প্রযোজক সমিতির নির্বাচন থেকেও সটকে পড়লেন সেলিম খান
নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতির ২০২২-২৪ মেয়াদি নির্বাচনে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেছেন প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শাপলা মিডিয়া ইন্টারন্যাশনালের কর্ণধার, পদ্মা মেঘনা থেকে অবৈধভাবে কয়েক হাজার কোটি টাকার বালু উত্তোলনকারী ও এ বিষয়ে উচ্চ আদালত কর্তৃক অপরাধী সাব্যস্ত, অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জনকারী দুদকের মামলায় জড়ানো, আওয়ামীলীগ থেকে আজীবন বহিস্কৃত চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সেলিম খান। একই সঙ্গে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন খল অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজলও।
প্রযোজক সেলিম খান এবং খল অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল এই নির্বাচনে একটি প্যানেলের প্রধান দুই পদের প্রার্থী ছিলেন।
শাপলা মিডিয়ার প্যাডে সেলিম খান লিখেছেন, ‘আমি মো. সেলিম খান। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতির একজন সাধারণ সদস্য। সমিতির আসন্ন ২০২২-২৪ মেয়াদের নির্বাচনে একজন প্রার্থী হই। ব্যক্তিগত কারণে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারছি না। আমার প্রার্থিতা আমি প্রত্যাহার করলাম। আমার প্রার্থিতা বাতিল করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।’
সংশোধিত তফসিলে সেলিম খান দ্বিতীয়বার মনোনয়ন সংগ্রহ করলেও দ্বিতীয়বার মনোনয়ন পত্রই তোলেননি ডিপজল। অসুস্থার কারণ দেখিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান অভিনেতা ডিপজল। এক গণমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ‘আমার শরীরটা ভালো যাচ্ছে না অনেক দিন থেকেই। চিকিৎসা নিতে কিছুদিন পরপরই দেশের বাইরে যেতে হয়। নির্বাচনে দেওয়ার মতো সময় আমার নেই আর। এ কারণেই সরে দাঁড়িয়েছি।’
১৯ জন সাধারণ সদস্য ও ২ জন সহযোগী সদস্য পদের বিপরীতে মোট প্রার্থীসংখ্যা ৪৪। বর্তমান সাধারণ ভোটার ১০৮ ও সহযোগী ভোটার ৬৮ জন। সব ঠিক থাকলে ২০ আগস্ট হবে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতির ২০২২-২৪ মেয়াদি নির্বাচন।
এদিকে সাড়ে ৩৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং ৬৭ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে সেলিম খানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা দায়ের হওয়ায় শাপলা মিডিয়ার ভবিষ্যত অনিশ্চয়তার মুখে । জানা গেছে, আপাতত বন্ধ রেখেছে সব ধরনের কার্যক্রমও। অনেকেই বলছেন, গ্রামিন জনপদ থেকো উঠা আসা একটা লোক এতো সম্পদের মালিক হলো কী করে? অবশ্য এই প্রশ্নের অনেকটা মিলে গেলো তার নদী থেকে গত এক দশক ধরে নদী থেকে বালু উত্তোলন এবং বিক্রি। যার টাকার সবটাই সে পেতো। গড়ে তুলে শত শত কোটি টাকার সম্পদ।
বিষয়গুলো নিয়ে সেলিম খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। একটি সূত্র জানিয়েছে, দুদকের মামলার পর পরই সে আত্নগোপনে চলে যায়। তার নিজের মোবাইল সিমটিও চালু নেই। তার বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। উপজেলার সভাগুলোতেও তার অনুপস্থিতি। যদিও এই মামলা বা তাকে নিয়ে দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হওয়ার আগে থেকেই তিনি উপজেলায় চেয়ারম্যানদের মাসিক সভায় আসার বিষয়ে আমলেই দিতেন না।
প্রযোজনা সংস্থা শাপলা মিডিয়া ছাড়াও সেলিম খানের ‘ভয়েজ টিভি’ নামে একটি আইপি টিভি, ‘দেশ ভয়েস’ নামে একটি দৈনিক পত্রিকা এবং ‘সিনেবাজ’ নামে একটি ওটিটি প্ল্যাটফর্মেরও মালিক তিনি। তবে দৈনিক পত্রিকাটি গত মাসে অনুমোদন পেয়েছে। এমন ব্যক্তিকে নতুন করে পত্রিকার ডিক্লারেশন দেয়া নিয়েও আলোচনা সমালোচনা জেলা ও ঢাকায়। এছাড়াও চাঁদপুরে তার একটি দৈনিক পত্রিকা রয়েছে। এছাড়াও পাশ্ববর্তী দেশ ভারত এবং মালয়েশিয়াসহ বেশ কয়েক কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে বলে অনেকেই ধারনা করছেন। এ বিষয়ে অধিকতর তদন্ত করলে হয়তো এসব বেরিয়ে আসবে।