চাঁদপুরে ক্লাসে ফিরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আনন্দিত
আশিক বিন রহিম :
মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রকটে দেড় বছর বন্ধ থাকার পর সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক সারা দেশের ন্যায় চাঁদপুরেও খুলেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দরজা। সরকারি নির্দেশনা মেনে বিদ্যালয়গুলোতে ব্যবস্থা করা হয়েছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রীর।
রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে, সব ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-কর্মচারী এবং অভিভাবকরা মুখে মাস্ক পরে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করেছে।
সকাল সাড়ে ৯টায় চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের শিক্ষা কার্যক্রম পরিদর্শন করেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ। তিনি শহরের হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ বেশ কিছু স্কুল পরিদর্শন করেন। এসময় জেলা প্রশাসক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে কিনা তা তিনি তদারকি করেন এবং উপস্থিত শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার উপর দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
সরেজমিনে চাঁদপুর শহরের হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানের গেইট পার হবার সাথে সাথেই তাদের হ্যান্ড স্যানিটাইজার করা হচ্ছে। এরপর থার্মোমিটার দিয়ে তাপমাত্রা চেক করে শ্রেণি কক্ষে প্রবেশ নিশ্চিত করছে শিক্ষকরা। পাশাপাশি বিদ্যালয়ের ভেতরে রয়েছে হাত ধোয়ার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা।
এদিকে দীর্ঘদিন পর প্রিয় বিদ্যালয়ে আসতে পেরে আনন্দে আত্মহারা কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। করোনার সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস করার ব্যাপারেও তারা সচেতন রয়েছে বলে জানায়।
শিক্ষার্থী জাহিদ, অয়ন, নিলয়সহ অনেকে জানায়, দেড় বছর পর স্কুলে আসতে পেরে ভালো লাগছে। অনেকদিন পর প্রিয় স্যার এবং স্কুল ফ্রেন্ড ও সহপাঠিদের দেখা পেয়েছি। এ আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। আমরা মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি। শিক্ষার্থীরা আরো জানায়, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে আমরা সতর্ক রয়েছি। আমাদের কারনে পরিবার যাতে আক্রান্ত না হয় সেটি আমরা চাইবো।
চাঁদপুর হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুলতানা ফেরদৌস আরা জানান, বহুদিন পর বিদ্যালয়ে এসে খুব ভালো লাগছে। বিদ্যালয়ে যেন সত্যিকারের প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে। আসলে শিক্ষার্থীরা হলো আমাদের বিদ্যালয়ের প্রাণ। তাদের ছাড়া সব আয়োজন শূণ্যতায় ভরা থাকে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমরা সরকারি সকল নির্দেশনা এবং স্বাস্থ্যবিধি শতভাগ পালন করে শিক্ষাকার্যক্রম চালাবো। কোন শিক্ষার্থী অসুস্থ্য হলে, কিংবা বাড়িতে কেউ অসুস্থ্য হলে আমাদের জানাতে বলেছি। শিক্ষার্থীদের নিরাপদ পাঠদানে সকলের সহযোগীতা কামনা করেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনার রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৭ মার্চ বন্ধ করা হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এরপর এখন পর্যন্ত ২৩ দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ানো হয়েছে।