চাঁদপুরে বেড়েছে ঠাণ্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা, বেশিরভাগই শিশু

দিনে গরম রাতে শীত
আশিক বিন রহিম :
দক্ষিণের শীতল বাতাস কিংবা কুয়াশা তেমন নেই। তবে কাকভোরের আকাশ আর ঘাসের ওপর জমে থাকা শিশির ফোটা জানান দেয় শীতের আগমনি বার্তা। নদীবিধৌত চাঁদপুরে শুরু হয়েছে শীতের পদধ্বনি। দিনে তীব্র রোদ্র আর গরমের রেশ থাকলেও রাতের বেলা অনুভূত হচ্ছে শীত। এমন আবহাওয়ায় চাঁদপুরে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গুলোতে বাড়ছে শীতজনিত শিশুরোগীর সংখ্যা। চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডেও গেল কয়েকদিন ধরে শিশুরোগীর সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। এদিকে হঠাৎ করে শিশু রোগী বেড়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে শয্যাসংকট। তাই অনেক শিশুকেই হাসপাতালের মেঝে ও বারান্দায় থেকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। ১লা নভেম্বর সোমবার সকালে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীদের মধ্যে জ্বর, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এসব শিশু রোগীদের অধিকাংশই নিম্নবিত্ত ও অসহায় পরিবারের। অভিভাবকদের অসচেতনতার জন্যই এ সময়ে শিশুরা শীত জনিত অসুখে আক্রান্ত হচ্ছে বলে ধারনা চিকিৎসকদের।
হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ১৩দিনে প্রায় ৪শঅধিক শিশু এই ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে। এর বেশির ভাগ শিশুই শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত। এছাড়াও জ্বর, স্বর্দি-কাশি, পেট খারাপসহ অন্যান্য রোগী তো রয়েছেই।
চাঁদপুর সদর উপজেলার কল্যাণপুর থেকে আসা মিম নামের এক শিশু রোগীর মা মরিয়ম বেগম বলেন, তিন দিন ধরে তিনি মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে আছেন। ছোট্ট বাচ্চা, কিছু বলতে না পারলেও তার যে অনেক কষ্ট হচ্ছে সেটি তারা বুজতে পারেন। তিনি আরো জানান, এখানে এত রোগীর চাপ ঠিকমতো হাঁটাচলার জায়গা নেই।
চাঁদপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে সিনিয়র স্টাফ নার্স ও শিশু ওয়ার্ডের ইনচার্জ শাহানারা বেগম বলেন, গেলো দু’ সপ্তাহ যাবৎ প্রতিদিনই গড়ে ৩০/৪০ রোগী শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি থাকছে। এ ছাড়া বহির্বিভাগে দৈনিক অগণিত শিশু চিকিৎসা নিচ্ছে। মূলত আবহাওয়া পরিবর্তনের জন্যই শিশু রোগীদের চাপ বেড়েছে। তবে শিশু রোগী বাড়ায় দেখা দিয়েছে শয্যাসংকট। তাই অনেক শিশুকেই হাসপাতালের মেঝে ও বারান্দায় থেকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।
চাঁদপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, হঠাৎ শিশু রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় সেবা দিতে আমাদের চিকিৎসক ও নার্সদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।ঠান্ডাজনিত শিশু রোগীর সংখ্যা একটু বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। হঠাৎ করে আবহাওয়ার পরিবর্তন, মাঝে মাঝে বৃষ্টি, হঠাৎ গরমের কারণে বাচ্চারা দ্রুত ঘেমে যায়। ওই ঘাম থেকে সংক্রমণটা কিছুটা বেশি হচ্ছে বলে ধারণা করছি। এ অবস্থায় শিশুদের প্রতি বাড়তি যত্ন ও সচেতনতার প্রয়োজন রয়েছে অভিভাবকদের।
তিনি শিশুদের করোনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সাধারণত লক্ষণ ছাড়া শিশুদের করোনা টেষ্ট করানো হয় না। যদি শিশুদের মধ্যে করোনা উপসর্গ দেখা যায়, তাহলে অবশ্যই আমরা শিশুদের করোনা টেস্টসহ যাবতীয় চিকিৎসা দিয়ে থাকি।

 

শেয়ার করুন

Leave a Reply