চাঁদপুর ফরক্কাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের গোপনে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের অভিযোগ

প্রকাশ্যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা ও প্রচার-প্রচারনা ছাড়াই
নিজস্ব প্রতিবেদক :
গণমাধ্যম, নোটিশ বোর্ড ও শ্রেণী কক্ষে প্রকাশ্যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা এবং কোন প্রকার প্রচার-প্রচারনা ছাড়াই গোপনে চাঁদপুর সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী ফরক্কাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠেছে ।
পাশাপাশি কমিটিতে দূর্নীতি দমন কমিশন ও মাউশি’র তদন্তে প্রমাণিত বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাতের অভিযুক্ত ব্যক্তিকে সভাপতি এবং অভিভাববক বিহীন ব্যক্তিকে বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটিতে সদস্যÍভূক্ত করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ করেছেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির এডহক কমিটির সদস্য ইব্রাহীম খানসহ একাধিক অভিভাবক।

জানা গেছে গত শুক্রবার ১৬ জুন সরকারি বন্ধের দিনে ফরক্কাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাওলানা কবির ওসমানীর কার্যালয়ে নবনির্বাচিত কমিটির সভা করা হয়। এর আগে ১৪ মে কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড এর বিদ্যালয় পরিদর্শক থেকে সাক্ষর বিহীন ২.৩৭.১৩০০০০.২১২.২২.৩৫.২৩.৪৩৩৬ নং স্মারকে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে ১২ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটির আলোকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।
উক্ত কমিটিতে সভাপতি করা হয় বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি এম আর শামীমকে, দাতা সদস্য হিসেবে বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি ড. মোহাম্মদ হাসান খান, অভিভাবক সদস্য হিসেবে মাসুম ঢালী, মো. সাইফুল ইসলাম খান, মো. মোক্তার হোসেন মিয়াজী, মো. আমিনুল আহছান, সংরক্ষিত মহিলা অভিভাবক সদস্য হিসেবে মোসা, হাজেরা বেগম, সাধারণ শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে মো. মামুনুর রশিদ মিজি ও দীনেশ চন্দ্র দাস, সংরক্ষিত মহিলা শিক্ষক প্রতিনিধি নাহার আক্তার ও সদস্য সচিব হিসেবে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাওলানা কবির ওসমানীর নাম উল্লেখ করা হয়।
এছাড়াও শুক্রবার ১৬ জুন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে নবনির্বাচিত কমিটির সভায় বিদ্যুৎসাহী সদস্য হিসেবে ডা. মো. সেলিম তালুকদারের নাম অর্ন্তভূক্ত করা হয়। এই পুরো পক্রিয়াটি বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাওলানা কবির ওসমানীর নেতৃত্বে গোপনে এবং অগণতান্ত্রিক পক্রিয়ায় করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির এডহক কমিটির সদস্য ইব্রাহীম খান, অভিবাবক দীপু মিজি, মহসীন মিজি, দেলোয়ার হাওলাদার, জাহাঙ্গীর গাজী, আবু হাসান খানসহ অভিভাবকরা।
অভিভাবক, এলাকাবাসী ও বিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষকদের না জানিয়ে গোপনে ফরক্কাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের কমিটি গঠন নিয়ে এলাকাবাসীর ও অভিবাবকদের মধ্যে তীব্র সমালোচনার ঝড় বইছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির এডহক কমিটির সদস্য ইব্রাহীম খান, অভিবাবক দীপু মিজি, মহসীন মিজি, দেলোয়ার হাওলাদার, জাহাঙ্গীর গাজী, আবু হাসান খান জানান, কমিটিতে দাতা সদস্য ড. মোহাম্মদ হাসান খানের বিরুদ্ধে দূর্নীতির দায়ে ইতিপূর্বে শিক্ষা বোর্ড থেকে বহিষ্কার আদেশ হয় । হাসান খান ফরক্কাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি থাকা অবস্থায় ৩১ লাখ ১৫হাজার টাকা আত্মসাতের বিষয়টি দূর্নীতি দমন কমিশন ও মাউশি তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে ফৌজদারি মামলা করার জন্য চিঠি দেওয়া হয়। দূর্নীতির দায়ে যাকে বহিষ্কার করা হয়েছে সেই হাসান খানকে কিভাবে কমিটিতে নিলো প্রধান শিক্ষক এটাই এখন অভিযোগকারিদের প্রশ্ন ।
এছাড়াও অভিভাবক সদস্য আমিনুল এহসানেরর ছেলে চাঁদপুর শহরের একটি মাদ্রাসায় অধ্যায়নরত, সেই শিক্ষার্থীকে স্কুলে নামে মাত্র ভর্তি দেখিয়ে তাকে কমিটিতে অভিভাবক সদস্য করে নিয়েছেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাওলানা কবির ওসমানী।
তারা আরও জানান, বিদ্যালয়ে কমিটির নির্বাচনের তফসিলের কোন নোটিশ টানানো হয়নি এবং কোন প্রকার প্রচার-প্রচারনা করাও হয়নি। যদি করে থাকে তাহেলে প্রমানাদীসহ আমাদের বিদ্যালয়ের সিসি টিভির ফুটেজ দেখানো হউক।
তারা আরও জানান, অবৈধ কমিটির লোকজন এলাকায় প্রচার করছেন তারা শিক্ষিত লোকজনদের দিয়ে এবার কমিটি করেছেন। আমাদের প্রশ্ন তাহলে স্ব-শিক্ষিত এম আর শামিমকে কিভাবে সভাপতি করা হলো।
এসব অভিযোগের বিষয়ে গত ২১ জুন বুবধার বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাওলানা কবির ওসমানী জানান, কারো কোন অভিযোগ থাকলে লিখিত ভাবে আমার কাছে ও জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে অভিযোগ করতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, পুরো নির্বাচনের দ্বায়িত্বে ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার। আমরা নির্বাচনী তফসিল বোর্ডে জুলিয়ে দিয়েছি এবং শ্রেণী কক্ষে প্রচার করেছি। এখন বোর্ডের মধ্যে থাকা তফসিলে কাগজ ছেলেমেয়েরা ছিড়ে ফেল্লে আমাদের কি করার আছে।
ড. হাসান খানের বিষয়ে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাওলানা কবির ওসমানীর বলেন, ড. মোহাম্মদ হাসান খান বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিতে পূর্বে থেকেই আছেন। তখন তো কেউ কোন অভিযোগ করেনি।

শেয়ার করুন