দুদকের মামলায় বিতর্কিত সেলিম খানের জামিন মেলেনি এবারও
চাঁদপুর প্রতিদিন ডেস্ক :
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় চাঁদপুর সদরের ল²ীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) বিতর্কিত চেয়ারম্যান সেলিম খানের জামিন শুনানির ছিলো রোবার ২৭ নভেম্বর। জামিন শুনানিশেষে আদালত তার জামিন নামন্জুর করেছে। পরবর্তী আবার কোন তারিখে কোন শুনানি আছে কিনা, তা পিপি বলতে পারেননি। তবে তিনি বলছেন, আর ২/৩ দিন পরই আদালতের দেড়মাসের ছুটি শুরু হয়ে যাবে। তাই তার জামিন বা জামিন শুনানি নিন্ম কোর্টে এর আগে হচ্ছে না।
রোববারর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আসাদুজ্জামান এ আদেশ দেন।
এদিন জামিন শুনানির দিন ধার্য ছিল। সে মোতাবেক আসামিপক্ষ জামিন শুনানি করেন। অপরদিকে, দুদক জামিনের বিরোধিতা করে। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক তার জামিন নামন্জুর করেছে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের পাবলিক প্রসিকিউটর ( পিপি) মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর।
এর আগে গত ৮ নভেম্বর সেলিম খানের আইনজীবী শাহিনুর ইসলাম জামিনের আবেদন করেন। এরপর দুদকের আইনজীবী পিপি মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর জামিন শুনানির জন্য সময়ের আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আছাদুজ্জামান শুনানির জন্য ১৪ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।
আদালত সূত্র জানায়, দুদকের মামলায় গত ১২ অক্টোবর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আসাদুজ্জামান সেলিম খানের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে, ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আসাদুজ্জামানের আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন সেলিম খান। শুনানি শেষে ১২ অক্টোবর তদন্ত প্রতিবেদনসহ জামিন শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেন বিচারক।
এছাড়া গত ২০ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেন। একইসঙ্গে তাকে ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, দুর্নীতি দমন কমিশন বালু খেকো নামের চেয়ারম্যান সেলিম খানের বিরুদ্ধে আয় বহির্ভূত প্রায় ৩৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের সন্ধ্যান পাওয়ায় মাস কয়েক আগে মামলা করে। এছাড়া সেলিম খান ও তার হোতারাসহ চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় অবৈধ হস্তক্ষেপ করে এবং ক্রেতা হিসাবে প্রায় ৪ শ ৬০ কোটি টাকা বেশি পাওয়ার চেষ্টা করে স্থানীয় জেলা প্রশাসকের নির্ধারিত মূল্য ১৯৪ কোটি টাকা মূল্যের বিপরীতে হাইকোর্টে রিট করে। উচ্চ আদালত তার এই রিটকে অবৈধ ঘোষনা করে। এছাড়া মামলা করে কালক্ষেপন ও অবৈধ দলিল সৃজনসহ নানা অনিয়ম করায় তার ৫০ লাখ ও তার দু’ সহযোগীর ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করে। যা সে জমাও দিয়ে দেয়। এছাড়া পদৃমা মেঘনায় গত এক দশক ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করার অপরাধে তাকে বালুর টাকা ফেরতসহ বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ করে। এছাড়া জনপ্রতিনিধির চেয়ারে বসে এ ধরনের অপকর্ম করায় তাকে ঘৃনীত ব্যক্তি হিসাবে ভৎসনা করে। এদিকে স¤প্রতি সেলিম খানে এহেন অনিয়ম দুর্নীতি দায়ে জেলা আওয়ামী লীগ ল²ীপুর মডেল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির পদসহ দলের সকল পদ থেকে আজীবনের জন্য বহিস্কার করে। এছাড়া তার বিদেশ যাওয়ার উপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়, যা এখনো কার্যকর রয়েছে।
এদিকে, সেলিম খানকে চেয়ারম্যান পদ থেকে বহিস্কার বা কী পদক্ষেপ নেয়া যায়, তার জন্য স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ে গত ১৬ অক্টোবর চাঁদপুরের জেলা প্রশাসন থেকে চিঠি পাঠানো হয়। মন্ত্রণালয় ঐ চিঠি পেয়ে দুদকের মামলার সার্টিফাইড কপি প্রেরণ করবার জন্য চাঁদপুরের জেলা প্রশাসককে গত ২ নভেম্বর এক চিঠিতে অনুরোধক্রমে নির্দেশ প্রদান করে। কিন্তু এই চিঠি পাওয়া ১৮ দিন পরও জেলা প্রশাসন সার্টিফাইড কপিটি না পাঠানোয় গত ২০ নভেম্বর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় আবার দ্বিতীয়বার জেলা প্রশাসককে এটি পাঠানোর জন্য তাগিদ দিয়ে নির্দেশ জারি করে। মন্ত্রণালয় বলছে, দুদকের মামলার সার্টিফাইড কপি না পাওয়ায় তারা সেলিম খানের বিরুদ্ধে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে পারছেন না। মন্ত্রণালয় বলছে, তাদের সার্টিফাইড কপি লাাগবে।