৯ ইউপিতেই ভোটারের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়
নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে চাঁদপুর সদর উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। ১১ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ চলে। ভোট সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণ করতে প্রশাসনের নজরদারি ছিল লক্ষ্যণীয়। প্রতিটি কেন্দ্রেই সকাল থেকে ভোটারদের উপস্থিতি বেশি থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে তা কমতে থাকে। তবে প্রতিটি কেন্দ্রেই পুরুষ ভোটারদের চেয়ে নারীদেরই উপস্তিতি বেশি দেখা যায়। কোন কোন কেন্দ্রে বিভিন্ন প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের মাঝে অধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়েছে। বিচ্ছিন্ন এসব ঘটনায় নেতা-কর্মী আহত হয়েছে। এসব সংঘর্ষ এবং ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় পুলিশ ১০ থেকে ১২ জনকে আটক করেছে বলে চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুর রশিদ জানিয়েছেন। নির্বাচনের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিভিন্ন কেন্দ্রে গিয়ে পরিদর্শন করেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ ও পুলিশ সুপার মো. মিলন মাহমুদ। বিভিন্ন ইউনিয়নের ভোট কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, ভোটারদের উপস্থিতি লক্ষণীয়। চেয়ারম্যান প্রার্থীদের তোড়ঝোড় না থাকলেও মেম্বার প্রার্থীরা ছিলেন সরব। তারা তাদের সমর্থিত ভোটারদের কেন্দ্রে এসে ভোট প্রদানে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। এতে করে সকাল থেকেই প্রতিটি কেন্দ্রে উৎসবমূখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
এদিকে ভোটগ্রহণের পূর্বেই সকাল সাড়ে ৭টায় আশিকাটি ইউনয়নের ৮নং ওয়ার্ড দক্ষিণ পাইকাস্তার মেম্বার প্রার্থী তাফু কাজীর (তালা মার্কা) সমর্থকদের সাথে মো. রুবেল প্রধানীয়ার (ফুটবল মার্কা) সমর্থদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় শারীরিক প্রতিবন্ধী মো. সাখাওয়াত হোসেন কাজী নামে একজন গুরুতর আহত হয়। এ ঘটনায় পুলিশ জাহাঙ্গীর গাজী ও বাপ্পী মজুমদার নামে দুজনকে আটক করে। তরপুরচন্ডী ৯নং ওয়ার্ডে মেম্বার প্রার্থী মোস্তফা মাল ও মেম্বার প্রার্থী মোরশেদ আলম কবিরের কর্মী সমর্থকদের মাঝে হট্টগোল সৃষ্টি হয়। সেখানে তাদের অস্ত্রের মহড়া দেখা যায়। একই ইউনিয়নে বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে ৫নং ওয়ার্ডে মোরগ প্রতীকের মেম্বার প্রার্থী মজিবুর রহমান গাজী লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হঠাৎ করেই বিভিন্ন নিজেদের অধিপত্য প্রদর্শনের চেষ্টা করলে
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মারুফুর রহমান সাইমুনের কর্মীসর্থকরা তাদেরকে উল্টো ধাওয়া করে।
এছাড়াও বাগাদী, বালিয়া, শাহমাহমুদপুর, চান্দ্রা ও বিষ্ণুপুর ইউনিয়নে মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এবারের নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা ছিলো প্রশংসনীয়।
নির্বাচনের পরিস্থিতি বিষয়ে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মো. মিলন মাহমুদ বলেন, দুএকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণ ভাবেই ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। তবে যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশের পাশাপাশি র্যাব, বিজিবি ও কোষ্টগার্ড সদস্যরা প্রস্তুত ছিলেন। চাঁদপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তোফায়েল হোসেন বলেন, সুষ্ঠ নির্বাচন অনুষ্ঠানে আমাদের সকল প্রস্তুতি ছিল। ইনশাল্লাহ আমরা সফলকাম হয়েছি।
উল্লেখ, নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী দ্বিতীয় ধাপে চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্বাচনের শেষ মুহুর্তে গত সোমবার হানারচর ইউনিয়নের নির্বাচন ৮ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে হাইকোর্ট। ওই ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আঃ ছাত্তার রাঢ়ীর রিটের প্রেক্ষিতে এই আদেশ দেন হাইকোর্ট।