৫০ বছরে চাঁদপুরে ১০ মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রীর মধ্যে ৪ জনই মতলব উত্তরের

ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী :
বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন বাংলাদেশ সৃষ্টি হওয়ার পর থেকে গত ৫০ বছরে বিভিন্ন সরকার আমলে তাদের মন্ত্রীসভায় চাঁদপুরে প্রধানমন্ত্রীসহ ১০ জন মন্ত্রী- প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এরমধ্যে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের বর্তমান মন্ত্রীসভার নবমুখ পরিক্লল্পনা প্রতিমন্ত্রীসহ ৪ জনই মতলব উত্তর উপজেলার সন্তান। এরা হলেন : ছেঙ্গারচর সুগন্ধি গ্রামের মেজর জেনারেল (অবঃ) মরহুম সামসুল হক, বাগানবাড়ি ইউনিয়নের মরহুম মোঃ নুরুল হুদা, মোহনপুরের মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম এবং ইসলামাবাদ ইউনিয়নের উত্তর ইসলামাবাদ গ্রামের বর্তমান পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম মোহন। এদের মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল সামসুল হক জাতীয় পার্টির ও মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম আওয়ামী লীগের ২ আমলে ১৯৯৬ সালে প্রতিমন্ত্রী ও ২০১৪ সালে পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার গঠন করলে মতলব উত্তরের বাগান বাড়ির এলাকার সন্তান মরহুম মোঃ নুরুল হুদা তথ্য ও পরে সংস্থাপন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
যতদূর জানা গেল, দেশের একক কোন উপজেলা থেকে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর প্রাপ্তির সংখ্যার দিক থেকে মতলব উত্তরই প্রথম। তাই মতলব উত্তর উপজেলার মানুষ মন্ত্রী প্রাপ্তি থেকে সৌভাগ্যবান!
এদিকে জেলার বাকিদের মধ্যে ২ জন চাঁদপুর সদরের, ২ জন কচুয়ার, ১ জন শাহরাস্তির এবং ১ জন ফরিদগঞ্জের। সদর উপজেলা থেকে প্রথম যিনি মন্ত্রী, তিনি হলেন- শহরের পুরাণবাজার ঐতিহ্যবাহী চৌধুরী বাড়িতে জন্ম নেয়া জাতীয় নেতা মরহুম মিজানুর রহমান চৌধুরী। বাংলাদেশ সৃষ্টির পর বঙ্গবন্ধুর প্রথম মন্ত্রীসভায় মন্ত্রীত্ব পান তিনি। পরবর্তীতে ১৯৮৫ সালে এরশাদ সরকারের মন্ত্রী সভায় ডাক ও তার মন্ত্রী এবং পরবর্তীতে ১৯৮৬ সালে তিনি সেই সরকারের মন্ত্রীসভায় প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৯ সালে সদর উপজেলার রাড়ীরচর গ্রামের ঐতিহ্যবাহী পাটওয়ারী বাড়ির ভাষাবীর এম এ ওয়াদুদের কন্যা ডাঃ দীপু মনি। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর আওয়ামী লীগের হাতছাড়া আসন পুনরুদ্ধার করেন তিনি। শেখ হাসিনার দ্বিতীয় মেয়াদের পূর্ণ মেয়াদে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। আবার ২০১৮ সালে তৃতীয়বার বিজয়ী হয়ে শিক্ষামন্ত্রী হিসাবে মন্ত্রী সভায় এখনো বর্তমান।
শাহরাস্তির সন্তান মুক্তি যুদ্ধের ১নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার মেজর ( অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম ১৯১৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি দপ্তরবিহীন মন্ত্রীও ছিলেন। তিনি বর্তমানেও তিনি সাংসদ।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে টেকনোক্রেট কোটায় প্রতিমন্ত্রী হন চাঁদপুরের কচুয়ার আশরাফপুরের সন্তান সাবেক সচিব অর্থনীতিবিদ ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর। পরে তিনি আওয়ামী লীগের মহাজোট সরকারে এসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০০১ সালে বিএনপি জামাত জোটে একই উপজেলার সন্তান আনম এহসানুল হক মিলন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এছাড়া ফরিদগঞ্জের ইসলামপুরের মাওলানা মান্নান বিএনপি ও জাতীয় পার্টির আমলে ধর্ম, ও ত্রান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন।
জেলাজুড়ে চাউর আছে, মন্ত্রীত্বে মতলব উত্তরে নতুন করে যুক্ত হয়েছেন যিনি, তিনি অত্যন্ত সজ্জন ব্যক্তি। যার ভেতরে সরাসরি রাজনৈতিক নেতৃত্ব না থাকলেও মুজিব আদর্শের একজন তিনি। সরকার প্রশাসনের মধ্যে তিনি ছিলেন যেমনি মেধাবী ও প্রজ্ঞাবান সিনিয়র সচিব ও নামকরা শিক্ষাবিদ। একুশে পদকে ভূষিত হয়েছেন। বর্তমান সরকারের দল আওয়ামী লীগের সাথে আছে তার নিবিড় সম্পর্ক এবং সরকার প্রশাসনে রয়েছে বেশ সম্মান ও খ্যাতি।

শেয়ার করুন

Leave a Reply