চাঁদপুরে করোনা আক্রান্ত দুই এডিসিসহ চার অফিসার

আপনারা প্রশাসনকে সহযোগিতা করুন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন : জেলা প্রশাসক
: নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁদপুর জেলা প্রশাসনে লোকবল সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। এরই মধ্যে ঈদের তথা ২২ জুলাইর পর থেকে ২ জন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকসহ ৪ জন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের স্ত্রী, সদর ইউএনওর গাড়ি চালকসহ বেশ কর্মচারি করোনা আক্রান্ত। সবশেষ শুক্রবার রাতে করোনা আক্রান্ত হলেন, মাত্র মাস কয়েক আগে যোগদানকারি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( সার্বিক) । লকডাউনে জেলা সদরের পরিস্থিতি মোকাবেলাসহ জেলা প্রশাসনের কাজে জেলা প্রশাসককে দারুন হিমসিম খেতে হচ্ছে। শনিবার জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ তার অফিসিয়াল ফেইজবুক পোষ্টে লিখেন –
আমাদের চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক( রাজস্ব) দাউদ হোসেন চৌধুরী করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তাঁর স্ত্রীও করোনা আক্রান্ত। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইমতিয়াজ হোসেন স্ত্রী,সন্তানসহ করোনা আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মঞ্জুরুল মোর্শেদ,এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট দেবজানী কর করোনা আক্রান্ত হয়ে চাঁদপুর সার্কিট হাউসে আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ মুহুর্তে চাঁদপুর জেলায় কোন ডিডি এলজি ( উপপরিচালক, স্থানীয় শাখা, উপসচিব পদমর্যাদার) নেই, সিনিয়র অফিসারের মধ্য আছেন নতুন যোগদানকারী একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক। বাকী যে কয়জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আছেন তাঁরা সেনাবাহিনী, বিজিবি, আনসার, পুলিশকে সাথে নিয়ে রাত- দিন চাঁদপুরে লকডাউন বাস্তবায়নে মোবাইল কোর্ট করে যাচ্ছেন। এরমধ্যে আছে অফিসের রেগুলার কাজ (রিপোর্ট রিটার্ন, বিভিন্ন মিটিং আয়োজন,তদন্ত…..) ত্রান বিতরণ। তিনি আরো লিখেন, আমার এই ক্লান্তিহীন যোদ্ধারা যাতে হতাশ না হয়,ভেঙে না পড়ে,যাতে নতুন উদ্যমে যাতে কাজ করে যেতে পারে সেজন্য মাঠে উপস্থিত হয়ে প্রেরনা দিয়ে যাচ্ছি আমি। এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটদেরকে মাঠে সহযোগিতার জন্য গঠন করেছি স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী। সেসাথে মাঠে রেখেছি স্কাউটস, রোভার ও বিএনসিসি। জেলা প্রশাসক লিখেন, আমরা হারবো না, আমরা হারতে শিখিনি। ইনশাআল্লাহ চাঁদপুরে করোনাকালীন এই দুর্যোগ আমরা কাটিয়ে উঠবো। শুধু চাঁদপুরবাসীর নিকট আমাদের অনুরোধ “আমরা আপনাদের জন্য কাজ করছি, আপনারা আমাদের প্রশাসনকে সহযোগিতা করুন, দয়াকরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।
এদিকে জানা গেছে, প্রথম শ্রেনির এই জেলায় সহকারি সিনিয়র সচিবসহ নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের মোট পদ ১৯টি। আছেন মাত্র ৬ জন। এরমধ্যে পদে নাই উপপরিচালক ১ জন ( উপসচিব পদ মর্যাদার), অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ২ জন, সিনিয়র সহকারি কমিশনার ৪ জন, সহকারি কমিশনার ৬ জন। এর মধ্যে মাসাধিকাল সময়ের মধ্যে বদলিজনিত এবং পদোন্নতিতে ৫-৬ জন কর্মকর্তা চলে গেছেন। প্রশাসনিক পদে শূন্যতায় তার কি করনীয় ছিলো – এ প্রসঙ্গে তিনি এ প্রতিনিধিকে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ এ প্রতিনিধিকে জানান, গত ২৭ জুলাই আমি জনপ্রশাসনের সিনিয়র সচিব ও বিভাগীয় কমিশনারের কাছে শূন্যপদগুলো পূরনো চিঠি প্রেরন করেছি। তিনি বলেন, ঐ চিঠি পাঠানোর পর ২ দিন পরই করোনা আক্রান্ত হয়ে পড়লেন আমার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( সার্বিক) এবং তার শিশু ছেলে। এর ২ দিন আগে আক্রান্ত হয়েছেন তার স্ত্রী। তারা সবাই ঢাকায় চিকিৎসাধীন।
প্রসঙ্গতঃ চলতি লকডাউনে চাঁদপুরে করোনা পরিস্থিতি খুবই নাজুক অবস্থায় রয়েছে। চলতি মাসেই করোনা এবং করোনা উপসর্গ নিয়ে অর্ধ শতাধিক মানুষ মারা গেছেন এবং এই মাসে ৩ হাজারেরও বেশি করোনা আক্রান্তসহ আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
এই করোনা বিষয়েও জেলা প্রশাসনকে মনিটরিং এর দায়িত্ব পালন করতে হয়।

শেয়ার করুন

Leave a Reply