হাইমচর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ কাজে অনিয়ম

নিলাম ছাড়াই সরকারি পুরনো ইট তুলে নতুন রাস্তা নির্মাণ!

হাসান আল মামুন :

অনিয়মের মধ্য দিয়ে হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবন নির্মান কাজ চলছে। ভবনের চারোপাশের সিসি ডালাই রাস্তা নির্মানের ১৫ দিনের মধ্যেই বিভিন্ন জায়গায় ডেবে গিয়ে ঢালাই উঠে গেছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পুরনো রাস্তার ইট নিলাম ছাড়াই ঐ ইট উঠিয়ে তা দিয়েই নির্মাণ করা হচ্ছে নতুন রাস্তা। যা এখনই ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে । শুধু তা-ই না রাস্তার নিছের ব্যবহারকৃত ইট গুলো ২ নাম্বার। এছাড়া ভবনের আস্তরের কাজেও হয়েছে ব্যাপক ফাঁকি। নিম্ন মানের গ্রিল, বিদ্যুতের তার, টাইলস সব কিছুতেই তাদের রয়েছে অনিয়ম। আস্তরের কাজ শেষ হলেও দেয়া হয়না কোন পানি। কেউ কোন প্রতিবাদ না করার সুযোগে ডিসিএল এমসি নামক এ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান নিজ ইচ্ছে মত করছে অনিয়ম। তোয়াক্কা করছে না কোন কাজের ইস্টিমেট কিংবা নিয়ম নীতি। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন বেপারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এসে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের ইঞ্জিনিয়ারকে সরকারি ইট কি প্রক্রিয়ায় তারা নিয়েছেন জানতে চাইলে বের হয়ে আসে অনিয়মের কথা। ইঞ্জিনিয়ার জানান, নিলাম ছাড়াই হাসপাতালের সরকরী ইট দিয়েই নতুন রাস্তা নির্মান করে আসছেন তারা। তাৎক্ষনিক স্থানীয় সংবাদকর্মীদের খবর দিয়ে তিনি বিষয়টি অবগত করেন। সংবাদ কর্মীদের কোন প্রশ্নের উত্তরই কর্তৃপক্ষ দিতে পারেনি। ভাইস চেয়ারম্যান কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।

কুমিল্লার ডিসিএল এমসি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের ইঞ্জিনিয়ার জানান, ২০১৯ সালে ২৭ কোটি টাকা ব্যায়ে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসতালের ভবন নির্মানের কাজ শুরু হয়। তারা কোন রকম নিলাম কিংবা সরকারি অনুমতি ছাড়াই রাস্তার ইট উঠিয়ে তা ভেঙ্গে ঢালাইর কাজে ব্যবহার করে নতুন রাস্তা নির্মান করেন। সরকারি কিছু ইটের কনা তারা জমা করে রেখেছেন। অবশিষ্ট পুরনো ইট তারা রাস্তার কাজে ব্যবহার করেছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. একে এম আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ঠিকাদার আমাদের হাসপাতালের ইট নিলাম কিংবা উর্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই ইট তোলা এবং সেই ইট দিয়ে রাস্তা নির্মান করা মোটেই ঠিক হয় না। ঠিকাদারের এ অনিয়মের বিরুদ্ধে যেন ব্যবস্থা নেয়া হয়, বিষয়টি আমরা উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।
উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন বেপারি জানান, মাননীয় সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপির অক্লান্ত পরিশ্রমে ২৭ কোটি টাকা ব্যায়ে হাইমচর স্বাস্থ কমপ্লেক্স নির্মাণ কাজ শুরু হয়। দুঃখের বিষয় হলো ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ব্যাপক অনিয়ম করেন কাজের মধ্যে। প্রায় ১ থেকে দেড় লাখ সরকারি ইট নিলাম ছাড়া নিয়ে যাওয়ার সংবাদ পেয়ে হাসপাতালে আসি। এখানে এসে দেখি পুকুর চুরি করছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। চুরি করা ইট দিয়েই আবার রাস্তা নির্মান করছে তারা। শুধু তাই নয় ২ নাম্বার ইটও ব্যবহার করছে সিসি ঢালাইকৃত রাস্তায়। যার ফলে উদ্বোধন না হতেই নির্মানের ১৫ দিনের মধ্যেই রাস্তার ইটের কনাগুলো উঠে যাচ্ছে। রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় ডেবে গেছে রাস্তা। আমি এ বিষয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করছি।

শেয়ার করুন