অবশেষে চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন

** উল্লসিত অস্থায়ী ক্যাম্পাসের শিক্ষক শিক্ষারথীরা
চাঁদপুর প্রতিদিন রিপোর্ট :
অবশেষে দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে অনুমোদন পেয়েছে। মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বো এ বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম সাংবাদিকদের ব্রিফে এটি নিশ্চিত করেন ।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, চাঁদপুর শহর ও এর আশপাশের ৩০ দশমিক ১২ একর এলাকায় স্থাপন করা হচ্ছে চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ। এতে ব্যয় হবে ১ হাজার ৩৭০ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এজন্য প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় ভূমি অধিগ্রহণ, ১০টি আবাসিক ভবন তৈরি, ১১টি অনাবাসিক ভবন, লিফট, ১২ হাজার ৯২৭টি মেডিকেল যন্ত্রপাতি এবং তিনটি মোটর গাড়ি কেনা হবে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন পর্যায়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। চলতি বছর শুরু হয়ে ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর।
উল্লেখ্য, সরকার চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ স্থাপন প্রকল্প গ্রহণ করে ২০১৮ সালে। এর পরের বছর তথা ২০১৯ সালের ১০ জানুয়ারি চাঁদপুর জেলা শহরে অবস্থিত ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে অস্থায়ী ক্যাম্পাস হিসাবে এই কলেজের যাত্রা শুরু হয়। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের এ–সংক্রান্ত নথিপত্র অনুযায়ী, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা। এই মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য চাঁদপুর শহরের মহাদেব গাছতলা মৌজায় ৩০ একর জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব করে কর্তৃপক্ষ । এই জমির মধ্যে ২৮ একর ব্যক্তিমালিকানাধীন। বাকি ২ একর সরকারি সম্পত্তি। গত কয়েক বছর যাবতই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে চিঠি চালাচালি হয়। কিন্তু মহামার করোনা, আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রিতাসহ নানা কারনে প্রকল্পটি একনেক পর্যন্ত যেতে সময় গড়ায়। সবশেষ মঙ্গলবার দেশের নানাস্থানে আরো ১৮ টি প্রকল্পের সাথে ওই সভা এটি পাস করে। সভায় কমিটির অন্যতম সদস্য চাঁদপুর – ৩ ( সদর ও হাইমচর) আসনের সংসদ সদস্য শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপুমনি এবং চাঁদপুরের মতলব এলাকার সন্তান পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ প্রকল্পটি একনেকে পাস হওয়ায় এর অধ্যক্ষ ড. হারুন অর রশিদ এক প্রতিক্রিয়ায় জানান, আসলেই এটি আমাদের জন্য বড় আনন্দের সংবাদ। তিনি বলেন, আমরা এ যাবৎ সরকারি এ মেডিকেল কলেজটি সদর হাসপাতালের চতুর্থ তলায় রোগীর জন্য বানানো কয়েকটা ওয়ার্ডকে শ্রেনিকক্ষ বানিয়ে ক্লাসের সম্পন্ন করে যাচ্ছি। গত ৫ বছরে ৫টি সেশনের শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকরা কিভাবে ক্লাস করছে, তা তো আপনারাই দেখতে পারছেন। অধ্যক্ষ বলেন, এতোটুকু নিয়ে আসার পেছনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং শিক্ষামন্ত্রী দীপুমনিসহ আপনারা অনেক সহযোগিতা করেছেন। এখন আগামীর কাজগুলো যতো দ্রুত হবে, ততোই এই মেডিকেলের শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো।
এদিকে এই প্রকল্প পাস হওয়ার খবর শুনে শিক্ষার্থীরাও বেশ উল্লসিত। তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রবিউল হাসান, মেহেদী হাসান মিশু, শরিফুল ইসলাম, আরিফুল রহমান অমিত কুমার এবং ক্যাসানওয়ান রাখাইনের সাথে আলাপ হলে তারা জানান, আমরা চাই খুব দ্রুত ভূমি অধিগ্রহণশেষে মেডিকেল কলেজটি স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাক। বলা ২০২৫ সাল এ প্রকল্পের মেয়াদ। এরমধ্যে হয়ে গেলে আমরা যেতে পারবো। আর যদি না- ই বা পেলাম কিন্তু আমাদের পেছনে যারা আছে তারা তো পাবে? এতেই খুশি থাকবো আমরা।
প্রসঙ্গত: ২০১৮ সালে ১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডা. দীপুমনিকে সামনে রেখে স্টেডিয়ামের জনসভায় চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ নির্মাণের ঘোষনা দেন।

শেয়ার করুন