সেনাবাহিনী পুলিশ বা কোন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে বিতর্কিত করা যাবে না : নুরুল হক নুর

ইব্রাহীম রনি :

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, গণঅভুত্থান সফল করতে রাজনৈতিক, সামাজিক, ছাত্রদের পাশাপাশি প্রশাসনের বড় একটি অংশ শেষ দিকে জনগণের কাতারে এসে দাঁড়িয়েছে। ঐতিহাসিকভাবে ’৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে ’২৪ এর আন্দোলনেও সেনাবাহিনী জনগণের কাতারে এসে দাঁড়িয়েছে। কাজেই সেনাবাহিনী কিংবা পুলিশ বা কোন প্রতিষ্ঠানকে বিতর্কিত করা যাবে না। এগুলো রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান। আমার আপনার ভ্যাট ট্যাক্সের টাকায় চলে। আমরা যারাই সরকার গঠন করি, রাষ্ট্র চালাতে এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে আমাদের লাগবে। যারা এই প্রতিষ্ঠানকে কলংকিত করেছে তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। তাদের বিচার নিশ্চিতের জন্য আমরা আওয়াজ তুলবো। কিন্তু প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্মান রক্ষা করাও কিন্তু আমাদের দায়িত্ব।

রবিবার (২৩ মার্চ) সন্ধ্যায় চাঁদপুর হাসান আলী স্কুল মাঠে জেলা গণঅধিকার পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, এই আন্দোলনে ছাত্র-তরুণদের ভূমিকা ছিল। তারা নিজের জীবনকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে বন্দুকের নলের সামনে দাঁড়িয়েছিল। তবে গত ১৬ বছর রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃবৃন্দ হাসিনার সাথে আপোষ করেনি। তাদের এই আপোষহীনতাই প্রেক্ষাপট তৈরি করেছে- এটি আমাদের ভুলে গেলে চলবে না। এককভাবে কেউ কিছু করতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্র ভোটাধিকার না থাকলে আবারও নতুন কোন ফ্যাসিবাদ আমাদের উপর চেপে বসতে পারে। তাই বাংলাদেশে একটি অবাদ, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠানিক রূপদান কিংবা গণতন্ত্রের পথে যাত্রা এটি রাষ্ট্র সংস্কারেরই একটি অংশ।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় ঐক্যের মধ্য দিয়ে ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। জনতা রায় দিয়েছে আওয়ামী লীগ এদেশের রাজনীতি থেকে বাতিল। সেই বাতিল মালকে আর কেউ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবেন না। সরকারকে আমরা জানিয়েছি, বাংলাদেশে অনেক রাজনৈতিক দল আছে, এখনো প্রায় ৫০টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল আছে। কাজেই একটা আওয়ামী লীগ না থাকলে এদেশের কিছু হবে না। আওয়ামী লীগ ঐতিহাসিকভাবে একটি ফ্যাসিস্ট দল, স্বৈরাচারী রাজনৈতিক দল। গত ১৬ বছর তাদের বর্বরতা আমরা দেখেছি। অভিশপ্ত রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এদেশে গণঅভুত্থান পরবর্তী সময়ে রাজনীতি করবে এটি আমরা মানবো না। আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করার জন্য আমাদেরকে আওয়াজ তুলতে হবে।
তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্র ভোটাধিকার না থাকলে আবারও নতুন কোন ফ্যাসিবাদ আমাদের উপর চেপে বসতে পারে। তাই বাংলাদেশে একটি অবাদ, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠানিক রূপদান কিংবা গণতন্ত্রের পথে যাত্রা এটি রাষ্ট্র সংস্কারেরই একটি অংশ।
তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের অপকর্ম আমাদের মধ্যে যেন খুঁজে না পাই। মানুষ যেন না বলতে পারে আগেই ভালো ছিলাম। আমাদের কর্মকান্ডে, আচরণে মানুষ যেন কষ্ট না পায়, যেন ভুক্তভোগী না হয়। রাজনীতি একটি জনসেবা। রাজনীতি কোন পয়সা কামানোর হাতিয়ার না।
তিনি আরও বলেন, অন্তত আগামী দশ বছর এই দেশকে স্থিতিশীল রাখার জন্য, দেশের স্বাধীনতা-স্বার্বভৌমত্ব সুরক্ষিত রাখার জন্য আমাদের জাতীয় ঐক্য ধরে রাখতে হবে। যদিও এই আন্দোলনের কিছু ছাত্র নেতৃবৃন্দের গত কয়েকদিনের বক্তব্য পুরো জাতিকে বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। আমাদের পরিচিত ছোটভাই আমাদের ছাত্রনেতারা- একজন কথা বলছে আরেকজন বলছে না হয়নি। আরেকজন বলছে- না, তাদের দুইজনের একজন মিথ্যা কথা বলছে। তাই ছাত্র নেতৃবৃন্দের মধ্যে যারা দায়িত্বশীল জায়গায় আছেন তাদেরকে অনুরোধ করবো- একটু দায়িত্বের সাথে কথা বলুন। এমন কথা বলবেন না যেটি ষড়যন্ত্রকারীদের ফায়দা লুটার পথ তৈরি করে দেবে।
চাঁদপুর জেলা গণঅধিকার পরিষদের আহবায়ক কাজী রাসেলের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মো. মাহমুদুল হাসান এবং যুগ্ম আহবায়ক সাংবাদিক মো. জাকির হোসেন যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান।
অনুষ্ঠানে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এড. সলিম উল্যা সেলিম, জেলা জামায়াত, যুবদল, ছাত্রদল নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

শেয়ার করুন