পুরাণবাজারে সংঘর্ষে যুবক নিহত, পুলিশসহ আহত ২০

নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজারে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আল-আমিন খান (৩০) নামে অটোরিকশা চালক নিহত হয়েছেন । এ সময় দুই গ্রুফের পাল্টাপাল্টি হামলায় পুলিশসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১১জুন) রাত ১০টা পর্যন্ত পুরানবাজারের পলাশের মোড় মেরকাটিজ রোড ও নিতাইগঞ্জ রোডে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
নিহত আল আমিন খান (৩০) ওই এলাকার স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মজিদ খান ডেঙ্গুর ছেলে। তিনি দুই সন্তানের জনক। আপনজন হারিয়ে শোকের মাতম করছেন মা, স্ত্রীসহ স্বজনরা।
সংঘর্ষে আহতরা হলেন- পুলিশের এএসআই মনিরুল, কন্সটেবল আল-আমিন ও স্বপন। এছাড়া স্থানীয় রাশেদ, কামাল, শাকিল, রহমান, জসিম, আল-আমিনসহ প্রায় ২০ জন আহত হন। আহতদের অনেকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, কিছুদিন পূর্বে পুরানবাজার মেরকাটিজ রোডের রনি নামে এক কিশোরের সাথে নিতাইগঞ্জ রোডের জুয়েল নামের অপর কিশোরের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। মূলত ওই ঘটনাটা কেন্দ্র করে সন্ধ্যায় নিতাইগঞ্জ রোডে যুবকদের সাথে মেরকাটিজ রোড এলাকার যুবকদের সংঘর্ষ সৃষ্টি হয় । এতে দুই পক্ষ একে অপরকে ইট পাটকেল নিক্ষেপ এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড গুলি ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে।
নিহতের স্ত্রী বলেন, রাতে খাওয়া-দাওয়া করে আমার স্বামী গেইট আটকাতে বাইরে গিয়েছিল। এ সময় বাইরে মারামারি দেখে রাস্তায় যাওয়ার পর আমার স্বামীকে হত্যা করেছে।
কেঁদে কেঁদে তিনি বলেন, আমার বাচ্চাদের কি হবে? আমার বাচ্চারা আর তাদের বাবার আদর পাবে না।
নিহতের বাবা মজিদ খান ডেঙ্গু জানান, আমার ছেলেকে গুলি করে মেরেছে। কার গুলিতে মারা গেছে তা সনাক্ত করে দ্রুত বিচারের দাবী করছি।
এদিকে এ ঘটনার পর পুরান বাজার এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহীনির অতিরিক্ত সদস্যরা সেখানে টহল দিচ্ছেন।
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ওমর ফারুক জানান, আল-আমিন নামে ব্যাক্তিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তার মাথার ডানপাশে গুলির আঘাত রয়েছে। ধারনা করা হচ্ছে তিনি গুলির আঘাতে মৃত্যু বরণ করেছেন।
চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) সুদীপ্ত রায় ঘটনার বিষয় বলেন, পূর্ব থেকে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ ছিল। তা থেকেই সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। কারা ঘটনাটি ঘটিয়েছে, তা তদন্ত করে আইনের আওতায় নিয়া আসা হবে। এই সংঘর্ষে আমাদের কিছু পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। রাবার বুলেট ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। আমারা অভিযানে আছি। শিগগিরই ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকেও একটি মামলা হবে। সার্বিক বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।

শেয়ার করুন