চাঁদপুরে চাকুরিকালীন দিনগুলো আমার জীবনে স্বর্ণালী সময় : এসপি মাহবুবুর রহমান

আশিক বিন রহিম :
চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মো. মাহবুবুর রহমান পিপিএম অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত হওয়ায় মিট দ্যা প্রেস এর আয়োজন করেছেন। ৪ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার দুপুরে চাঁদপুর শহরের বাবুরহাট পুলিশ লাইনস্ এর ড্রিলসেডে জেলা পুশিল কর্তৃক আয়োজিত মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রখেন, পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত মো. মাহবুবুর রহমান পিপিএম।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেড কোয়াটার) মো. আসাদুজ্জামান এর সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী, সাধারণ সম্পাদক রহিম বাদশা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কচুয়া সার্কেল) আবুল কালাম চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ সার্কেল) সোহেল মাহমুদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. মাহবুবুর রহমান পিপিএম বলেন, অতিরিক্ত ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতি হওয়ার কারণে যে কোন সময় চাঁদপুর ত্যাগ করতে হবে। যার কারণে এই অনুষ্ঠানে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিতে হচ্ছে। যে কোন সময় নতুন স্থানে গিয়ে যুক্ত হতে হবে। আপনাদের সাথে আমি ১৭ মাস কাজ করার সুযোগ হয়েছে। এটি ছিলো আমার চাকুরী জীবনে স্বর্ণালী সময়।
কারো মনে কষ্ট না দিয়ে বিদায় নেয়াটা হলো সৌভাগ্যের বিষয়। আমি বিশ্বাস করি সেই সৌভাগ্যটা আমার হয়েছে। আপনাদের ভালোবাসার কথাগুলো শোনার লোভ সামলাতে পারিনি। তাই আজকের এই আয়োজনটি গুরুত্বের সাথে করছি। চাঁদপুরে চাকরিকালিন সময়ে আমার জীবনে স্বর্ণালী সময় ছিলো। অনেক জায়গায় কাজ করতে গিয়ে কিছু কঠিন সময় পার করতে হয়। চাঁদপুরে করোনাকালে আমরা কঠিন সময়, একসাথে পার করেছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের পুলিশ সাংবাদিক বান্ধব। আমরা একই চিত্তে বাঁধা। পুলিশ যেমন নিজেরা না ঘুমিয়ে অন্যকে ঘুমাতে সহায়তা করে। সাংবাদিক ভাইরাও সারারাত জেগে অন্যদের সচেতন করে। আমাদের কাজ অনেকটা একই। আমরা একসাথে সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে কাজ করি। চাঁদপুরে দায়িত্বকালীন সময়ে আমি থানাগুলোকে সেবার কেন্দ্রবিন্দুতে রুপ দিতে পেরেছি। যার ফলে সাধারণ মানুষের আমাদের কাছে আসতে হয় না। তারা থানাগুলোতেই সেবা পেয়ে থাকেন।
তিনি আরো বলেন, চাঁদপুরের সাংবাদিকরা অনেক বুদ্ধিদীপ্ত ও মানবিক। ব্যক্তিত্বপূর্ণ সাংবাদিকতার চুড়ান্ত পর্যায়ে থেকে আপনারা আমাদের সহযোগিতা করেছেন।
আপনাদের সাথে আমার যে সম্পর্ক হয়েছে তার বন্ধন বিচ্ছিন্ন করা যাবে না। আমাদের সম্পর্কটা পারিবারিক হোক। যেকোনো সময়ে আমার সাথে যোগাযোগ রাখবেন। আপনারা আমার ভাই হয়ে থাকবেন।
অনুষ্ঠানের উন্মুক্ত পর্বে বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সবেক সভাপতি অধ্যক্ষ জালাল চৌধুরী, শহিদ পাটোয়ারী, শরীফ চৌধুরী, গিয়াস উদ্দিন মিলন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক
অধ্যাপক জালাল চৌধুরী, মির্জা জাকির, সোহেল রুশদি, লক্ষ্মণ চন্দ্র সূত্রধর, এএইচএম আহসান উল্যাহ, প্রথম আলোর চাঁদপুর প্রতিনিধি আলম পলাশ, সময় টিভির চাঁদপুর প্রতিনিধি ফারুক আহমেদ, সাংবাদিক শাহাদাত হোসেন শান্ত, চাঁদপুর প্রতিদিনের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ইব্রাহিম রনি, চাঁদপুর ফটোজার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি এমএ লতিফ, সাধারণ সম্পাদক কে এম মাসুদ, দৈনিক সুদীপ্ত চাঁদপুর পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এম আর ইসলাম বাবু, শওকত আলী, এ কে আজাদ, শাওন পাটওয়ারী, আবদুর রহমান গাজী।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সহকারী পুলিশ সুপার শেহরিন আলম, চাঁদপুর মডেল থানার ওসি মো. নাসিম উদ্দিন, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হারুনুর রশিদসহ জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমের বিভিন্ন পর্যায়ের সাংবাদিকবৃন্দ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তিলাওয়াত করেন পুলিশ লাইন জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আবদুস সালাম ও গীতা পাঠ করেন চাঁদপুর পুলিশ হাসপাতালের শ্রী পার্শ্বনাথ দাশ। এরপরে সারাদেশে করোনাকালীন সময়ে ৭৭জন পুলিশ সদস্য ও ৪৪জন সাংবাদিক মৃত্যুবরণ করায় তাদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে চাঁদপুর প্রেসক্লাবের ৫০ বছর পূর্তি সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে পুলিশ সুপার মো. মাহবুবুর রহমানকে করোনাকালীন সময়ে উল্লেখযোগ্য নেতৃত্বের কারণে চাঁদপুর প্রেসক্লাব পদক ২০২০, ক্রেস্ট, সনদপত্র, উত্তলীয় ও কোটপিন পরিয়ে দেন প্রেসক্লাবের সাবেক ও বর্তমান নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও পুলিশ সুপারের বিদায় উপলক্ষ্যে প্রেসক্লাবের সকল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।

শেয়ার করুন

Leave a Reply