১০৭ কোটি টাকা ব্যয়ে উটতলীতে ডাকাতিয়ার উপর সেতু নির্মাণ হচ্ছে, একনেকে প্রকল্প পাস

ইব্রাহীম রনি :
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ ও ফরিদগঞ্জ সীমান্তবর্তী দুই উপজেলার সংযোগ ঘটাতে ১০৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ হতে যাচ্ছে ডাকাতিয়া নদীর উপর উটতলী খেয়াঘাট এলাকায় সাড়ে ৫৫০ মিটার দীর্ঘ একটি সেতু। গতকাল সোমবার একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ সেতুর প্রকল্প পাস করা হয়।


এর ফলে হাজীগঞ্জ ও ফরিদগঞ্জ সীমান্তবর্তী দুই উপজেলার মানুষের দাবি পূরণ হতে যাচ্ছে। সেতুটি নির্মিত হলে রামগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর, ফরিদগঞ্জসহ কয়েকটি এলাকার লোকজনের যাতায়াত সহজ ও সংক্ষিপ্ত হবে।
এ বিষয়ে চাঁদপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী ইউনুছ বিশ্বাস বলেন, উটতলী খেয়াঘাট এলাকায় ৫৫০ মিটার (.০৫ কিলোমিটারের কিছু বেশি) দৈর্ঘ্য সেতুর কাজটি এলজিইডির মাধ্যমেই হবে। ৬ জুন সোমবার একনেকে পাস হয়েছে। এখন কিছু জনবল লাগবে তা নিয়োগ শুরু হবে। এসব হয়ে গেলে টেন্ডারের জন্য আমাদের কাছে পাঠাবে।
তিনি বলেন, বড় কাজ হওয়ায় এটির সব কিছুই ঢাকা হেড অফিস থেকে হচ্ছে। প্রথমে বুয়েটের বিশেষজ্ঞ একটি টিমের মাধ্যমে ওই জায়গায় সেতু নির্মাণ করা যাবে কি না তা সম্পর্কে ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি হয়েছে। এরপর কনসালটেন্ট নিয়োগ করে এটির ডিজাইন পর্যায়ে গেছেন। একটি ডিজাইন করা হয়েছে। তারপর সেতু নির্মাণের সম্ভাব্য ব্যয় নির্ধারণ করে তা একনেকে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়। এসব কাজ ঢাকা থেকেই তদারকি করা হয়েছে। আমরা শুধু নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সাপোর্ট দিয়েছি।
তিনি বলেন, এটি বড় কাজ হওয়ায় হয়তো সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে কাজ শুরু করতে একটু সময় লাগবে।
তিনি বলেন, এখানে একটি সেতু খুবই দরকার ছিল। এ সেতুটি হলে ফরিদগঞ্জ এবং হাজীগঞ্জের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও অনেক সহজতর হয়ে যাবে। দূরত্ব কমে যাবে। রামগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর, ফরিদগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার লোকজন ওই রুটে চলাচল করতে পারবে।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী ড. মো. জিয়াউল ইসলাম মজুমদার বলেন, জমি অধিগ্রহণ, অ্যাপ্রোস সড়ক আর সাড়ে ৫০০ মিটার সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০৭ কোটি টাকা। একনেকে পাস হওয়ার পর এখন এটি এই অর্থবছরে টেন্ডার হবে। এরপর সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে কাজ শুরু হবে।
উল্লেখ্য, হাজীগঞ্জের সীমান্তবর্তী উটতলী ও ফরিদগঞ্জের টোরামুন্সীর হাট এর মধ্যবর্তী ডাকাতিয়া নদী। আর এ নদীর উপর দিয়ে নৌকা যোগে দুই পাড়ের মানুষ সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পারাপার হয়ে আসছে। আর এতে করে দুই পাড়ের মানুষের খরচ হচ্ছে টাকা। ব্যয় হচ্ছে বাড়তি সময়। হতে হচ্ছে ভোগান্তির শিকারও। বিশেষ করে হাজীগঞ্জ অঞ্চলের অলিপুর গ্রামের শিক্ষার্থীরা উপারের মুন্সীর হাটে স্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজে আশা-যাওয়ার সময় দৈনিক নগদ টাকা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ ছাড়াও দুই অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য, বাজারে আশা যাওয়ায় সাধারণ মানুষের মালামাল নিয়ে চরম দুর্ভোগে পারাপার হয়ে আসছে।
এ কারণে হাজীগঞ্জ ও ফরিদগঞ্জ সীমান্তবর্তী দুই উপজেলার মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবির ছিল একটি সেতু নির্মাণ। এরই প্রেক্ষিতে গত বছরের ১৯ অক্টোবর বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ের সচিব নূরুল আমিন উটতলী ব্রিজের ডিজাইন উন্মোচন করেন এবং খেয়াঘাট এলাকা পরিদর্শন করেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply