প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ আলী মাঝি ও দুই ছেলেসহ হত্যা মামলার আসামীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

* অপসারণের দাবিতে মেয়রের কাছে স্মারকলিপি পেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁদপুর শহরের পুরাণ বাজারে আল-আমিন হত্যা মামলার আসামী পৌরসভার কাউন্সিলর প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ আলী মাঝি, তার ছেলে সজিব মাঝি ও রাকিব মাঝিসহ অন্য আসামীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন এবং বিক্ষোভ করেছে পরিবার ও এলাকাবাসী। এ মানবন্ধনে পোস্টার হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় আল আমিনের শিশু কন্যা আয়েশা (৬), সাবিহা খাতুন মরিয়ামকে (৩)।
মঙ্গলবার (২৫ জুন ) দুপুরে চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সামনে ঘন্টাব্যাপি মানববন্ধন কর্মসূচি পালন ও শহরের বিভিন্ন সড়ক বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা। এরপর মামলার আসামি চাঁদপুর জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও পৌরসভার প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ আলী মাঝিকে পদ থেকে বাদ দিতে মেয়র মো. জিল্লুর রহমানের কাছে স্মারক লিপি প্রদান করেন নিহতের স্বজনরা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, চাঁদপুর পৌরসভার বর্তমান প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ আলী মাঝি একজন সন্ত্রাসী ও এলাকায় ত্রাস সৃষ্টিকারী দখলদার ব্যক্তি। সম্প্রতি চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তাঁর ছেলে মো. রাকিব মাঝি চেয়ারমান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। তিনি ও তাঁর বাহিনী ভোটের আগে-পরে ভোটারদেরকে ভয়ভীতি দেখান। নির্বাচনে তার ছেলে পরাজিত হয়ে আল আমিন খানকে দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্রসহ সন্ত্রাসী দলবল দিয়ে আক্রমন করে গুলি করে হত্যা করে।
সে ও তার দুই ছেলে সজিব মাঝি ও রাকিব মাঝিসহ তাদের লোকজন ক্ষমতার অপব্যবহার কয়ে অত্যাচার-নির্যাতনের মাধ্যমে এলাকার লোকজনকে দীর্ঘদিন ধরে অতিষ্ঠ ও জিম্মি করে তুলেছেন। তাদেরকে গ্রেফতাকে করে সরকারের কাছে শাস্তি দাবি করেন বক্তারা।
নিহত আল আমিনের বাবা পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুল মজিব খান ডেঙ্গু বলেন, আমার ছেলেকে গুলি করে হত্যা করেছে।এর একমাত্র কারণ আমি সদ্য সমাপ্ত উপজেলা নির্বাচনে দোয়াত কলম মার্কার নির্বাচন করায়। আমি প্রশাসনের কাছে এর বিচার চাই। চাঁদপুর পৌরসভার বর্তমান প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ আলী মাঝি চানাচুরের ব্যবসা করে কি ভাবে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়। তার নামে চাঁদপুরে ও ঢাকায় ৫-৭ টি বাড়ি আছে। অবৈধ উপার্জন করে সে ও তার দুই ছেলে সন্ত্রাসী বাহিনী সৃষ্টি করেছে। মানুষকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পৌরসভার নির্বাচন করে কাউন্সিলর হয়েছে। টাকা দিয়ে হয়েছেন প্যানেল মেয়র। তারা ক্ষমতা পেয়ে এখন মানুষকে গুলি করে মারছে। আমার ছেলের বিচার না হলে আরো কঠোর আন্দোলনে যাব আমরা।
আরও বক্তব্য দেন, নিহত আল আমিনের চাচা আব্দুল খালেক খান, তার বড় ভাই সোহাগ খান, চাচাতো বোন বিলকিস বেগম ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা শহীদ হাওলাদারসহ এলাকাবাসী।
নিহত আল -আমিনের চাচা খালেক খান বলেন,মোহাম্মদ আলি মাঝির পরিবার স্বাধীনতা বিরোধী পরিবার রাজাকারের পরিবার। সে নিজে এক সময় ফ্রিডম পার্টি করতো।পরে জাতীয় পার্টি করছে এখন রাতারাতি আওয়ামী লীগের বড় নেতা হয়ে গেছে। আমরা তাকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবী জানাই।সেই সাথে এই ঘটনায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবী করছি।
গত ১১ জুন মঙ্গলবার রাতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শহরের পুরাণ বাজার পলাশের মোড় মেরকাটিজ রোড ও নিতাইগঞ্জ রোডের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আল-আমিন খান (৩০) নামে অটোরিকশা চালক নিহত হয়। এ ঘটনায় চাঁদপুর মডেল থানায় পৃথক দুটি মামলায় আসামী করা হয়েছে ৩৭৮ জনকে। এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছে ৫ আসামী। আসামি মোহাম্মদ আলী মাঝিসহ তার ছেলেরা বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।

শেয়ার করুন