা উন্নয়নের রূপকার সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেজর অবসরপ্রাপ্ত রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম এমপি’র আন্তরিক প্রচেষ্টায় সরকারি অর্থায়নে হাজীগঞ্জ টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজটি স্থাপিত হয়। এ বিষয়ে কথা হয় হাজীগঞ্জ টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. সিকান্দারের সাথে। তিনি বলেন, কলেজটির বাকী কাজ দ্রুত শেষ করা প্রয়োজন। প্রথম শিক্ষাবর্ষে ভর্তি কার্যক্রম শেষ হলেও শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে পারিনি। প্রথম ব্যাচে ষষ্ঠ ও নবম শ্রেণীতে ভর্তি করানো হয়েছে। শিক্ষক নিয়োগসহ আরো অনেক জটিলতা রয়েছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply