প্রতিটি মন্ডপে স্বেচ্ছাসেবক টিমকে শক্তিশালী করতে হবে :
মোঃ আলমগীর হোসেন পাটওয়ারী :
গতকাল ৮ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুর ১২ টায় চাঁদপুর জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন, তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, এ উৎসবটি নির্বিঘ্নে পালন করতে সকলে সহযোগিতা করে থাকেন। প্রতিটি মন্ডপে নিজেদের স্বেচ্ছাসেবক টিমকে শক্তিশালী করতে হবে। স্বেচ্ছাসেবকদের শতভাগ পোশাক নিশ্চিত হবে এবং প্রতিটি মন্ডপে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে। রেজিস্ট্রার অনেকেই ম্যাইন্টেইন করেন নাই। যেসব ব্যবস্খপনা গতবছর করতে পারেন নাই, সেগুলো এবার অবশ্যই করতে হবে। স্বেচ্ছাসেবকরা যেন সার্বক্ষনিক সর্তক থাকে সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
তিনি উপস্থিত সভায় অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশ্যে বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে হিন্দু ভাইদের দোষ ধরবেন না। সমালেচিত হই আমরা তখনই যখন প্রতিমা ভাংচুর হয় বা তাদের নিয়ে কুরুচিপুর্ণ আলোচনা হয়। সমস্যা গুলো এখান থেকেই শুরু হয়। এসব জায়গাতেই আমাদের কাজ করতে হবে। আমরা ঘটনা ঘটার পরে কাজ করতে চাই না। যেন কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেই উদ্দেশ্যে কাজ করতে চাই। যে প্রোপাগাণ্ডা ছড়াবে সে যেই ধর্মেরই হোক না কেন প্রশাসনের হাতে তুলে দিতে হবে। শান্তির এ উৎসবটিতে কোন বিঘ্ন ঘটুক তা আমরা চাই না।
এসময় তিনি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশ্যেও বলেন, তবে অন্য ধর্মের লোকজনও যেন বিরক্ত না হয় সেদিকেও হিন্দু ভাইদের খেয়াল রাখতে হবে। ধর্ম পালনের মাধ্যমে উৎসব পালন করা হয়।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, প্রতিটা মন্ডপের তালিকা প্রশাসনের কাছে দিয়ে দিতে হবে। ফায়ার সার্ভিসের কোন সদস্যের ছুটি নেই, তারা সবসময় সর্তক থাকবে। এলাকাভিত্তিক প্রশাসনের প্রয়োজনীয় মোবাইল নাম্বার রেখে দিতে হবে। রাত ৮টার মধ্যে বিসর্জন শেষ করতে হবে। রাতে মন্ডপ খালি রেখে যাওয়া যাবে না। প্রশাসনের লোকজন ছাড়াও নিজেদের লোকজন রাখতে হবে।
সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এরশাদ উদ্দিনের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আব্দুর রকিব পিপিএম, নৌপুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান, চাঁদপুর আর্মি ক্যাম্পের অপারেশনাল অফিসার লেফটেন্যান্ট জাবিদ হাসান, স্থানীয় সরকারে উপ-পরিচালক ও পৌর প্রশাসক মো. গোলাম জাকারিয়া, জেলা বিএনপি এর সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. সলিম উল্লাহ সেলিম, জামায়াতে ইসলামী চাঁদপুর জেলার আমীর মাওলানা মো. বিল্লাল হোসেন মিয়াজি, সেক্রেটারি অ্যাড. শাহজাহান মিয়াসহ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সকল নেতৃবৃন্দ।
এ সময়, বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি সুভাষ চন্দ্র রায়, সাধারণ সম্পাদক তমাল কুমার ঘোষ, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট বিনয় ভূষণ মজুমদার, সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা অজিত সাহা, জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সভাপতি পরেশ মালাকার, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ নরেন্দ্র নারায়ণ চক্রবর্তী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোপাল চন্দ্র সাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক লিটন চন্দ্র সাহা, চাঁদপুর সদর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের আহবায়ক লক্ষ্মণ চন্দ্র সূত্রধর, চাঁদপুর পৌর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি নেপাল চন্দ্র সাহা, সাধারণ সম্পাদক সুমন সরকার জয়,হাইমচর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বিবেক লাল মজুমদার, মতলব উত্তর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল চন্দ্র দাস, মতলব দক্ষিণ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি কিশোর কুমার ঘোষ, ফরিদগঞ্জ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রবীর চক্রবর্তী, হাজীগঞ্জ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রাণকৃষ্ণ মনা, হাজীগঞ্জ পৌরসভা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রাধাকান্ত সাহা রাজু, শাহরাস্তুি উপজেলার পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি নিখিল বন্ধু মজুমদার, কচুয়া উপজেলা পরিষদেের সাধারণ সম্পাদক বিকাশ চন্দ্র সাহা প্রমূখ।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এবার জেলায় ২২৪ টি পূজামণ্ডপে পূর্বের তুলনায় বেশি জাঁকজমকপূর্ণ শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন করার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।