দ্বিতীয়বারের মতো ওচমান গণি পাটওয়ারী চাঁদপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত
অভিজিত রায়/মুহম্মদ আলমগীর হোসেন পাটোয়ারী :
কড়া নিরাপত্তা ও উৎসবমুখর পরিবেশে চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ নির্বাচনে টানা দ্বিতীয় বারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি আলহাজ্ব ওচমান গনি পাটওয়ারী। গত নির্বাচনের মতো এবারো তার প্রতীক ছিল মোবাইল ফোন। ১৭ অক্টোবর সোমবার ভোটগ্রহণ শেষে প্রাপ্ত ফলাফলে তিনি একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বি জাকির হোসেন প্রধানীয়া (আনারস) কে ২১৬ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছেন।
আলহাজ্ব ওচমান গনি পাটওয়ারী মোবাইল ফোন প্রতীকে মোট ভোট পেয়েছেন ৭৩৮ এবং জাকির হোসেন প্রধানীয়া আনারস প্রতীকে মোট ভোট পেয়েছেন ৫২২।
১৭ অক্টোবর সোমবার বিকেলে এ ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান।
উপজেলাভিত্তি প্রাপ্ত ফলাফলে অনুযায়ী, চাঁদপুর সদরে মোবাইল ফোন ১৬৩, আনারস ৪০। হাইমচরে মোবাইল ফোন ৬৬, আনারস ১৪। মতলব দক্ষিণে মোবাইল ফোন ৫৮, আনারস ৩২। মতলব উত্তরে মোবাইল ফোন ১০০, আনারস ৮১। ফরিদগঞ্জে মোবাইল ফোন ১১৪, আনারস ৯৭। হাজীগঞ্জে মোবাইল ফোন ৭১, আনারস ১০৩। শাহরাস্তিতে মোবাইল ফোন ৬৭, আনারস ৮৩। কচুয়ায় মোবাইল ফোন ৯৯, আনারস ৭২।
ফলাফলের হিসাবে দেখা গেছে, হাজীগঞ্জের ব্যবসায়ী জাকির হোসেন প্রধানীয়া শুধুমাত্র হাজীগঞ্জ ও শাহরাস্তি উপজেলায় ওচমান গনি পাটওয়ারীর চেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন। আর চাঁদপুর সদর এবং হাইমচরসহ বাকী ছয়টি উপজেলাতেই আলহাজ্ব ওচমান গনি পাটওয়ারীর মোবাইল ফোনের জয়জয়কার।
এ নির্বাচনে সদস্য পদে চাঁদপুর সদরে বিজয়ী হয়েছেন মনিরুজ্জামান মানিক পাটওয়ারী, হাজীগঞ্জে বিল্লাল হোসেন, শাহরাস্তিতে জাকির হোসেন পাটোয়ারী, ফরিদগঞ্জে আলী আক্কাছ, মতলব দক্ষিণে আল আমিন ফরাজী, মতলব উত্তরে আলউদ্দিন সরকার, কচুয়ায় তৌহিদুল ইসলাম, হাইমচরে খোরশেদ আলম।
অন্যদিকে চাঁদপুর সদর-ফরিদগঞ্জ-হাইমচরে সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে বিজয়ী হয়েছেন আয়শা রহমান লিলি, কচুয়া-মতলব উত্তর-মতলব দক্ষিণে তাছলিমা আক্তার আঁখি, হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তিতে জান্নাতুল ফেরদৌস।
এর আগে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে দেশের অন্যান্য জেলার ন্যায় চাঁদপুরও জেলা পরিষদ নির্বাচন সম্পন্ন হয়। সকাল ৯টা থেকে ইভিএমে এ ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে দুপুর ২টা পর্যন্ত চলে। সামগ্রিক দিক বিচেচনায় এবারের চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচন ছিলো শান্তিপূর্ণ। ভোটগ্রহণশেষে ফলাফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং অফিসার মো. কামরুল হাসান।
চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে ২ চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ৩৬ জন ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ১২ জনসহ মোট ৫০জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ৮ উপজেলা, ৮৯টি ইউনিয়ন ও ৬টি পৌরসভার মোট ভোটার ছিলেন ১২৬৯ জন।
এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে চাঁদপুর জেলা পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান ও প্রশাসক আলহাজ ওচমান গনি পাটওয়ারী (মোবাইল) প্রতীক ও প্রবাসী জাকির হোসেন প্রধানিয়া (আনারস) প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। আর সাধারণ সদস্য ৩৬ জন ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ১২ জনসহ ৪৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ৮ উপজেলায় ১টি করে কেন্দ্র ও ২টি করে বুতে ভোটগ্রহণ হয়। নিরাপত্তায় স্বার্থে প্রতিটে কক্ষে ৩টি করে সিসি ক্যামেরা ছিলো।
সকাল ১১টায় চাঁদপুর সদর উপজেলা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান ও পুলিশ সুপার মো. মিলন মাহমুদ। তারা ভোটকেন্দ্রের সামগ্রিক পরিবেশ নিয়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেন।
অপর দিকে ভোট কেন্দ্রগুলোর ভেতরের পরিবেশ নিরোত্তাপ থাকলেও বাইরের পরিশ ছিলো বেশ উৎসব মুখর। কেন্দ্রগুলোর বাইরে প্রার্থীদের সমর্থকরা ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষনে নানারকম শ্লোগান দিতে দেখা যায়।