মৈশাদীতে বয়োবৃদ্ধ আওয়ামী লীগ নেতার বাড়ি-ঘরে হামলা, ভাংচুর

নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁদপুর সদর উপজেলার হামানকর্দিতে নীরিহ বৃদ্ধ দম্পতির বাড়ি ঘরে হামলা ও ভাংচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। গত ০৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ শেখ হাসিনা পদত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়লে মৈশাদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হামানকর্দি গ্রামের আশি বছর বয়সী ইসমাইল গাজীর বাড়িতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় তার স্ত্রী সত্তর বছর বয়সী বৃদ্ধা পিয়ারা বেগম হামলাকারীদের কাছে আকুতি করলেও রক্ষা ভাংচুর থেকে রক্ষা পায়নি বাড়িঘর। স্থানীয়রা বলছেন, ইসমাইল গাজী আওয়ামী লীগ করলেও তিনি কখনো কারো কোন ক্ষতি করেননি। এমনকি দলীয়ভাবে কোন সুবিধাও নেননি। তাই একজন অসহায় বৃদ্ধের বাড়িতে এমন হামলা মেনে নেওয়া যায় না। এটি অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। আমরা এ ঘটনার নিন্দা জানাই।


স্থানীয়রা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগের খবরের পর গত ৫ আগস্ট বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে একদল লোক লাঠিসোটা, কিরিচ, চাপাতিসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বৃদ্ধ ইসমাইল গাজীর বাড়িতে হামলা করে। প্রথমেই তারা বাড়ির টিনের পদ্মাবেড়া ভেঙা শুরু করে। আরেক দল লোক বাড়ির ভেতরে ঢুকে ঘরের ভেতরে বাইরে
এলোপাথাড়ি কুপিয়ে এবং লাঠিসোটা দিয়ে পিটিয়ে বিভিন্ন আসবাবপত্র ও ঘরের বেড়া ভাংচুর করে। এ সময় ঘরে থানা সত্তোরোর্ধ বৃদ্ধা পিয়ারা বেগম হামলাকারীদের কাছে হাতজোড় কেঁদে কেঁদে অনুরোধ করলেও তারা তাণ্ডব চালায়।
এলাকার লোকজন জানান, ইসমাইল গাজী ত্যাগী আওয়ামী লীগ নেতা হলেও তিনি কখনো কোন সুবিধা নেননি। সেটি তার সার্বিক অবস্থার দিকে তাঁকালে সহজেই বুঝা যায়। কাজেই তাদের বাড়িতে এ ধরনের হামলা কোনভাবেই উচিত হয়নি।
সত্তোরোর্ধ বৃদ্ধা পিয়ারা বেগম বলেন, শেখ হাসিনা পদত্যাগের পরই তারা বাড়ি ঘরে হামলা ভাংচুর করলো। তাদের কাছে আমি যত কেঁদে মিনতি করেছি, কিন্তু তারা শুনেনি। বাড়ি ঘরের বহু কিছু ভাংচে। তিনি বলেন, আমরাতো কারো কোন ক্ষতি করিনি। তাহলে কেন আমাদের উপর এ হামলা হলো। আমরা এর বিচার চাই।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ইসমাইল গাজী বলেন, আমার বাড়িঘর ভাংচুর করা হয়েছে। কিন্তু কেন এ হামলা করা হলো? আমি কখনো কারো কোন ক্ষতি করিনি। আওয়ামী লীগের জন্য বহুবার এধরনের ত্যাগ স্বীকার করেছি। দল দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকলেও আমি কখনো লাভবান হওয়ার কথা ভাবিনি। এলাকায় সামাজিকভাবে সবার সাথে মিলেমিশে থেকেছি। আমরা স্বামী-স্ত্রী দুজন বৃদ্ধ মানুষ খুবই সাধারণভাবে জীবন যাপন করছি। তাই আমার কোন শত্রুও থাকার কথা নয়। তবে আমি বঙ্গবন্ধুর সময় থেকে আওয়ামী লীগ করি। হয়তো এটিই আমার অপরাধ।
তিনি বলেন, আমার বাড়িটা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ঘরের ভেতর ঢুকে আসবাবপত্র ভেঙে তচনচ করা হয়েছে। আমাকে পেলে তারা আমাকে খুন করে ফেলতো। এখনো আমরা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছি।

শেয়ার করুন