প্রবাসী কল্যাণ পরিষদের অর্থায়নে নতুন ঘর পেলেন হোসনেআরা বেগম
কচুয়া প্রতিনিধি :
কচুয়ায় প্রবাসী কল্যাণ পরিষদের অর্থায়নে নতুন ঘর পেলেন হোসনেআরা বেগম। প্রবাসী কল্যাণ পরিষদ কচুয়া উপজেলা শাখার উদ্যোগে কড়ইয়া ইউনিয়নের আকানিয়া গ্রামের হোসনেআরা বেগমকে দেড় লাখ টাকা ব্যয়ে একটি টিনসেড ঘর নির্মাণ শেষে গতকাল শুক্রবার সকালে হোসনেআরার পরিবারের কাছে গৃহটি হস্তান্তর করেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। ঘরটিতে তিনটি বেডরুম, একটি রান্না ঘর ও ওয়াশ রুম রয়েছে।
গৃহ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যান পরিষদের কোষাধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন, কচুয়া প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি আতাউল করিম, সহ-সভাপতি মফিজুল ইসলাম বাবুল, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান, আলোর মশাল এর সভাপতি ওমর ফারুক সায়েম মৃধা, সমাজসেবক মো. সোলেইমান মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
নতুন ঘর পেয়ে হোসনেআরা বেগম এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, একটু বৃষ্টি হলে আমার ঘরে জপজপিয়ে পানি পড়তো। পলিথিন টানিয়ে পানিপড়া বন্ধ করার করতাম। রাতে আকাশে মেঘ দেখলেই ভয়ে থাকতাম, মনে হয় আজ সারারাত জেগে থেকে পানি সরাতে হবে। দুটি মেয়ে ও ছেলেকে নিয়ে অনেক দুঃখে কষ্টে রাত পার করতাম। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাতাম। প্রবাসী কল্যান পরিষদের উদ্যোগে নতুন ঘর পেয়ে আমাদের মাথা গোঁজার ঠাই হয়েছে। আমি আল্লাহর কাছে প্রবাসী কল্যান পরিষদের জন্য দোয়া করি। আল্লাহ তাদের সবাইকে সুখে শান্তিতে রাখুক।
প্রবাসী কল্যাণ পরিষদের সভাপতি কাজী মোকলেছুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সোহেল সওদাগর জানান, ফেসবুকের মাধ্যমে অসহায় হোসনেআরা ভাঙ্গা ঘরে তার সন্তানদের নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে এমন সংবাদ দেখতে পেয়ে আমরা প্রবাসী কল্যাণ পরিষদ কচুয়া উপজেলা শাখার উদ্যোগে তাদেরকে বসবাস উপযোগী একটি নুতন ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। সেই লক্ষ্যে জাতীয় শোক দিবসে হোসনেয়ারার পরিবারের নিকট গৃহ নির্মাণের টিন ও কাঠসহ প্রয়োজনীয় উপকরন প্রদান করেছি। আজ ঘরটি পূর্ণাঙ্গ রূপে তৈরি করে পরিবারটির কাছে হস্তান্তর করে দিতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত। আমাদের সামান্য সহযোগীতায় অসহায় পরিবারটির মুখে হাসি ফুটেছে। তাতে আমরা গর্ববোধ করছি। সমাজের সকল বিত্যবানরা এই সকল অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি।
প্রসংগত: কচুয়া উপজেলার কড়ইয়া ইউনিয়নের আকানিয়া নাছিরপুর গ্রামের বাসিন্দা হোসনেআরার বেগম। স্বামী নজরুল ইসলাম প্রায় তিন মাস পূর্বে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। স্বামী নজরুল ইসলাম ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। স্বামীকে হারিয়ে হোসনেআরা বেগম দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে দুর্বিসহ জীবনযাপন করছে।
বড় মেয়ে শারমিন আক্তারকে (২৩) অনেক দুঃখ কষ্টে বিবাহ দেওয়া হয়েছে। ছোট মেয়ে আছমা আক্তার (২০) বিয়ের উপযুক্ত হলেও অর্থের টানা পোড়নে বিবাহ দিতে পারছেন না। একমাত্র ১৬ বছর বয়সী ছেলে রাব্বি ভ্যান গাড়ি চালিয়ে দৈনিক দুই আড়াইশ টাকা রোজগার করে সংসারের হাল ধরার চেষ্টা করছেন। এতে নূন আনতে পান্তা পুরায় অবস্থা। দোঁচালা একটি জরাজীর্ণ বসত ঘর। একটু খানি বৃষ্টি হলে জপজপিয়ে পানি পড়ে। পলিথিন টানিয়ে পানিপড়া বন্ধ করার চেষ্টা করেও ব্যার্থ হচ্ছেন। এতে এ ঘরে থাকা দায় হয়ে পড়ে। এমনি অবস্থায় হোসনেয়ারার একটি ঘর পাওয়ার আকুতি মিনতি সহ তাদের কষ্ট সাধ্য জীবনের হালচিত্র তুলে ধরে ফেইজবুকে পোষ্ট করলে তা ভাইরাল হয়ে পড়লে, বিষয়টি দৃষ্টিতে পড়ে কচুয়া প্রবাসী কল্যাণ পরিষদের নেতৃবৃন্দের।