স্ট্রোক : প্রতিটি মিনিটই মূল্যবান
——– ডাঃ মোঃ শফিকুর রহমান পাটওয়ারী
আজ ২৯ অক্টোবর, বিশ্ব স্ট্রোক দিবস। এ বছরের প্রতিপাদ্য বিষয় হলো ‘প্রতিটি মিনিটই মূল্যবান’। বিশ্ব জুড়ে এদিবসটি পালিত হয় স্ট্রোককে জানা ও প্রতিরোধে সকলকে সচেতন করার জন্য।
স্ট্রোক মস্তিষ্কের এমন একটি রোগ যেখানে মস্তিষ্কের নিজস্ব রক্ত নালীতে রক্তপ্রবাহ হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায় বা কমে যায়, ফলে মস্তিষ্কের কোষে পুস্টি ও অক্সিজেন সরবরাহ কমে যায়। ফলে কয়েক মিনিটের মধ্যেই মস্তিস্কের কোষগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করে।

বিশ্বজুড়ে প্রতিদিন লাখো মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছেন। পরিসংখ্যান বলছে—প্রতি মিনিটে বিশ্বের ৩০ জন মানুষ প্রথমবারের মতো স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। স্ট্রোক হলে প্রতি মিনিটে মস্তিষ্কের প্রায় ১৯ লাখ কোষ মারা যায়।
এটি অনেকটা হার্ট অ্যাটাকের মতো যেখানে করোনারি রক্তনালী
দিয়ে রক্ত চলাচল আংশিক বা সম্পুর্ণ বন্ধ হয়ে যায়।
সাধারণত উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি, ধুমপান, এলকোহল সেবন, পরিবারে এরোগ থাকা, দুঃচিন্তা ইত্যাদির এরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। এরোগ সাধারণত বয়স বাড়ার সাথে বেশি দেখা যায়। বর্তমানে কম বয়সীদের মধ্যে এ রোগের দেখা যায়।
স্ট্রোকের লক্ষণ হলো হঠাৎ ভারসাম্য হারানো, এক বা দুই চোখে ঝাপসা দেখা, মুখ বেকে যাওয়া, এক হাত বা পা দুর্বল হয়ে যাওয়া, ও কথা জড়িয়ে যাওয়া।
সাধারণত দুই ধরনের স্ট্রোক দেখা যায়:
ইসকেমিক স্ট্রোক: মস্তিস্কের রক্তনালিতে ব্লক বা জমাট বাঁধা রক্তের কারণে হয়।
হেমোরেজিক স্ট্রোক: মস্তিষ্কের রক্তনালী ফেটে গিয়ে রক্তক্ষরণের কারণে হয়।
এর মধ্যে ইসকেমিক স্ট্রোকে মস্তিষ্কের কোনো অংশে রক্ত সঞ্চালন কমে গেলে কোষগুলো অক্সিজেনের অভাবে নষ্ট হতে থাকে। তবে দ্রুত চিকিৎসা নিলে রক্তপ্রবাহ পুনরুদ্ধার করে অনেক কোষ রক্ষা করা সম্ভব। এটা অনেকটা হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসার মতো। এতে মস্তিষ্কের রক্তনালীতে জমাট বাধা রক্ত থাকে। থ্রম্বোলাইটিক ঔষধ বা জমাট বাধা রক্ত বের করার মাধ্যমে চিকিৎসা করে করে দ্রুত মস্তিষ্কের রক্তনালী খুলে দেওয়া ভালো একটি চিকিৎসা পদ্ধতি। যত দ্রুত রোগীকে শনাক্ত করে চিকিৎসা শুরু করা যায়, তত দ্রুত সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই সচেতনতা ও তাৎক্ষণিক পদক্ষেপই দ্রুত সুস্থ হওয়ার সহায়ক।
স্ট্রোক প্রতিরোধের উপায় হলো সুস্থ জীবনযাপন, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা, ধূমপান ও অ্যালকোহল পরিহার, নিয়মিত ব্যায়াম এবং ডায়াবেটিস ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা।
ভালবাসুন নিজেকে, সচেতন হোন, সুস্থ থাকুন।
লেখক পরিচিতি
ডা:মো:শফিকুর রহমান পাটওয়ারী
এমবিবিএস, এফসিপিএস (মেডিসিন), এমসিপিএস (মেডিসিন), এমডি (কার্ডিওলজি), এফএসিসি(আমেরিকা ) , এফইএসসি(ইউরোপ) ,এফএসসিএআই(আমেরিকা) ,এফএপিএসআইসি(সিঙ্গাপুর)
ক্লিনিক্যাল ও ইন্টারভেনশনাল হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ
সহযোগী অধ্যাপক কার্ডিওলজি।
১৪ নভেম্বর ও ১২ ডিসেম্বর ২০২৫ , ও প্রতি মাসের ২য় ও ৪র্থ শুক্রবার, চাঁদপুর মেডিকেল সেন্টার, ষোলঘর, চাঁদপুরে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৬টা রোগী দেখবেন ইনশাআল্লাহ।
01711675846










