ব্রিটিশ হাইকমিশনার ডিকসন : রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে মিয়ানমার সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে
অভিজিত রায় :
চাঁদপুরে দুই দিনের সফরের শেষ দিনে ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন এক প্রেস ব্রিফিংএ মিলিত হন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরের চাঁদপুর পৌরসভায় ব্রিফিংকালে হাইকমিশনার ডিকসন বলেন, “আমি খওটচঈচ টিমের সাথে চাঁদপুরের সাথে একটি চমৎকার পরিচয় পেয়েছি। যদিও এখানকার শহুরে দরিদ্র সম্প্রদায়গুলি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে খারাপভাবে প্রভাবিত হয়েছে, আমি প্রকল্পের সাহায্যে কমিউনিটির নেতৃত্বাধীন উন্নয়ন প্রক্রিয়ার শক্তি দেখে খুবই মুগ্ধ। শহুরে দরিদ্র স¤প্রদায়ের স্থানীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের জন্য নারী ও মেয়েদের ক্ষমতায়ন দেখে খুবই ভালো লাগছে। স্থানীয়ভাবে নেতৃত্বের অনেক বড় উদাহরণ রয়েছে। অভিযোজন, যা বাংলাদেশের অন্যত্র এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত স¤প্রদায়গুলিতে প্রতিলিপি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই প্রকল্পে ইউএনডিপি এবং বাংলাদেশ সরকারের সাথে অংশীদার হতে পেরে যুক্তরাজ্য সরকার গর্বিত।”
হাইকমিশনার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রসঙ্গে বলেন, আজ রোহিঙ্গা ট্রাজেডির পঞ্চম বর্ষপূর্তি। রোহিঙ্গারা অনেক ভাগ্যবান। যখন লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছিল তখন এদেশের সরকারের কাছ থেকে অভূতপূর্ণ সহযোগিতা পেয়েছিল। রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফেরত পাঠাতে মিয়ানমার সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। এটি খুব সহজ নয় যে এত তাড়াতাড়ি বিষয়টি সমাধান হবে। এজন্য একত্রে বিভিন্ন দেশের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গারা যদি চায়, তাদের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে দিতে চাই। আমরা যখনই তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবো তখনই তাদেরকে দেশে ফিরে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। যদি তারা এদেশেই থাকতে চায় তাহলে স্বেচ্ছাসেবীর মাধ্যমে ক্যাম্পে অবশ্যই তাদের স্বাভাবিক জীবনমান ও রোহিঙ্গা শিশুদের লেখাপড়া সহ সার্বিক বিষয় নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
ইউএনডিপির ভারপ্রাপ্ত আবাসিক প্রতিনিধি ভ্যান নগুয়েন বলেছেন: “আমরা এখানে যে শহুরে দরিদ্র স¤প্রদায়ের সাথে দেখা করেছি তারা বেশিরভাগই দেশের বিভিন্ন অংশ থেকে জলবায়ু বাস্তুচ্যুত ছিল এবং দুর্ভাগ্যবশত, দরিদ্র শহুরে এলাকায় বসবাস করার সময় জলবায়ু সংকটের প্রভাবের শিকার হতে থাকে। ক্রমবর্ধমান সংখ্যা দরিদ্র শহুরে স¤প্রদায়ের মৌলিক পরিষেবার অ্যাক্সেস ছাড়াই বাংলাদেশে উদ্বেগের বিষয়, এবং আমরা খওটচঈ প্রকল্পের মাধ্যমে বহুমুখী পদ্ধতির মাধ্যমে তাদের দুর্বলতা কমাতে কাজ করতে পেরে আনন্দিত। সামগ্রিকভাবে, টেকসই নগরায়ন প্রচেষ্টা নিশ্চিত করা ইউএনডিপির দৃঢ় স্বার্থে। বাংলাদেশে। খওটচঈচ-এর সাথে পরীক্ষা করা বেশ কয়েকটি মূল মডেল থেকে ভাল শিক্ষা রয়েছে, যেগুলি অত্যন্ত সফল হয়েছে এবং স্কেল-আপের জন্য শক্তিশালী সম্ভাবনা প্রদান করে। আমি যুক্তরাজ্য এবং বাংলাদেশের সরকারকে ধন্যবাদ জানাতে চাই তাদের মাধ্যমে আমাদের সাথে চমৎকার চলমান অংশীদারিত্বের জন্য প্রকল্প।”
খওটচঈ প্রকল্পটি বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে যুক্তরাজ্য সরকার এবং টঘউচ দ্বারা যৌথভাবে বাস্তবায়িত হয় এবং দেশব্যাপী ১৯টি শহর ও শহর জুড়ে এর কার্যক্রম রয়েছে। এটি একটি শহুরে প্রেক্ষাপটে বিশ্বব্যাপী ইউকে সরকার এবং ইউএনডিপির মধ্যে সবচেয়ে বড় অংশীদারিত্বের একটি পণ্য হিসাবে বিবেচিত হয়।
এ সময় আরও উপস্থিত এসময় উপস্থিত ছিলেন এলআইইউপিসিপির জাতীয় প্রকল্প পরিচালক মোঃ জিল্লুর রহমান এবং যুগ্ম সচিব মোঃ মাসুম পাটোয়ারী ও চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েলসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।
প্রথম দিন ব্রিটিশ হাইকমিশনার ইউএনডিপির সাথে চাঁদপুর পরিদর্শন করেন এবং জলবায়ু সহনশীল অবকাঠামোর ভিত্তি স্থাপন করেন। সফরের দ্বিতীয় দিন ২৬ আগস্ট বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন তার সফরের সময় চাঁদপুর পৌরসভায় একটি জলবায়ু-সহনশীল স¤প্রদায় অবকাঠামো প্রকল্পের ভিত্তি স্থাপন করেন। ইউকে এবং বাংলাদেশ সরকার এবং ইউনাইটেড নেশনস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (টঘউচ) দ্বারা যৌথভাবে বাস্তবায়িত শহুরে দরিদ্র স¤প্রদায় প্রকল্পের জীবিকা উন্নয়নের অংশ হিসাবে (খওটচঈচ)।