৯৯৯-এ ফোন পেয়ে শ্রমিকের ঘরে খাবার পৌঁছে দিলেন ওসি স্বপন কুমার আইচ

মতলব প্রতিনিধি :
মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ স্বপন কুমার আইচ ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে খাবার পৌঁছে দিলেন। রাত ১০টায় সরকারি হেল্পলাইনের ৯৯৯ নম্বরে একটি কল আসে। কলটি ধরেন থানার ডিউটি অফিসার। অপর প্রান্ত থেকে কর্মকর্তাকে নিজের পরিচয় ও ঠিকানা দিয়ে ঐ ব্যক্তি জানান, গত ৩ দিন ধরে তাঁর ঘরে খাবার নেই। পরিবার নিয়ে না খেয়ে আছেন। তাঁকে যেন কিছু খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হয়। ঘটনাটি অফিসার ইনচার্জ স্বপন কুমার আইচকে জানালে তিনিও ঐ ব্যক্তির সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। এরপর তাঁর ব্যক্তিগত উদ্যোগে চাল, ডাল, আলু, তেল, লবণসহ আরও কিছু খাদ্যসামগ্রী কিনে রাত ১১টায় মতলব পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের বোয়ালিয়া ডাকঘর মোড়ে মোঃ আল-আমিনের বাড়িতে পৌঁছে দেন। ঘটনাটি ঘটেছে চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় গত শুক্রবার রাতে। মতলব দক্ষিণ থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আল-আমিন (৩২) বাড়ি মতলব দক্ষিণ উপজেলার মতলব পৌরসভাস্থ বোয়ালিয়া এলাকায়। আল আমিন দিনমজুরের কাজ করেন। মা-বাবা, স্ত্রী ও দুই ছেলেমেয়ে নিয়ে তাদের সংসার। মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ স্বপন কুমার আইচ বলেন, আল আমিন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে অনেক দিন ধরে কর্মহীন। শারীরিকভাবেও অসুস্থ। আয়-রোজগার ও জমিজমা নেই। গত ৩ দিন ধরে তাঁর ঘরে খাদ্যসামগ্রী ছিল না। ছেলেমেয়ে, স্ত্রী ও বৃদ্ধ মা-বাবা নিয়ে না খেয়ে ছিলেন। ক্ষুধার জ্বালা সহ্য করতে না পেরে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে সহায়তা চান। অফিসার ইনচার্জ স্বপন কুমার আইচ বলেন, ‘আল আমিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলার পর আশপাশের লোকজনের কাছ থেকেও ঘটনার সত্যতা যাচাই করি। গত ২৯ মে রাত ১১টায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাজার থেকে ১০ কেজি চাল, ৫ কেজি আলু, ১ কেজি ডাল, ১ প্যাকেট লবণ, ২ লিটার তেল, ৩ হালি ডিম ও বড় ৩টি পাউরুটি কিনে নিজেই ঐ ব্যক্তির বাড়িতে গিয়ে সেগুলো পৌঁছে দিই।’ তিনি আরও বলেন, মানবিক দায়িত্ববোধ থেকেই ঐ পরিবারকে কিছু খাদ্য সহায়তা দিয়েছেন। কোনো প্রচার বা বাহবা পাওয়ার জন্য এটি করেননি। লকডাউন শুরুর পর এর আগেও এভাবে আরও কয়েকটি পরিবারকে তিনি খাদ্যসহায়তা দিয়েছেন। দিনমজুর মুঠোফোনে ওসির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, লকডাউন শুরুর পর থেকে কার্যত তিনি বেকার। শরীর অসুস্থ থাকায় কয়েক দিন ধরে কাজও করতে পারছেন না। রোজগার না থাকায় ছয় সদস্যের পরিবার নিয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ স্বপন কুমার আইচ এর কাছ থেকে খাদ্যসামগ্রী পেয়ে খুব স্বস্তি লাগছে। আগামী কয়েকটা দিন সবার পেটে খাবার জুটবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply