ইলিশ ধরা যতদিন বন্ধ থাকবে, ততোদিন ইলিশ খাওয়াও বন্ধ রাখতে হবে : শিক্ষামন্ত্রী
ডাবল ইঞ্জিন চালিত নৌযান নদীতে চলাচল করা যাবেনা : জেলা প্রশাসক
আশিক বিন রহিম :
জেগে ওঠো মাটির টানে। এ শ্লোগানকে ধারন করে চতুরঙ্গ আয়োজিত সিনেবাজ ও পুষ্টি নিবেদিত ৫ দিনব্যাপী ১৩ তম ইলিশ উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। ৩ অক্টোবর রোববার সন্ধ্যায় চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে প্রধান অতিথি হিসেবে ইলিশ উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন, শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মণি এমপি।
এসময় তিনি বলেন, শুরুতেই স্মরণ করছি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। একই সাথে স্বাধীনতা ও ভাষা আন্দোলনসহ সকল শহীদদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে তাদের মাগফেরাত কামনা করছি।
তিনি বলেন, উৎসব মানেই আনন্দ। চাঁদপুর মানেই চাঁদের হাট, আর আজকে এখানেও চাঁদের হাট বসেছে। ভালো কাজের জন্যে পৃস্ঠপোষকের প্রয়োজন। পৃষ্ঠপোষকতক ছাড়া ভালো চালিয়ে নেয়া কষ্টকর হয়ে যায়। যারাই আজকের এই অনুষ্ঠানে পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই।
এই উৎসবের মাধ্যমে ইলিশ রক্ষায় মানুষকে সচেতন করার আহবান জানানো হয়। অভায়শ্রমে জেলেদেরকে ইলিশ না ধরার জন্য পরামর্শ দিয়ে তাদেরকে সচেতন করা হয়ে থাকে। এর পাশাপাশি ইলিশ রক্ষায় নদীর গভীরতা নব্যতা এসব বিষয় নিয়েও কাজ করা প্রয়োজন।
তিনি আরো বলেন, ইলিশ আমাদের ঐতিহ্য। চাঁদপুরের গর্ব। এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে আমাদেরকে মা ইলিশ রক্ষা করতে হবে। অভ্যায়শ্রমে যে ক,দিন মা ইলিশ ধরা বন্ধ থাকবে ততোদিন আমাদেরকে ইলিশ খাওয়াও বন্ধ রাখতে হবে। কারন আমরা খেতে চাইলে জেলেরাও মাছ ধরবে। তাই নিষিদ্ধ সময়ে ইলিশ ধরা এবং খাওয়া বন্ধ রাখলে তবেই আমাদের অভায়শ্রম স্বার্থক হবে।
চাঁদপুরের এই ঐতিহ্য ইলিশকে আমরা যতবেশি তুলে ধরবো। ততোবেশি চাঁদপুরকে তুলে ধরা হবে। তিনি একটি কবিতার কথার প্রসঙ্গে বলেন, কবিতার ভাষার মতো ইলিশ আমাদের সন্তান কিংবা মেয়ে। এই সন্তান রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের সকলের।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ। তিনি বলেন, ধন্যবাদ জানাই চতুরঙ্গকে ইলিশ উৎসব করার জন্য। রাত থেকেই অভিযান শুরু করবে টাস্কফোর্স। নিবন্ধিত জেলেরা ২০ কেজি করে চাউল পাবে। অভিযানের সময় নদীতে ড্রেজিং বন্ধ থাকবে। ডাবল ইঞ্জিন চালিত নৌযান নদীতে চলাচল করা যাবেনা। এগুলো রিকোজিশন করে আটকে রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কোস্টগার্ডের জাহাজ আনা হয়েছে। তারা নদীতে টহল দিবে। আমাতের জনমত সৃষ্টি করতে হবে। সে জন্য জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতা প্রয়োজন। সাংবাদিকরা যদি তাদের পত্রিকায় আমাদের রিফলেট প্রচার করবেন। এ প্রচারনার মাধ্যমে সচেতনতা সৃস্টি হবে।জেরে প্রতিনিধিরা জেলেদের কে বলবেন জেলেরা ঘরে থাকে। সরকার মাছ না ধরার জন্য তাদের চাউল দিচ্ছে। আমরা আরো পদক্ষেপ নিয়েছি প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা গ্রহন করেছি। আমরা ২২ দিনের যে প্রদক্ষেপ নিয়েছি তা বাস্তবায়ন করতে হবে।
পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বিপিএম (বার) বলেন, আজ রাত থেকে ইলিশ ধরা বন্ধ হচ্ছে ২২ দিনের জন্য আমরা আজকে ভাচ্যুয়েরে সভায় মিলিত হয়েছিলাম। আমি সবাইকে বলো এ ২২ দিন আমরা ইলিশ ধরা, বিপনন, পরিবহন সব কিছু বন্ধ রাখি, তবেই ইলিশ উৎসবের স্বার্থকতা।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডঃ জাহিদুল ইসলাম রোমান, চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান আইয়ূব আলী বেপারী, চাঁদপুর প্রেসক্লাব সাধারন সম্পাদক রহিম বাদশা,টাইটল পন্সর জিকে গ্রুপের মার্কেটিং ম্যানেজার মোফাসের হক, অ্যাডঃ সাইফুদ্দিন বাবু। স্বাগত বক্তব্য রাখেন চতুরঙ্গ সাংস্কৃতিক সংগঠনের উপদেষ্টা মোঃ আলমগীর বাহার, শুভেচ্ছা জানান,সংগঠনের চেয়ারম্যান অ্যাডঃ বিনয় ভুষন মজুমদার। সকল অতিথিকে উত্তোলিয় ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
সভাপ্রধান ছিলেন ইলিশ উৎসবের আহ্বায়ক কাজী শাহাদাত। সঞ্চালনায় ছিলেন চতুরঙ্গের মহা সচিব হারুন আল রশীদ।
পরে গোল টেবিল বৈঠক। রাতে স্বপ্নকুঁড়ি সাংস্কৃতিক সংগঠনের নৃত্যানুষ্ঠা এবং সব শেষে চতুরঙ্গ সাংস্কৃতিক সংগঠনের অতিথি শিল্পীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে।