অবশেষে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু

সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ পেয়ে সবাই খুশি

চাঁদপুর প্রতিদিন রিপোর্ট :
সকল চড়াই উৎরাই পেরিয়ে অবশষে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে। চাঁদপুরের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ এখন এটিই। যার ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যেও একটা উচ্ছ্বাস রয়েছে। বিশেষ করে ৫৬০ কোটি টাকা খরচ না করে, এবং নদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে অনেক দূরে একটি টেকসইন জায়গায় এটির অস্থায়ী ক্যাম্পাসে এটির আনুষ্ঠানিক যাত্রায় সর্বস্তরের মানুষই খুশি। শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। একই সাথে প্রথম ব্যাচের ৯০ জন শিক্ষার্থীকে বরণ করে নেয়া হয়।

এসময় পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। এছাড়া বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন সদস্য ড. দিল আফরোজ বেগম, ঢাকা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য ড. হাবিবুর রহমান, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ নাসিম আখতারসহ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রথম ব্যাচে তিনটি বিভাগে ৯০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে শুরু হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম। ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছ পদ্ধতির পরীক্ষায় এই ইউনিটে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ৩০ জন, বি ইউনিটে ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগে ৩০ জন এবং সি ইউনিটে ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিভাগে ৩০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়।

চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের  চিত্র।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতির প্রেক্ষিতে চাঁদপুর – আসনের এমপি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির তৎপরতায় ২০১৯ সালের ২৩ ডিসেম্বর চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। প্রযুক্তি শিক্ষায় বিশ্বের সাথে সমতা অর্জন, জাতীয় পর্যায়ে উচ্চশিক্ষা ও আধুনিক জ্ঞান চর্চা এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে যথাযথ গুরুত্ব দেয়া, পঠন-পাঠন ও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি ও সম্প্রসারণ করার লক্ষ্যে ২০২০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর সংসদে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে বিল পাস হয়। তবে গেজেট প্রকাশের তারিখে অর্থাৎ ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।
এদিকে নিয়োগের পর ২০২১ সালের ২৫ জানুয়ারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পালন শুরু করে আসছেন অধ্যাপক ড. মো. নাছিম আখতার। এরই মধ্যে বিশ্বিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নে ৬২ একর জমি প্রস্তাব করা হয়। জেলা প্রশাসন আইনগতভাবে এর দাম নির্ধারন করে দেয়। কিন্তু সেটি না মেনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রায় ৩৬০ কোটি টাকা লোপাটের চেষ্টা করেন লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের বিতর্কিত ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম খানসহ প্রভাবশালী একটি চক্র। কিন্তু সরকারের বিপুল পরিমান অর্থ অপচয় ঠেকাতে সাবেক জেলা প্রশাসকের অতিরিক্ত মূল্যে এটি না দেয়ার আইনি দৃঢ়তা, , জেলা আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দেরও একই কারণে চরম ক্ষোভ এবং উচ্চ আদালতের রায়ে সেই প্রচেষ্টা ভেস্তে যায়। উচ্চ আদালত সেলিম খান ও তার দুই সহযোগীকে এক কোটি টাকা অর্থদণ্ড দেন। এরপর নানা নাটকীয়তার পর গত বছরের আগস্ট মাসে অস্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য বাড়ি ভাড়া চেয়ে বিজ্ঞপ্তি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অনেকটা গোপনেই চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে পৌর এলাকার খলিসাঢুলিতে বহুতল ভবন ভাড়া নেয়া হয় কয়েক মাস আগে। এরই মধ্যে প্রথম সেশনের ৫ মাস চলে যায়। যদিও ভিসির দাবি ছিলো- তিনি অনলাইনে কিছু ক্লাস করিয়েছেন।
সব কিছুর অবসান আপাতত কিছুটা শেষ হওয়ায় জেলার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বিজ্ঞান ও ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নামের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠটি জেলার মাটিতে দাঁড়িয়েছে -এটাই এখন চাঁদপুরবাসীর কাছে বড়।

শেয়ার করুন